০৭:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজায় প্রথমবার সমুদ্রপথে পৌঁছেছে ত্রাণ

গাজা উপকূলে প্রথমবারের মতো সমুদ্রপথে পৌঁছেছে ত্রাণ। যদিও সমুদ্রপথ সড়কপথে ত্রাণ সরবরাহের বিকল্প হতে পারে না বলে দাবি বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার। উপত্যকা থেকে ৩ জিম্মির মরদেহ খুঁজে পাবার পর হামাস জানিয়েছে, জিম্মিদের জীবিত ফিরে পাবার একমাত্র পথ যুদ্ধবিরতি।

ক্ষুধা ও মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধে বিপর্যস্ত গাজাবাসীর জন্য প্রথমবারের মতো সমুদ্রপথে পৌঁছেছে ত্রাণ। শুক্রবার (১৭ মে) গাজা উপকূলে তৈরি করা অস্থায়ী ভাসমান জেটির মাধ্যমে উপত্যকায় ত্রাণ পাঠিয়েছে পশ্চিমা ও আরব কয়েকটি দেশ।

গাজা থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দূরে সাইপ্রাস থেকে আসে সমুদ্রপথে ত্রাণের প্রথম চালান। দুই মাসে নির্মিত ভাসমান জেটিতে পাঠানো হয় ১৭০ টন খাবার, যা ইসরাইলের তল্লাশি শেষে ট্রাকের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয় উপত্যকায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, ১১ হাজার মানুষের ক্ষুধা নিবারণ করতে পারবে প্রথম দফা ত্রাণ। যদিও সমুদ্রের বদলে সড়কপথে ত্রাণ পৌঁছাতে ইসরাইলকে সীমান্ত ক্রসিংগুলো খোলার আহ্বান জানানো হয়।

হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘দ্রুত রাফাহসহ সকল ক্রসিং খুলে দেয়া উচিত। ইসরাইলের সীমান্তে ত্রাণবহরে হামলা হচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। সমুদ্রপথ সড়কপথে ত্রাণ সরবরাহ ব্যবস্থার সংযোজন হতে পারে, বিকল্প নয়।’

জাতিসংঘের সহকারী মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ‘আসল প্রশ্ন হলো এই ত্রাণের মাধ্যমে গাজাবাসী বেঁচে থাকতে পারবে? আমরা পরিষ্কার করেছি পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত না হলে উত্তর নেতিবাচক হবে। সঙ্গে আরও মানুষ মারা যাবে।’

আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে রাফায় স্থল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে আইডিএফ সেনাদের সংঘর্ষ চলছে জাবালিয়া, উত্তর গাজা ও রাফার দক্ষিণে। হামাস জানিয়েছে, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ফিলিস্তিনিরা। এতে আবারও বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৭ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি। যার মধ্যে শুধু রাফা থেকে পালিয়েছেন ৬ লাখ ৩০ হাজার মানুষ। যারা আটকে গেছেন, তাদের পরিস্থিতি আরও করুণ।

গাজাবাসী বলেন, উত্তর গাজায় আমাদের বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। তারপর রাফায় এসেছি। তবে মৃত্যু পিছু ছাড়ছে না। কোথায় যাবো সেটাও জানিনা। সেজাইয়া, নুসেইরাত শিবির ও খান ইউনিসের পর এখন রাফায় থাকছি। তবে এখন আর শহর ছাড়তে পারছি না।

রাফায় অভিযানের সময় উদ্ধার হয়েছে ৩ জিম্মির মরদেহ। হামাস জানিয়েছে, জিম্মিদের জীবিত ফিরে পাবার একমাত্র পথ যুদ্ধবিরতি। তবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী জানান, জীবিত অথবা মৃত সব জিম্মিদের দেশে ফিরিয়ে আনাবে সেনারা।

নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে ইসরাইলের ওপর গণহত্যার অভিযোগে শুক্রবার হয়েছে দ্বিতীয় দিনের শুনানি। এদিন আত্মপক্ষ সমর্থনে তেল আবিব জানায় আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে কেপটাউন। হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার্থেই গাজায় সামরিক অভিযান চালানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে ইসরাইল। এসময় আদালত প্রাঙ্গন থেকে ইসরাইলের আইনজীবীদের মিথ্যাবাদী বলে প্রতিবাদ করে এক বিক্ষোভকারী।

ইসরাইলের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জিল্যাড নোয়াম বলেন, ‘ইসরাইল একটি কঠিন সশস্ত্র সংঘাতে লিপ্ত। দক্ষিণ আফ্রিকা এই বাস্তবিক প্রেক্ষাপটকে উপেক্ষা করছে। এমনকি আন্তর্জাতিক আইনও উপেক্ষিত। গণহত্যার মতো জঘন্য কাজকে উপহাস হিসেবে উপস্থাপন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।’

এদিকে লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহ সঙ্গে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে আইডিএফের। বাড়ছে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা।

গাজায় প্রথমবার সমুদ্রপথে পৌঁছেছে ত্রাণ

আপডেট : ০১:৩৬:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

গাজা উপকূলে প্রথমবারের মতো সমুদ্রপথে পৌঁছেছে ত্রাণ। যদিও সমুদ্রপথ সড়কপথে ত্রাণ সরবরাহের বিকল্প হতে পারে না বলে দাবি বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার। উপত্যকা থেকে ৩ জিম্মির মরদেহ খুঁজে পাবার পর হামাস জানিয়েছে, জিম্মিদের জীবিত ফিরে পাবার একমাত্র পথ যুদ্ধবিরতি।

ক্ষুধা ও মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধে বিপর্যস্ত গাজাবাসীর জন্য প্রথমবারের মতো সমুদ্রপথে পৌঁছেছে ত্রাণ। শুক্রবার (১৭ মে) গাজা উপকূলে তৈরি করা অস্থায়ী ভাসমান জেটির মাধ্যমে উপত্যকায় ত্রাণ পাঠিয়েছে পশ্চিমা ও আরব কয়েকটি দেশ।

গাজা থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দূরে সাইপ্রাস থেকে আসে সমুদ্রপথে ত্রাণের প্রথম চালান। দুই মাসে নির্মিত ভাসমান জেটিতে পাঠানো হয় ১৭০ টন খাবার, যা ইসরাইলের তল্লাশি শেষে ট্রাকের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয় উপত্যকায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, ১১ হাজার মানুষের ক্ষুধা নিবারণ করতে পারবে প্রথম দফা ত্রাণ। যদিও সমুদ্রের বদলে সড়কপথে ত্রাণ পৌঁছাতে ইসরাইলকে সীমান্ত ক্রসিংগুলো খোলার আহ্বান জানানো হয়।

হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘দ্রুত রাফাহসহ সকল ক্রসিং খুলে দেয়া উচিত। ইসরাইলের সীমান্তে ত্রাণবহরে হামলা হচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। সমুদ্রপথ সড়কপথে ত্রাণ সরবরাহ ব্যবস্থার সংযোজন হতে পারে, বিকল্প নয়।’

জাতিসংঘের সহকারী মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ‘আসল প্রশ্ন হলো এই ত্রাণের মাধ্যমে গাজাবাসী বেঁচে থাকতে পারবে? আমরা পরিষ্কার করেছি পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত না হলে উত্তর নেতিবাচক হবে। সঙ্গে আরও মানুষ মারা যাবে।’

আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে রাফায় স্থল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে আইডিএফ সেনাদের সংঘর্ষ চলছে জাবালিয়া, উত্তর গাজা ও রাফার দক্ষিণে। হামাস জানিয়েছে, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ফিলিস্তিনিরা। এতে আবারও বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৭ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি। যার মধ্যে শুধু রাফা থেকে পালিয়েছেন ৬ লাখ ৩০ হাজার মানুষ। যারা আটকে গেছেন, তাদের পরিস্থিতি আরও করুণ।

গাজাবাসী বলেন, উত্তর গাজায় আমাদের বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। তারপর রাফায় এসেছি। তবে মৃত্যু পিছু ছাড়ছে না। কোথায় যাবো সেটাও জানিনা। সেজাইয়া, নুসেইরাত শিবির ও খান ইউনিসের পর এখন রাফায় থাকছি। তবে এখন আর শহর ছাড়তে পারছি না।

রাফায় অভিযানের সময় উদ্ধার হয়েছে ৩ জিম্মির মরদেহ। হামাস জানিয়েছে, জিম্মিদের জীবিত ফিরে পাবার একমাত্র পথ যুদ্ধবিরতি। তবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী জানান, জীবিত অথবা মৃত সব জিম্মিদের দেশে ফিরিয়ে আনাবে সেনারা।

নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে ইসরাইলের ওপর গণহত্যার অভিযোগে শুক্রবার হয়েছে দ্বিতীয় দিনের শুনানি। এদিন আত্মপক্ষ সমর্থনে তেল আবিব জানায় আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে কেপটাউন। হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার্থেই গাজায় সামরিক অভিযান চালানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে ইসরাইল। এসময় আদালত প্রাঙ্গন থেকে ইসরাইলের আইনজীবীদের মিথ্যাবাদী বলে প্রতিবাদ করে এক বিক্ষোভকারী।

ইসরাইলের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জিল্যাড নোয়াম বলেন, ‘ইসরাইল একটি কঠিন সশস্ত্র সংঘাতে লিপ্ত। দক্ষিণ আফ্রিকা এই বাস্তবিক প্রেক্ষাপটকে উপেক্ষা করছে। এমনকি আন্তর্জাতিক আইনও উপেক্ষিত। গণহত্যার মতো জঘন্য কাজকে উপহাস হিসেবে উপস্থাপন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।’

এদিকে লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহ সঙ্গে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে আইডিএফের। বাড়ছে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা।