ঢাকা ১১:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

চামড়ার দাম নিয়ে বিপাকে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৩৬:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪
  • / ৩৭৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

২০১৭ সালের পর থেকেই কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে ধস নামে। গত বছর পর্যন্ত দেশের চামড়ার বাজার একই রকম ছিলো। তবে এ বছর কিছুটা সুখবর আছে চামড়ার বাজারে। এ বছর লবণবিহীন প্রতিটি গরুর চামড়ার দাম মানভেদে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হয়। গতকাল ঈদের প্রথম দিন (১৭ই জুন) রাজধানীতে ভালো মানের এক পিস গরুর চামড়া এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

তবে বরাবরের মতই এ বছরও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাঁচা চামড়ার ভালো দাম পাননি তারা। রাজধানীর লালবাগ, সায়েন্সল্যাবসহ কয়েকটি এলাকার মৌসুমি ব্যবসায়ীরা একই সুরে কথা বলছেন।

এবারও কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এ বছর ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, গত বছর যা গত বছরে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।

অন্যদিকে, যদিও ট্যানারি মালিকদের দাবি তারা সঠিক মানের চামড়া পেলে ভালোই দাম দিচ্ছেন। তাদের দাবি, ২৭ স্কয়ার ফুটের এ পিস চামড়া এক হাজার টাকা দর দিচ্ছেন। আর ৫০০ টাকায় কিনছেন ১৪ থেকে ১৮ স্কয়ার ফুটের চামড়া।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে জানানো হয়, গতবছরের থেকে প্রতিটা কাঁচা চামড়ায় দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বাড়তি। সরকার দুইভাবে দাম নির্ধারণ করেছে। একটা কাঁচা চামড়া পিচ হিসেবে ও শুকনা চামড়া স্কয়ার ফুট হিসেবে। গত বছর গড়ে প্রতিটা লবণ ছাড়া চামড়া ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এবার তা এবার ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

অপরদিকে ঢাকার বাইরে গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, গত বছর যা ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। অর্থাৎ এ বছর ঢাকায় গরুর লবণযুক্ত চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট গত বছরের তুলনায় সর্বোচ্চ ৫ টাকা, আর ঢাকার বাইরে সর্বোচ্চ ৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৮ থেকে ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে এবারও বিপাকে দেশের বিভিন্ন স্থানের মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে আড়তদারদের ইচ্ছেমতো দামে। এতে লোকসানের শংকায় পড়েছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। চামড়ার কম দামের জন্য ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেটকে দুষলেন আড়তদাররা। এদিকে, সীমান্ত দিয়ে ভারতে চামড়া পাচার রোধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।

প্রতিবছর কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকা থেকে গবাদিপশুর চামড়া সংগ্রহ করে জেলা শহরে এনে আড়তদারদের কাছে বিক্রি করেন নওগাঁর মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে চামড়া বিক্রি করতে এসে সরকার নির্ধারিত দাম না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরছেন তারা। মৌসুমী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রতি বছরের মতো সিন্ডিকেট করে কম দামে চামড়া কিনছেন আড়তদাররা।

তবে নওগাঁ জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্র“প সাবেক সভাপতি শেখ আজাদ হোসেন জানালেন, ট্যানারি মালিকদের কারণেই চামড়ার নায্য দাম দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

মাগুরায় চামড়ার দাম কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মৌসুমি বিক্রেতারা। এবছর প্রতিটি গরুর চামড়া প্রকার ভেদে মাত্র ৩ শত টাকা থেকে ৬ শ’ টাকা এবং খাসির চামড়া ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চামড়ার কম দাম হওয়ার পেছনে নানা অজুহাত দিলেন মাগুরা চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াহাব।

অন্যদিকে দিনাজপুরে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দামে চামড়া কেনায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ মৌসুমী বিক্রেতাদের। চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নেতারা বলছেন-লবনের দাম ও শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় চামড়া সংরক্ষনের ব্যয় বেড়েছে। এরপরও সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কিনছেন বলে দাবি তাদের।

দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে অবৈধপথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চামড়া পাচার রোধে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বিজিবি। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি গোয়েন্দ নজরদারিও বাড়িয়েছে তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

চামড়ার দাম নিয়ে বিপাকে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা

আপডেট সময় : ০১:৩৬:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪

২০১৭ সালের পর থেকেই কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে ধস নামে। গত বছর পর্যন্ত দেশের চামড়ার বাজার একই রকম ছিলো। তবে এ বছর কিছুটা সুখবর আছে চামড়ার বাজারে। এ বছর লবণবিহীন প্রতিটি গরুর চামড়ার দাম মানভেদে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হয়। গতকাল ঈদের প্রথম দিন (১৭ই জুন) রাজধানীতে ভালো মানের এক পিস গরুর চামড়া এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

তবে বরাবরের মতই এ বছরও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাঁচা চামড়ার ভালো দাম পাননি তারা। রাজধানীর লালবাগ, সায়েন্সল্যাবসহ কয়েকটি এলাকার মৌসুমি ব্যবসায়ীরা একই সুরে কথা বলছেন।

এবারও কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এ বছর ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, গত বছর যা গত বছরে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।

অন্যদিকে, যদিও ট্যানারি মালিকদের দাবি তারা সঠিক মানের চামড়া পেলে ভালোই দাম দিচ্ছেন। তাদের দাবি, ২৭ স্কয়ার ফুটের এ পিস চামড়া এক হাজার টাকা দর দিচ্ছেন। আর ৫০০ টাকায় কিনছেন ১৪ থেকে ১৮ স্কয়ার ফুটের চামড়া।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে জানানো হয়, গতবছরের থেকে প্রতিটা কাঁচা চামড়ায় দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বাড়তি। সরকার দুইভাবে দাম নির্ধারণ করেছে। একটা কাঁচা চামড়া পিচ হিসেবে ও শুকনা চামড়া স্কয়ার ফুট হিসেবে। গত বছর গড়ে প্রতিটা লবণ ছাড়া চামড়া ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এবার তা এবার ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

অপরদিকে ঢাকার বাইরে গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, গত বছর যা ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। অর্থাৎ এ বছর ঢাকায় গরুর লবণযুক্ত চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট গত বছরের তুলনায় সর্বোচ্চ ৫ টাকা, আর ঢাকার বাইরে সর্বোচ্চ ৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৮ থেকে ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে এবারও বিপাকে দেশের বিভিন্ন স্থানের মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে আড়তদারদের ইচ্ছেমতো দামে। এতে লোকসানের শংকায় পড়েছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। চামড়ার কম দামের জন্য ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেটকে দুষলেন আড়তদাররা। এদিকে, সীমান্ত দিয়ে ভারতে চামড়া পাচার রোধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।

প্রতিবছর কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকা থেকে গবাদিপশুর চামড়া সংগ্রহ করে জেলা শহরে এনে আড়তদারদের কাছে বিক্রি করেন নওগাঁর মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে চামড়া বিক্রি করতে এসে সরকার নির্ধারিত দাম না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরছেন তারা। মৌসুমী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রতি বছরের মতো সিন্ডিকেট করে কম দামে চামড়া কিনছেন আড়তদাররা।

তবে নওগাঁ জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্র“প সাবেক সভাপতি শেখ আজাদ হোসেন জানালেন, ট্যানারি মালিকদের কারণেই চামড়ার নায্য দাম দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

মাগুরায় চামড়ার দাম কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মৌসুমি বিক্রেতারা। এবছর প্রতিটি গরুর চামড়া প্রকার ভেদে মাত্র ৩ শত টাকা থেকে ৬ শ’ টাকা এবং খাসির চামড়া ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চামড়ার কম দাম হওয়ার পেছনে নানা অজুহাত দিলেন মাগুরা চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াহাব।

অন্যদিকে দিনাজপুরে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দামে চামড়া কেনায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ মৌসুমী বিক্রেতাদের। চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নেতারা বলছেন-লবনের দাম ও শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় চামড়া সংরক্ষনের ব্যয় বেড়েছে। এরপরও সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কিনছেন বলে দাবি তাদের।

দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে অবৈধপথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চামড়া পাচার রোধে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বিজিবি। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি গোয়েন্দ নজরদারিও বাড়িয়েছে তারা।