আবারও বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের আশ্বাস দিয়েছে চীন। ব্রিকসে যোগদানের জন্য বাংলাদেশকে সক্রিয় সমর্থন দেবে চীন। মঙ্গলবার (৩ জুন) বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক রাজনৈতিক পরামর্শের ১৩তম রাউন্ড অনুষ্ঠানে দেশটির পররাষ্ট্র বিষয়ক ভাইস মিনিস্টার মিস্টার সান ওয়েডং এ আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে ওয়েডং বলেন, ঢাকা ও বেইজিং দুই দেশের দূতাবাস কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপনের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে পারে। এ সময় ব্রিকসে যোগদানের জন্য বাংলাদেশের আগ্রহের প্রশংসা করেন তিনি। ওয়েডং উচ্চ পর্যায়ের বিনিময় এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
বাংলাদেশ থেকে আম ও অন্যান্য কৃষিপণ্য আমদানিতে এবং তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করতে চীন একযোগে কাজ করার আগ্রহের কথা জানান চীনের ভাইস মিনিস্টার।
অনুষ্ঠানে সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় রিমালের ফলে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার জন্য গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেন ওয়েডং। সেই সঙ্গে গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান এবং তার যোগ্য নেতৃত্বে বাঙালি জাতি সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের তথ্য চায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়
উভয় পক্ষই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন সফর এবং আগামী বছর ঢাকায় দুই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে পরবর্তী দ্বিপাক্ষিক রাজনৈতিক আলোচনা অনুষ্ঠানের জন্য যৌথভাবে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
সূচনা বক্তব্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে তার সম্পর্ককে ভাগাভাগি মূল্যবোধ, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং অভিন্ন আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে গুরুত্ব দেয়। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৫২ এবং ১৯৫৭ সালে চীন সফরের কথা স্মরণ করেন এবং আসন্ন ভিভিআইপি সফরের আগে চীনা ভাষায় ‘দ্য নিউ চায়না অ্যাজ আই দেখলাম’ বইটি প্রকাশিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি ২০১৬ সালে রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের কথা তুলে ধরেন। যা ‘সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে উন্নীত করেছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব অবকাঠামোগত উন্নয়নে চীনের সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি ব্যাখ্যা করেন এবং চীনে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত কোটা ফ্রি (ডিএফকিউএফ) অ্যাক্সেসের বিদ্যমান কাঠামো সহজতর করতে চীনের সহায়তা কামনা করেন।
পররাষ্ট্র সচিব মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদির মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বৈশ্বিক সহযোগিতার ওপর জোর দেন। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনে চীনের অব্যাহত সমর্থনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।