পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মির্জা, বড় মেয়ে ফারহিন রিস্তা বিনতে বেনজির এবং ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজিরের নামে ১০৯ একর ৬২ দশমিক ৪৬ শতাংশ অবৈধ জমির খোঁজ পেয়েছে দুদক। সরকারি হিসেবে এই জমির বাজার মূল্য ১০ কোটি ৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা হলেও বাস্তবে এসব জমির বাজার দর অন্তত: শত কোটি টাকা।
বেনজীর আহমেদের নিজের নামে সম্পত্তি রয়েছে গোপালগঞ্জ ও কক্সবাজার এলাকায়। তার নামে মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৮ একর ১ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ। বেনজিরের স্ত্রী জীশান মির্জার নিজস্ব নামে সম্পত্তি রয়েছে ৭ একর ১৬ শতাংশ।
বেনজিরের বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজিরের নিজের নামে জমি আছে ১৩ একর ৯১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। একই সঙ্গে সাউদার্ন বিজনেস ইনিশিয়েটিভ ম্যানেজিং পার্টনার হিসেবে তার সম্পত্তি আছে, ৮ একর ২৭ দশমিক ৯২ শতাংশ।
সাভানা ফার্ম প্রোডাক্টসের পক্ষে চেয়ারম্যান হিসেবে স্ত্রী জীশান মির্জার সম্পত্তি আছে, ২৮ একর ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। সাউদার্ন পার্ক রিসোর্ট অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের চেয়ারম্যান হিসেবে জীশান মীর্জা ও তার স্বামী বেনজির আহমেদের নামে যৌথভাবে আছে ১১ একর ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
সাভানা ন্যাচারাল পার্ক প্রাইভেট লিমিটেডের পক্ষে চেয়ারম্যান জীশান মীর্জার আছে ৪ একর ৫ শতাংশ জমি।
ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর, তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজির, জারা জেরিন বিনতে বেনজিরের যৌথ নামে সম্পত্তি রয়েছে ৩৫ শতাংশ। এদিকে, বেনজিরের এক নাতনির নামে আছে ২৬ দশমিক ২০ শতাংশ জমি।
আবু সাঈদ খালেদ, স্ত্রী ও বড় মেয়ের যৌথ নামে সম্পত্তি রয়েছে, ১১ একর ৪৯ শতাংশ। যার অর্থমূল্য ৪৫ লাখ ৭২ হাজার টাকা।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেনজীর আহমেদের অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি বের হতে থাকলে দুদক প্রায় দুই মাস আগে এ নিয়ে তদন্ত শুরু করে। সেই তদন্তে মোট ৮৩টি দলিলে অবৈধ অর্থে কেনা এসব জমির খোঁজ পাওয়া যায়।
দুদকের তদন্তে আরো জানা যায়, অভিযুক্তরা বাংলাদেশে তাদের নামে-বেনামে অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বিক্রয়/হস্তান্তর করে বিদেশে পাচারের চেষ্টা করেছে। অনুসন্ধান/মামলা নিষ্পত্তির পূর্বে বর্ণিত সম্পত্তিসমূহ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে রাষ্ট্রের সমূহ ক্ষতির কারণ রয়েছে বলে দুদকের পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ জগলুল হোসেনের আদালতে জমিগুলো জব্দ করার আর্জি জানান।
আদালত মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ১৪ ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন, বিধিমালা-২০০৭ এর বিধি ১৮ অনুয়ায়ী নিম্নবর্ণিত স্থাবর সম্পদ ক্রোক (Attach) এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ (Freeze) করার নির্দেশ দেন।
বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন, দর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ এর বিধি ১৮ ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ১৪ ধারার বিধান মোতাবেক অভিযোগ সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামীয় জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অপরাধ সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পদ ক্রোক (Attach) এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ (Freeze) করণের আবেদন করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম।