দেশে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার ৩ বিলিয়ন ডলারের
- আপডেট সময় : ০২:৪৩:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪
- / ৩৯৩ বার পড়া হয়েছে
দেশে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার ৩ বিলিয়ন ডলারের। বৈশ্বিক বাজারও বিশাল, প্রায় ৪৬৮ বিলিয়ন ডলারের। দেশে শিল্পটির পর্যাপ্ত কাঁচামালও আছে। তারপরও বিশ্ব বাজারে আশানুরূপ ফলাফল নেই। বিগত কয়েক বছরের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়লেও তা প্রত্যাশা পূরণ করেনি। রপ্তানিতে কিছুটা ইতিবাচক সাড়া মিললেও কাঁচামালের অর্থাৎ কাঁচা চামড়ার বাজার তাঁর উল্টো।
২০২২ সালে বিশ্বে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার ছিল ৪৪১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৬৮ বিলিয়নে। আর ২০৩০ সালে ৭৩৯ বিলিয়ন ডলারে ঠেকবে এ বাজার। এমন পূর্বাভাস দিয়েছে ফরচুন বিজনেস ইনসাইটস। বাংলাদেশের উজ্জল সম্ভাবনা থাকলেও, বিশ্ব বাজারে এ খাতে বাংলাদেশের অবস্থান কেবল ৩ শতাংশ।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ এর এক গবেষণা বলছে, গত কয়েক বছর দেশ থেকে চামড়া রপ্তানি বেড়েছে। ২০২০ সালে ৯৬ মিলিয়ন ডলার, ২০২১ সালে ১৩৫ মিলিয়ন ও ২০২২ সালে ১৫৪ মিলিয়ন ডলারের চামড়া রপ্তানি করে বাংলাদেশ।
বেড়েছে চামড়াজাত বিভিন্ন পণ্য রপ্তানির পরিমাণও। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যমতে বাংলাদেশ ২০১৯-২০ অর্থবছরে চামড়ার জুতা রপ্তানি করে ৬৮০ মিলিয়ন ডলারের আর চামড়ার অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করে ২৪৮ মিলিয়ন ডলার। সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছর চামড়ার জুতা রপ্তানি করে আয় দাঁড়ায় ৭০৩ মিলিয়ন ও চামড়াজাত অন্যান্য ৩৯৬ মিলিয়ন ডলার।
২০০৫ সালে নাইকি, অ্যাডিডাস ও টিম্বারল্যান্ডের মতো কয়েকটি বৈশ্বিক ব্র্যান্ড ও জুতা তৈরির প্রতিষ্ঠান লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ বা এলডব্লিউজি গঠন করে। এ সকল প্রতিষ্ঠান ভালো দামে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য কিনে থাকে। দেশে ২০০ টিরও বেশি ট্যানারি থাকলেও এই সনদ আছে কেবল পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের। চামড়া সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এলডব্লিউজি সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাড়লে চামড়াজাত পণ্য ও জুতা রপ্তানি করে আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় সম্ভব।
রীফ লেদার লিমিটেডের পরিচালক মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘সু ফ্যাক্টরিগুলো আমার কাছ থেকে চামড়া নিচ্ছে। এখানে খরচ আছে। খরচ থাকলেও বেনিফিটও আছে।’
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) বলছে, দেশের অভ্যন্তরে চামড়া ও চামড়া জাত পণ্যের বাজার প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের। ৩৫০০ ছোট ও মাঝারি, ৯০ টির বেশি বড় প্রতিষ্ঠান চামড়াজাত পণ্য তৈরি করছে।
কিন্তু রপ্তানির এ বাজারের সাথে দেশে কাঁচা চামড়ার বাজারের কোন মিল নেই। গেল দুই বছর ধরেই দেশের বৃহৎ কাঁচা চামড়া সরবরাহকারি চট্টগ্রামের আতুড়ার ডিপোর আড়তগুলোতে কমেছে চামড়া সংগ্রহের পরিমাণ। এবারও লক্ষমাত্রা সাড়ে তিন লাখ পিস হলেও ঘাটতি থাকছে লক্ষাধিক পিস। তার ওপর দাম না পেয়ে চামড়া মাদ্রাসা, এতিমখানায় দান করে দিয়েছেন অনেকে।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির সভাপতি মুসলিম উদ্দীন বলেন, ‘গত ১০ বছর পর্যন্ত সরকার চামড়া দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে তবে আমরা কখনো ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত সেই দামে চামড়া বিক্রি করতে পারি নাই।’
দেখতে চাই সম্প্রতি রপ্তানির আশা জাগানিয়া এ খাতে সরকারের তদারকি কেমন? কোরবানের এ সময় মাঠে তারা কী করছেন?
চট্টগ্রামের চামড়া ক্রয় বিক্রয় ও সংরক্ষণ মনিটরিং টিমের প্রধান মোহাম্মাদ রুহুল আমীন বলেন, ‘আড়তদারদের থেকে ট্যানারি মালিকরা যেন সরকারের দেয়া নির্ধারিত মূল্যে চামড়া কিনে সেই বিষয়ে নজর দারি করা হচ্ছে। এই বিষয়ে মন্ত্রণালয় সরাসরি মনিটরিং করছে।’
বাংলাদেশ থেকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের শীর্ষ ক্রেতা আমেরিকা। দেশটিতে ৩৭ শতাংশ চামড়া রপ্তানি হয়। ১০ শতাংশ কিনে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে জাপান, ৮ শতাংশ কিনে তৃতীয় অবস্থান জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস।