জার্মানিতে ইউরোপিয়ান দেশগুলোর শ্রেষ্ঠত্বের জমজমাট আসর বসেছে। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ইউরো ২০২৪–এ ইতোমধ্যে অংশগ্রহণকারী ২৪ দলের প্রায় সবাই এক ম্যাচ করে খেলে ফেলেছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে নবাগত জর্জিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে তুরস্ক। দুর্দান্ত এক গোলে দেশটির মেসি–খ্যাত আর্দা গুলার ২০ বছর আগে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর করা একটি রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছেন।
প্রথমবারের মতো ইউরো খেলতে নেমেছিলেন গুলার। তার মাঠে নামটা হয়েছে এরকম– এলাম, দেখলাম আর জয় করলাম। অভিষেক ম্যাচে দুর্দান্ত গোলের পর তিনি ম্যাচসেরাও হয়েছেন। এর আগে ৬৫ মিনিটের আগপর্যন্ত তুরস্ক-জর্জিয়া ম্যাচটি সমতায় ছিল ১–১ গোলে। এরপরই নজরকাড়া গোল করে গুলার তুরস্ককে লিড এনে দেন।
সতীর্থের বাড়ানো বল পেয়ে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে ২৫ গজ দূর থেকে প্রতিপক্ষের দুই খেলোয়াড়ের মাঝ দিয়ে বাঁ পায়ে বুলেট গতির শট নেন ১৯ বছর বয়সী অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। সেই বল দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ায়। বাঁকানো সেই শটে তাকিয়ে থাকা ছাড়া জর্জিয়া গোলরক্ষকের কিছুই করার ছিল না। আর এর মধ্য দিয়ে তিনি ভেঙে দিলেন পর্তুগাল সুপারস্টার রোনালদোর অভিষেক ম্যাচে করা রেকর্ড।
গুলার ইউরো অভিষেকে গোল করলেন সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে। এই কীর্তি গড়ার সময় তার বয়স ছিল ১৯ বছর ১১৪ দিনে। এর আগে রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক তারকা সিআরসেভেন ২০০৪ সালে ইউরোতে যখন প্রথম গোল করেন, তখন বয়স ছিল ১৯ বছর ১২৮ দিন। মহাদেশীয় টুর্নামেন্টটিতে গ্রিসের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে গোল করেছিলেন রোনালদো। দুজনের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রিয়াল মাদ্রিদের নামও, একজন সাবেক এবং আরেকজন উদীয়মান তারকা। ইতোমধ্যে গুলারও লস ব্লাঙ্কোসদের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন এবার।
তুরস্কের মেসির গত জানুয়ারিতে রিয়ালের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল। ২০২৩-২৪ মৌসুমে ইউরোপের সফলতম দলটির হয়ে ১২ ম্যাচে মাত্র ৪৪৭ মিনিট খেলে ৬ গোল করেন তিনি। তুরস্কের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে পান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বাদ। সেই ফর্ম এবার নিজ দেশের হয়েও টেনে নিয়ে গেলেন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে ৮ ম্যাচে তিনি দ্বিতীয় গোল করলেন।
অভিষেক রাঙানো এমন ম্যাচের পর গুলারের উচ্ছ্বাসটাও দেখার মতো। ম্যাচ শেষে দর্শকদের অভিবাদনের জবাব দিয়েছেন টাচলাইনে দাঁড়িয়ে। পরে প্রতিক্রিয়া জানান এভাবে, ‘আমার অনুভূতি ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়, আমি খুবই রোমাঞ্চিত। সবসময় এমন গোলের স্বপ্ন দেখেছি। অসাধারণ ভালোবাসা পাচ্ছি, তার প্রতিদান দেওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রমও করছি আমি। এভাবে গোল করতে পেরে আমি খুবই খুশি। কার্লো আনচেলত্তি (রিয়াল কোচ) আজ ম্যাচের আগেও আমাকে বার্তা পাঠিয়ে শুভকামনা জানিয়েছিলেন।’