Dhaka ১০:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইরানে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট-পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিখোঁজ

সীমান্ত এলাকায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ তাদের সঙ্গীদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তা ছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ চালানো যাচ্ছে না।

রোববার (১৯ মে) দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমে জোলফা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেখানে ভারী বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশার কারণে পাঁচ মিটারের বেশি দূরত্বে কিছু দেখা যাচ্ছে না।

ইরানের সংবাদমাধ্যম পার্সটুডে জানিয়েছে, হেলিকপ্টারটিতে প্রেসিডেন্ট ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রাহমাতিসহ আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ছিলেন।

এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সীমান্ত এলাকায় আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যৌথভাবে একটি বাঁধ উদ্বোধনের পর প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি শহরে ফিরছিলেন। হেলিকপ্টারটি গন্তব্যে পৌঁছার আগেই অবতরণে বাধ্য হয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার খবরে বলা হয়েছে, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি পার্বত্য অঞ্চল এবং বনজঙ্গলে ঘেরা।

ইরানের জরুরি সেবা সংস্থার মুখপাত্র বাবাক ইয়েকতাপারাস্ত ইরনাকে বলেছেন, ঘটনাস্থলের উদ্দেশে একটি উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে। তবে ঘন কুয়াশার কারণে সেটি সেখানে পৌঁছাতে পারেনি।

৪০টি উদ্ধারকারী দল উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আল-জাজিরার সাংবাদিক আলী হাশেম। উদ্ধারকারীদের সঙ্গে আটটি অ্যাম্বুলেন্স ও একাধিক ড্রোন রয়েছে।

এদিকে হেলিকপ্টারটি খুঁজে না পাওয়ার কারণ সম্পর্কে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফুয়াদ ইজাদি বলেন, হয়তো দুর্ঘটনাটি খুবই মারাত্মক হয়েছে বা যেখানে দুর্ঘটনাটি হয়েছে, সেখানে যোগাযোগের নেটওয়ার্ক নেই। তাই হেলিকপ্টারটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে।

ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের খবরে বলা হয়েছে, হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার খবর জানা গেছে সেটি থেকে আসা একটি জরুরি ফোনকলে।

হেলিকপ্টারে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারাই ওই ফোনকল করেছিলেন। তবে কথা শেষ হওয়ার আগেই সংযোগটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

এর মধ্যে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে নাম গোপন রাখার শর্তে ইরানের এক কর্মকর্তা বলেছেন, তারা শঙ্কা করছেন প্রেসিডেন্ট রাইসি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন।

যদি এই দুর্ঘটনায় রাইসি নিহত হন তাহলে দেশটির দায়িত্ব নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার। ইরানের সংবিধানে বলা আছে, প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হলে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার অনুমোদন সাপেক্ষে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।

ইরানের সংবিধানে আরও বলা আছে, সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হলেন রাষ্ট্রের প্রধান। আর প্রেসিডেন্ট হলেন সরকার প্রধান এবং সেকেন্ড ইন কমান্ড।

যদি সেকেন্ড ইন কমান্ড অর্থাৎ প্রেসিডেন্টের আকস্মিক মৃত্যু হয় তাহলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা গ্রহণ করবেন এবং ৫০ দিনের মধ্যে তিনি নতুন নির্বাচন আয়োজন করবেন। যেটির মাধ্যমে দেশে আবার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হবে।

রাইসির মৃত্যুর শঙ্কা প্রকাশ করে নাম গোপন রাখার শর্তে ওই ইরানি কর্মকর্তা বলেছেন, “হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের পর প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আমরা এখনো আশাবাদী। তবে দুর্ঘটনাস্থল থেকে যে তথ্য আসছে সেগুলো খুবই চিন্তার।”

ইরানে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট-পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিখোঁজ

আপডেট : ১১:৩২:২০ অপরাহ্ন, রোববার, ১৯ মে ২০২৪

সীমান্ত এলাকায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ তাদের সঙ্গীদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তা ছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ চালানো যাচ্ছে না।

রোববার (১৯ মে) দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমে জোলফা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেখানে ভারী বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশার কারণে পাঁচ মিটারের বেশি দূরত্বে কিছু দেখা যাচ্ছে না।

ইরানের সংবাদমাধ্যম পার্সটুডে জানিয়েছে, হেলিকপ্টারটিতে প্রেসিডেন্ট ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রাহমাতিসহ আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ছিলেন।

এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সীমান্ত এলাকায় আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যৌথভাবে একটি বাঁধ উদ্বোধনের পর প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি শহরে ফিরছিলেন। হেলিকপ্টারটি গন্তব্যে পৌঁছার আগেই অবতরণে বাধ্য হয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার খবরে বলা হয়েছে, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি পার্বত্য অঞ্চল এবং বনজঙ্গলে ঘেরা।

ইরানের জরুরি সেবা সংস্থার মুখপাত্র বাবাক ইয়েকতাপারাস্ত ইরনাকে বলেছেন, ঘটনাস্থলের উদ্দেশে একটি উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে। তবে ঘন কুয়াশার কারণে সেটি সেখানে পৌঁছাতে পারেনি।

৪০টি উদ্ধারকারী দল উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আল-জাজিরার সাংবাদিক আলী হাশেম। উদ্ধারকারীদের সঙ্গে আটটি অ্যাম্বুলেন্স ও একাধিক ড্রোন রয়েছে।

এদিকে হেলিকপ্টারটি খুঁজে না পাওয়ার কারণ সম্পর্কে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফুয়াদ ইজাদি বলেন, হয়তো দুর্ঘটনাটি খুবই মারাত্মক হয়েছে বা যেখানে দুর্ঘটনাটি হয়েছে, সেখানে যোগাযোগের নেটওয়ার্ক নেই। তাই হেলিকপ্টারটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে।

ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের খবরে বলা হয়েছে, হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার খবর জানা গেছে সেটি থেকে আসা একটি জরুরি ফোনকলে।

হেলিকপ্টারে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারাই ওই ফোনকল করেছিলেন। তবে কথা শেষ হওয়ার আগেই সংযোগটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

এর মধ্যে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে নাম গোপন রাখার শর্তে ইরানের এক কর্মকর্তা বলেছেন, তারা শঙ্কা করছেন প্রেসিডেন্ট রাইসি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন।

যদি এই দুর্ঘটনায় রাইসি নিহত হন তাহলে দেশটির দায়িত্ব নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার। ইরানের সংবিধানে বলা আছে, প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হলে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার অনুমোদন সাপেক্ষে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।

ইরানের সংবিধানে আরও বলা আছে, সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হলেন রাষ্ট্রের প্রধান। আর প্রেসিডেন্ট হলেন সরকার প্রধান এবং সেকেন্ড ইন কমান্ড।

যদি সেকেন্ড ইন কমান্ড অর্থাৎ প্রেসিডেন্টের আকস্মিক মৃত্যু হয় তাহলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা গ্রহণ করবেন এবং ৫০ দিনের মধ্যে তিনি নতুন নির্বাচন আয়োজন করবেন। যেটির মাধ্যমে দেশে আবার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হবে।

রাইসির মৃত্যুর শঙ্কা প্রকাশ করে নাম গোপন রাখার শর্তে ওই ইরানি কর্মকর্তা বলেছেন, “হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের পর প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আমরা এখনো আশাবাদী। তবে দুর্ঘটনাস্থল থেকে যে তথ্য আসছে সেগুলো খুবই চিন্তার।”