হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও তার সফরসঙ্গীদের স্মরণে পাঁচদিনের শোক পালন করছেন দেশটির নাগরিকরা। তেহরানের শহরতলিতে রাইসির স্মরণে একটি আয়োজন চলছে। সেখানে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে প্রয়াত প্রেসিডেন্টকে স্মরণ করছেন, শোক জানাচ্ছেন।
ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির জানাজা ও শেষ বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে তাবরিজ শহর থেকে। রাইসিসহ নিহত সবার মরদেহ সোমবার থেকে এই শহরেই রয়েছে। সেখানেই তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে জানাজায় অংশ নিতে ভিড় করেছেন অসংখ্য মানুষ। চোখের জল আর প্রার্থনার মধ্য দিয়ে তাকে শেষ বিদায় জানাচ্ছেন সবাই।
এরপর তাবরিজ শহরে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও তার সফরসঙ্গীদের মরদেহ নেয়া হবে কোম শহরে। সেখানে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় ফাতিমা মাসুমেহ মাজারে আরেকটি জানাজা হবে। পরে বুধবার সকালে মরদেহগুলো নেয়া হবে তেহরানে। সেখানে বুধবার সকালে তেহরানের মারটায়ার্স স্কয়ারে জানাজা হবে। এতে অংশ নেবেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। সেখান থেকে মরদেহগুলো নেয়া হবে ইরানের ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থান মাশহাদ শহরে, সেখানেই জানাজা শেষে জন্মস্থান মাশহাদ শহরে ইব্রাহিম রাইসিকে দাফন করা হবে। বাকিদের নিজ নিজ শহরে দাফন করা হবে।
এদিকে, হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও তার সফরসঙ্গীদের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। পাশাপাশি তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা। স্থানীয় সময় সোমবার জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই পরিষদের অধিবেশনে রাইসি ও তার সঙ্গীদের স্বরণে নীরবতা পালন করা হয়।
এর আগে, আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় গত রোববার দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর ইব্রাহিম রাইসি ও তার সফরসঙ্গীরা নিহত হয়েছেন বলে জানায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো।