এবার সময়ের আগেই চলে এসেছে বর্ষাকাল। এরই মধ্যে মৌসুমী বায়ু বইতে শুরু করেছে সারা দেশে। সবচেয়ে বেশি সক্রিয় সিলেট ও রংপুর বিভাগে। যা আরও তিন দিন অব্যাহত থাকবে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ভারী বৃষ্টিতে সুরমা-কুশিয়ারার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় সাময়িক বন্যা দেখা দিয়েছে। যা ৪৮ ঘণ্টা স্থিতিশীল থাকবে।
৩ জুন থেকে দেশজুড়ে বইতে শুরু করেছে মৌসুমী বায়ু। ভারত ও বঙ্গোপসাগর থেকে আসা মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে প্লাবিত হচ্ছে নিচু এলাকা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সাধারণত ১০ জুনের পর থেকে মৌসুমী বায়ু ঢুকলে শুরু হয় বর্ষাকাল। তবে এবার ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে একটু আগেই এসেছে বর্ষা।
আবহাওয়াবিদ খন্দকার হফিজুর রহমান বলেন, ‘বর্ষাটা সাধারণত টেকনাফ উপকূল থেকে শুরু হয়। টেকনাফ থেকে সিলেট হয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে অগ্রসর হয়। সারাদেশেই জুনের ২০ তারিখের মধ্যে বর্ষা বিস্তার লাভ করে। ওই হিসেবে এবার কিন্তু বর্ষাটা একটু আগেই বিস্তার লাভ করছে।’
গবেষকরা বলছেন, উজানের ভারি বৃষ্টি ও হিমালয়ের বরফ গলা পানি ভাটিতে নামে সিলেট বিভাগের নদনদী দিয়ে। এসব জলধারের কম নাব্যতা ও উজানের বনায়ন ধংসে ভাটিতে বাড়ছে বন্যার ঝুঁকি।
পরিবেশ নিয়ে গবেষণা করা প্রতিষ্ঠান চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের নির্বাহী প্রধান জাকির হোসেন বলেন, ‘হিমালয়ের ৬৭২টা লেক আছে। এরমধ্যে ৬৩২টাতে গত ১২ বছরে পানির মাত্রা দ্বিগুন হয়েছে। যেগুলোর মাত্রা দ্বিগুন হয়েছে পানির, এই পানিগুলো কোথায় যাবে, যদি অতিবৃষ্টি হয়? এটা আলটিমেটলি সবচেয়ে নিচে বাংলাদেশ অবস্থান করছে, বাংলাদেশের ওপর দিয়েই বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়বে।’
এ পরিস্থিতিতে মেঘনা অববাহিকার সুরমা ও কুশিয়ারার তীরে বড় বন্যার আশংকা নেই। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সজল কুমার রায় বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে যেটুকু বৃষ্টি হচ্ছে, নদী ড্রেনেজ সিস্টেম দিয়ে বের করে দিচ্ছে। আশা করছি, আগামী যে ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা থাকছে এরমধ্যেই নদীর পানি সমতলের চেয়ে নিচে নেমে যাবে, ধীর গতিতে হলেও।’
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ভারী বৃষ্টির প্রভাবে তিস্তার পানি বাড়ছে। সেই সাথে সমতলে ১১০টির মধ্যে ৭৩টি পয়েন্টে নদনদীর পানি বাড়ছে।