ঢাকা ০২:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

মুসলিম বিদ্বেষী আইন প্রণয়নে দ্বিধায় জোট সরকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:১৭:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুন ২০২৪
  • / ৩৭২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শরীকদের কাঁধে ভর দিয়ে সরকার গঠন করায় ভেস্তে যাচ্ছে বিজেপির সংবিধান সংশোধনের স্বপ্ন। যদিও নতুন সরকার কিছুটা দুর্বল হলেও মুসলিমদের জন্য এখনো প্রাণঘাতী বলে মন্তব্য রাজনীতি বিশ্লেষকদের। মুসলিম বিরোধী নতুন কোনো আইন প্রণয়নের বদলে আশঙ্কা রয়েছে নতুন মেয়াদে ছড়িয়ে দেয়া হবে মুসলিম বিদ্বেষ।

বুথ ফেরত জরিপগুলো বলছিল, ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে জয় পেয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় বসবে বিজেপি। হয়েছেও তাই। তবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সম্ভবত ভেস্তে যাবে দলটির হিন্দু রাষ্ট্রগঠনের স্বপ্ন।

গেল মেয়াদে বিজেপির অনেক নেতা দাবি করেন, নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসলে সংশোধন করা হবে সংবিধান। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের স্থলে ভারতকে পরিণত করা হবে হিন্দু রাষ্ট্রে। দেশটির ২৫ কোটির বেশি মুসলিম পরিণত করা হবে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে। যদিও তৃতীয় মেয়াদে বিজেপি কিছুটা দুর্বল হয়ে সরকার গঠন করেছে। তবে দলটি এখনো মুসলিমদের জন্য প্রাণঘাতী বলে দাবি রাজনীতি বিশ্লেষকদের।

মধ্যযুগে ইসলাম ফোবিয়া বা ইসলামভীতির সূত্রপাত হলেও উপমহাদেশে এই ধারা ছড়িয়ে পড়ে ১৯৯০ এর দশকে। অযোদ্ধায় বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলার সময় সহিংসতায় নিহত হন ২ হাজারের বেশি মানুষ। পরের দশকে এক হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান গুজরাট দাঙ্গায়। ইসলামভীতির কারণে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতীয়দের মনে জাগ্রত করা হয় হিন্দুত্ববাদী চেতনা। এর সুযোগ নিয়েই ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসে কট্টর হিন্দুনেতা নরেন্দ্র মোদি। আর গেল ১০ বছরে মুসলিমদের ওপর দমনপীড়নের কথা কারোরই অজানা নয়।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পার্লামেন্টে পাস করা হয় বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন। এর মাধ্যমে ভারতের নাগরিকত্ব পাচ্ছেন মুসলিম ছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বী শরণার্থীরা। বিতর্কিত এই আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয় রাজধানী দিল্লিতে। নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারান কমপক্ষে অর্ধশত মানুষ। একইবছর বাতিল করা হয় দেশের একমাত্র মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা।। বিচারবর্হিভূত কার্যাকলাপের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্যে বুলডোজারের মাধ্যমে গুড়িয়ে ফেলা হয় কয়েক হাজার মুসলিম বসতি।

রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, নতুন মেয়াদে মুসলিমদের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো আইন প্রণয়নে দ্বিধায় থাকবে জোট সরকার। কারণ এমন সিদ্ধান্ত সরকার চালিয়ে যাবার ক্ষেত্রে আবির্ভূত হতে পারে আত্মঘাতী হিসেবে। তবে হিন্দুত্ববাদ যেহেতু বিজেপির মূল শক্তি, তাই একে কাজে লাগিয়ে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিতে পারে বিজেপি।

নিউজটি শেয়ার করুন

মুসলিম বিদ্বেষী আইন প্রণয়নে দ্বিধায় জোট সরকার

আপডেট সময় : ০২:১৭:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুন ২০২৪

শরীকদের কাঁধে ভর দিয়ে সরকার গঠন করায় ভেস্তে যাচ্ছে বিজেপির সংবিধান সংশোধনের স্বপ্ন। যদিও নতুন সরকার কিছুটা দুর্বল হলেও মুসলিমদের জন্য এখনো প্রাণঘাতী বলে মন্তব্য রাজনীতি বিশ্লেষকদের। মুসলিম বিরোধী নতুন কোনো আইন প্রণয়নের বদলে আশঙ্কা রয়েছে নতুন মেয়াদে ছড়িয়ে দেয়া হবে মুসলিম বিদ্বেষ।

বুথ ফেরত জরিপগুলো বলছিল, ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে জয় পেয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় বসবে বিজেপি। হয়েছেও তাই। তবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সম্ভবত ভেস্তে যাবে দলটির হিন্দু রাষ্ট্রগঠনের স্বপ্ন।

গেল মেয়াদে বিজেপির অনেক নেতা দাবি করেন, নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসলে সংশোধন করা হবে সংবিধান। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের স্থলে ভারতকে পরিণত করা হবে হিন্দু রাষ্ট্রে। দেশটির ২৫ কোটির বেশি মুসলিম পরিণত করা হবে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে। যদিও তৃতীয় মেয়াদে বিজেপি কিছুটা দুর্বল হয়ে সরকার গঠন করেছে। তবে দলটি এখনো মুসলিমদের জন্য প্রাণঘাতী বলে দাবি রাজনীতি বিশ্লেষকদের।

মধ্যযুগে ইসলাম ফোবিয়া বা ইসলামভীতির সূত্রপাত হলেও উপমহাদেশে এই ধারা ছড়িয়ে পড়ে ১৯৯০ এর দশকে। অযোদ্ধায় বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলার সময় সহিংসতায় নিহত হন ২ হাজারের বেশি মানুষ। পরের দশকে এক হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান গুজরাট দাঙ্গায়। ইসলামভীতির কারণে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতীয়দের মনে জাগ্রত করা হয় হিন্দুত্ববাদী চেতনা। এর সুযোগ নিয়েই ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসে কট্টর হিন্দুনেতা নরেন্দ্র মোদি। আর গেল ১০ বছরে মুসলিমদের ওপর দমনপীড়নের কথা কারোরই অজানা নয়।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পার্লামেন্টে পাস করা হয় বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন। এর মাধ্যমে ভারতের নাগরিকত্ব পাচ্ছেন মুসলিম ছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বী শরণার্থীরা। বিতর্কিত এই আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয় রাজধানী দিল্লিতে। নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারান কমপক্ষে অর্ধশত মানুষ। একইবছর বাতিল করা হয় দেশের একমাত্র মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা।। বিচারবর্হিভূত কার্যাকলাপের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্যে বুলডোজারের মাধ্যমে গুড়িয়ে ফেলা হয় কয়েক হাজার মুসলিম বসতি।

রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, নতুন মেয়াদে মুসলিমদের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো আইন প্রণয়নে দ্বিধায় থাকবে জোট সরকার। কারণ এমন সিদ্ধান্ত সরকার চালিয়ে যাবার ক্ষেত্রে আবির্ভূত হতে পারে আত্মঘাতী হিসেবে। তবে হিন্দুত্ববাদ যেহেতু বিজেপির মূল শক্তি, তাই একে কাজে লাগিয়ে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিতে পারে বিজেপি।