০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েলের সরকারে ভাঙনের সুর

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল যুদ্ধে জড়িয়েছে সাত মাসের বেশি সময় হয়েছে। তবে এতদিন পার হলেও এখনো গাজায় হামাসের হাতে বন্দি রয়েছে শতাধিক ইসরায়েলি। তাদের মুক্ত করে আনতে পারেননি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এমনকি এখন পর্যন্ত যুদ্ধ শেষে গাজা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা দিতে পারেননি তিনি। এসব নিয়ে দেশের ভেতরে যেমন তোপের মুখে পড়েছেন তেমনি বিদেশ থেকেও চাপে রয়েছেন নেতানিয়াহু, বিশেষ করে যুদ্ধ পরবর্তী গাজা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা না দেয়ায় তার ওপর চরম নাখোশ ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ। আগামী ৮ জুনের মধ্যে যুদ্ধ পরবর্তী পরিকল্পনা দিতে না পারলে নেতানিয়াহু সরকার ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। তার এই আলটিমেটামের ফলে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলি যুদ্ধকালীন সরকারের সদস্যদের মধ্যে যে বিভেদ তা আরও প্রকটই হলো বলা যায়। খবর আলজাজিরার।

শনিবার (১৮ মে) একটি সংবাদ সম্মেলন করেন গ্যান্টজ। সেখানে তিনি গাজা নিয়ে ছয়টি দাবি উত্থাপন করেন এবং সেগুলো মেনে নিতে ইসরায়েলি মন্ত্রীসভার প্রতি আহ্বান জানান।

ইসরায়েলি এই রাজনীতিবিদ বলেছেন, যদি তার দাবি পূরণ না হয় তাহলে তিনি গাজা যুদ্ধের তত্ত্বাবধানে গত বছর গঠিত ইসরায়েলের জরুরি ঐক্য সরকার থেকে তার দল প্রত্যাহার করবেন।

গ্যান্টজ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তাকে ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হয়। যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভায় যোগদানের আগে তিনি বিরোধী দলের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

নিজের ছয় দাবিতে গ্যান্টজ গাজায় ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি, ছোট্ট এই উপত্যকার নিরস্ত্রীকরণ, আমেরিকান, ইউরোপীয়, আরব ও ফিলিস্তিনি ব্যক্তিদের নিয়ে গাজার বেসামরিক বিষয় তদারকি করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক জোট গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া নেতানিয়াহুর মতো তিনিও মনে করেন যুদ্ধ শেষে গাজাকে হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসসের হাতে তুলে দেয়া যাবে না। একই সঙ্গে হামাসকে পুরোপুরি নির্মূলের কথাও বলেছেন তিনি, যা গত ২২৫ দিনে করতে পারেনি ইসরারেয়লি বাহিনী।

গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা এবং প্রায় ২৫০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে বন্দি করে গাজায় নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা করে আসছে ইসরায়েল। ইতিমধ্যে ছোট্ট এই উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

গত নভেম্বরে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সাতদিনের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছিল। চুক্তির আওতায় হামাস শতাধিক ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তিও দেয়। তবে এখনো তাদের হাতে শতাধিক ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে। এসব বন্দির মুক্তি নিশ্চিত করতে নেতানিয়াহু সরকারের ওপর দিনকে দিন চাপ বেড়েই চলেছে।

যুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েলের সরকারে ভাঙনের সুর

আপডেট : ০১:৫০:৫৩ অপরাহ্ন, রোববার, ১৯ মে ২০২৪

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল যুদ্ধে জড়িয়েছে সাত মাসের বেশি সময় হয়েছে। তবে এতদিন পার হলেও এখনো গাজায় হামাসের হাতে বন্দি রয়েছে শতাধিক ইসরায়েলি। তাদের মুক্ত করে আনতে পারেননি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এমনকি এখন পর্যন্ত যুদ্ধ শেষে গাজা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা দিতে পারেননি তিনি। এসব নিয়ে দেশের ভেতরে যেমন তোপের মুখে পড়েছেন তেমনি বিদেশ থেকেও চাপে রয়েছেন নেতানিয়াহু, বিশেষ করে যুদ্ধ পরবর্তী গাজা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা না দেয়ায় তার ওপর চরম নাখোশ ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ। আগামী ৮ জুনের মধ্যে যুদ্ধ পরবর্তী পরিকল্পনা দিতে না পারলে নেতানিয়াহু সরকার ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। তার এই আলটিমেটামের ফলে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলি যুদ্ধকালীন সরকারের সদস্যদের মধ্যে যে বিভেদ তা আরও প্রকটই হলো বলা যায়। খবর আলজাজিরার।

শনিবার (১৮ মে) একটি সংবাদ সম্মেলন করেন গ্যান্টজ। সেখানে তিনি গাজা নিয়ে ছয়টি দাবি উত্থাপন করেন এবং সেগুলো মেনে নিতে ইসরায়েলি মন্ত্রীসভার প্রতি আহ্বান জানান।

ইসরায়েলি এই রাজনীতিবিদ বলেছেন, যদি তার দাবি পূরণ না হয় তাহলে তিনি গাজা যুদ্ধের তত্ত্বাবধানে গত বছর গঠিত ইসরায়েলের জরুরি ঐক্য সরকার থেকে তার দল প্রত্যাহার করবেন।

গ্যান্টজ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তাকে ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হয়। যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভায় যোগদানের আগে তিনি বিরোধী দলের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

নিজের ছয় দাবিতে গ্যান্টজ গাজায় ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি, ছোট্ট এই উপত্যকার নিরস্ত্রীকরণ, আমেরিকান, ইউরোপীয়, আরব ও ফিলিস্তিনি ব্যক্তিদের নিয়ে গাজার বেসামরিক বিষয় তদারকি করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক জোট গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া নেতানিয়াহুর মতো তিনিও মনে করেন যুদ্ধ শেষে গাজাকে হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসসের হাতে তুলে দেয়া যাবে না। একই সঙ্গে হামাসকে পুরোপুরি নির্মূলের কথাও বলেছেন তিনি, যা গত ২২৫ দিনে করতে পারেনি ইসরারেয়লি বাহিনী।

গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা এবং প্রায় ২৫০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে বন্দি করে গাজায় নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা করে আসছে ইসরায়েল। ইতিমধ্যে ছোট্ট এই উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

গত নভেম্বরে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সাতদিনের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছিল। চুক্তির আওতায় হামাস শতাধিক ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তিও দেয়। তবে এখনো তাদের হাতে শতাধিক ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে। এসব বন্দির মুক্তি নিশ্চিত করতে নেতানিয়াহু সরকারের ওপর দিনকে দিন চাপ বেড়েই চলেছে।