ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধ পরবর্তী গাজা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা না অনুমোদন দিলে তিনি পদত্যাগ করবেন। গতকাল শনিবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এমনটি জানান। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। কিন্তু সাম্প্রতিক দিনগুলোতে হামাস যোদ্ধারা উত্তর গাজায় পুনরায় সংগঠিত হওয়ার পর ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায় ফাটল দেখা দিয়েছে। যদিও এর আগে ইসরায়েলের দাবি ছিল, ওই এলাকা থেকে হামাসকে নির্মূল করা হয়েছে। এ নিয়ে গত বুধবারও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট নেতানিয়াহুকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন।
ভাষণে গ্যান্টজ বলেন, ‘যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভাকে ৮ জুনের মধ্যে একটি কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং অনুমোদন করতে হবে। না হলে আমরা সরকার থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হব।’
ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার এই সদস্য ছয় দফা পরিকল্পনার কথা জানান। এ দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ফিলিস্তিনির সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাসকে নির্মূল করা, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণ এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার মতো বিষয়।
গ্যান্টজ বলেন, ‘ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার পাশাপাশি আমেরিকান, ইউরোপিয়ান, আরব ও ফিলিস্তিনিদের সমন্বয়ে প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করুন। এটি গাজা উপত্যকায় বেসামরিক বিষয়গুলো পরিচালনা করবে এবং একটি ভবিষ্যত বিকল্পের ভিত্তি স্থাপন করবে যেখানে হামাস বা (মাহমুদ) আব্বাস থাকবে না।’
ভাষণে ইসরায়েলি এই মন্ত্রী সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বানও জানান। তিনি বলেন, ‘এটি একটি সামগ্রিক পদক্ষেপের অংশ, যা ইরান এবং এর সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি জোট তৈরিতে সহায়তা করবে।’
এদিকে গ্যান্টজের ভাষণের নিন্দা জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধ করা হবে ইসরায়েলের পরাজয়, অধিকাংশ জিম্মিকে পরিত্যাগ করা, হামাসকে অক্ষত রাখা এবং একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিভিন্ন বসতিতে হামলা চালান হামাসের যোদ্ধারা। সে সময় গাজার সীমান্তে চলছিল নোভা মিউজিক ফেস্টিভাল। হামাসের হামলায় ওই ফেস্টিভালে ৩৫০ জন প্রাণ হারান। ওইদিন হামাসের হামলায় সবমিলিয়ে ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকরা নিহত হন।
পরে হামাসের হামলার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি এই হামলায় নিহত হয়েছে, যাদের এক তৃতীয়াংশই শিশু।