আইসিসির টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে দুর্বল যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ১৯তম। বোলারদের র্যাঙ্কিংয়েও প্রথম ১০০ জনের তালিকাতেও নেই কেউ। অথচ এমন দলের বিপক্ষে ১৪৫ রানও তুলতে পারল না বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) টেক্সাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি ভিউ কমপ্লেক্সে দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিকরা জিতেছে ৬ রানে।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৪৪ রান তোলে যুক্তরাষ্ট্র। জবাব দিতে নেমে স্নায়ুচাপ থাকলেও ৪ উইকেটে ১০৬ রান তুলে জয়ের পথেই ছিল বাংলাদেশ। যদিও এরপর ৩২ রানের মধ্যে বাকি ৬ উইকেট হারিয়ে লজ্জায় পড়েন সাকিব, শান্তরা। শেষ ওভারে ১২ রানের প্রয়োজন ছিল, যদিও চাপের মুখে আউট হয়ে যান তরুণ রিশাদ হোসেন। ১৯.৩ ওভারে বাংলাদেশ অল আউট ১৩৮ রানে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মিশন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিয়েছে বাংলাদেশ। মূলপর্বে যাত্রা শুরুর আগে উইকেট ও কন্ডিশনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে সহ-আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিন ম্যাচের সিরিজ। প্রথম ম্যাচেই ১৫৪ রানের টার্গেট দিয়ে ৫ উইকেটে হেরেছিল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
হারের পর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, আমরা ভালো খেলিনি। সামনের ম্যাচে চেষ্টা করব আমরা একটা ভালো ম্যাচ খেলার। সবাই আজকে চেষ্টা করেছে কিন্তু আজকের দিনটা আমরা ভালো ক্রিকেট খেলিনি।
কিন্তু শান্তরা দ্বিতীয় ম্যাচে যে চেষ্টা করেছে সেটা ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য যথেষ্ট হলো না। সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে বোলাররা যুক্তরাষ্ট্রকে ১৪৪ রানে আটকে দিলেও ব্যাটিংয়ে ছিল হতশ্রী পারফরম্যান্স।
এদিকে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম দল হিসেবে হারের ‘সেঞ্চুরি’র রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ। হিউস্টনে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বৃহস্পতিকার (২৩ মে) সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে শততম হারের স্বাদ পেয়েছে তারা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচ হারের আগেও বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হারের তালিকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের (৯৯) চেয়ে পিছিয়ে ছিল। গতকাল রাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ফলে তারা এখনো ৯৯-তেই দাঁড়িয়ে।
বাংলাদেশ দল এখন পর্যন্ত ১৬৮ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলে ১০০ ম্যাচে হেরেছ। বাংলাদেশের পরের অবস্থানে থাকা দুই বারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৯৩ ম্যাচ খেলে হেরেছে ৯৯টিতে। শ্রীলঙ্কার পরাজয় ৯৮ ম্যাচ, তারা খেলেছে ১৮৯ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। তালিকায় চতুর্থ স্থানে থাকা জিম্বাবুয়ের পরাজয় ১৪৫ ম্যাচে ৯৫টি। সর্বোচ্চ পরাজয়ের তালিকায় নিউজিল্যান্ড পঞ্চম। বাকি চার দলের তুলনায় অবশ্য তাদের ম্যাচও বেশি। কিউইরা ২১৬ ম্যাচে ৯০টিতে হেরেছে।
বাংলাদেশ দল মোট ম্যাচের ৫৯.৫২ শতাংশই হেরেছে। কমপক্ষে ১০০ ম্যাচ খেলা দলগুলোর মধ্যে যেটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সবার ওপরে জিম্বাবুয়ে, নিজেদের মোট ম্যাচের ৬৫.৫১ শতাংশ ম্যাচই হেরেছে তারা।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে কমপক্ষে ৩ ম্যাচের সিরিজ এর আগে ৯ বার হেরেছে বাংলাদেশ। তবে এর কোনোটিই আইসিসির সহযোগী সদস্য কোনো দেশের বিপক্ষে ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হারে সে অর্থে নতুন এক অভিজ্ঞতাও হলো টাইগারদের।
বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজটি নিজেদের ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্রের মাত্র চতুর্থ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। গত মাসে কানাডাকে হারিয়ে প্রথম জয়ের স্বাদ পায় দলটি। বাংলাদেশের আগে আইসিসির পূর্ণ সদস্য কোনো দলের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচই জিতেছিল মাত্র একটি।
উল্লেখ্য, ২৫ মে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে জয় না পেলে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডুবতে হবে শান্ত বাহিনীকে।