ফিলিস্তিনের স্বাধীনতায় আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে। মঙ্গলবার (২৮ মে) ইসরাইলকে অস্বস্তিতে ফেলে ১৯৬৭ সালের সীমারেখা মেনে জেরুজালেমকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী করার দাবিতে অনড় থাকার বার্তাও দিয়েছে এই তিন দেশ।
এর আগে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪২ রাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলো। এ তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হলো স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে। ফলে এ সংখ্যা দাড়ালো ১৪৫-এ।
স্বাধীনতার জন্য যুগ যুগান্তরের অপেক্ষা। ইসরাইলের আগ্রাসনে ফিলিস্তিনে রক্তের নদী বয়ে গেলেও স্বাধীন ভূমি; মুক্ত আকাশের আকাঙ্ক্ষা অনিশ্চিত। তারপরও স্বাধীনতার দাবি বিশ্ব দরবারে জিইয়ে রাখার সুফল মিলতে শুরু করেছে। এখন অনারব দেশেও জোরদার ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবি। এর ধারাবাহিকতায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতায় আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলো স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনের প্রতি এই স্বীকৃতি কারো বিরুদ্ধে নয়। স্পেনকে মূল্যায়ন করা; উচ্চ সম্মান দেওয়া বন্ধুরাষ্ট্র ইসরাইলের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার আশাবাদ রাখছি। দুই রাষ্ট্রের ভিত্তিতে সমাধানের বিরোধীতা করা সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসকে প্রত্যাখ্যান করার বিষয়টিও এই ঘোষণার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে।’
শুধু দায়সারা স্বাধীনতায় স্বীকৃতিতেই থামেনি ইউরোপের এই তিন দেশ। ফিলিস্তিনিদের প্রাণের চাওয়া, জেরুজালেমকে ভবিষ্যত রাষ্ট্রের রাজধানীর দাবিতে সমর্থন দিয়েছে। বলেছে, ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে ১৯৬৭ সালের সীমারেখা মেনে।
পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, ‘প্রথমত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে অবশ্যই জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে ধরে গাজা ও পশ্চিম তীরকে একটি করিডোরের মাধ্যমে যুক্ত করতে হবে। এবং ফিলিস্তিনের জাতীয় কর্তৃপক্ষকে একটি বৈধ সরকারের সাথে একীভূত হতে হবে। সবার সম্মতি ও ১৯৬৭ সালের সীমারেখায় কোনো পরিবর্তনে স্বীকৃতি দেবে না স্পেন।’
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতায় স্বীকৃতি শুধু ইতিহাসের প্রতি ন্যয়বিচার করাই নয়; শান্তি প্রতিষ্ঠায় অপরিহার্য।
আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিমন হ্যারিস বলেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার আশাকে জীবিত রাখবে এই উদ্যোগ। বিশ্বের ডাকে সাড়া দিতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুকে সাড়া দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেরদিন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোস্তফার হাতে স্বাধীনতায় স্বীকৃতির নথিপত্র তুলে দেন নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইস্পেন বার্থ ইডে।
বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে মিত্রদের নাখোশ করে সবচেয়ে সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া স্পেন, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডসের আশা ইউরোপের অন্য দেশগুলো এর গুরুত্ব বুঝে একই পথে এগুবেন। এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে সামাজিক মাধ্যম এক্স স্ট্যাটাসে স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ইহুদিদের হত্যা আর যুদ্ধাপরাধা উসকানির অভিযোগ তুলেছেন ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল কাটজ্।
আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেরদিন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোস্তফার হাতে স্বাধীনতায় স্বীকৃতির নথিপত্র তুলে দেন নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইস্পেন বার্থ ইডে।
বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে মিত্রদের নাখোশ করে সবচেয়ে সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া স্পেন, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডসের আশা ইউরোপের অন্য দেশগুলো এর গুরুত্ব বুঝে একই পথে এগুবেন।
এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে সামাজিক মাধ্যম এক্স স্ট্যাটাসে স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ইহুদিদের হত্যা আর যুদ্ধাপরাধ উসকানির অভিযোগ তুলেছেন ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল কাটজ্।
এই ঘোষণার আগেরদিন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার বিষয়টি ইউরোপ আর আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকেও উঠেছে। সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন-ফারহানও সাফ-সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইসরাইলের নিরাপত্তা আর অস্তিত্বের জন্যে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা স্বীকার করার বিকল্প নেই।
তবে, স্বাধীনতায় স্বীকৃতিতে সংকট সমাধানে আশার আলো দেখা গেলেও জেরুজালেমের মালিকানা, ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে পাঁচ লক্ষাধিক ইহুদির অবৈধ বসতি আর সাত লাখের মতো ফিলিস্তিনিকে বিতাড়িত করে দখলে নেওয়া ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড ফেরত দেওয়ার প্রশ্নে থমকে যেতে পারে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপনের দীর্ঘমেয়াদী জটিল এই প্রক্রিয়া। সূত্র: আল জাজিরা, সিবিএস নিউজ