০৩:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিলেটে বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যে সংকট

সিলেট অঞ্চলের বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে সিলেট জেলাসহ সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ৈ প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যের সংকট।

আজ (শনিবার, ২২ জুন) সকাল ৬টা পর্যন্ত প্রাপ্ত সংবাদে জানা যায়, সিলেটে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে কমছে নগরের জলাবদ্ধতা। জেলায় ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি। বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে সারি, গোয়াইন, ডাউকি, পিয়াইন নদীর পানি।

তবে ৩টি পয়েন্টে এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে কুশিয়ারা নদীর পানি। অমলসীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১০৩ সেন্টিমিটার ও শেরপুরে ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ তথ্যমতে, বন্যায় আক্রান্ত ১০ লাখ ৪৩ হাজার ১৬১ জন। আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন ২৫ হাজার ২৭৫ জন। তবে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় ৩ হাজার ৬৫০ জন বাড়ি ফিরেছে। জেলায় সাতশ’রও বেশি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে এখনও প্রায় সাড়ে ৯ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে।

পাহাড়ি ঢল কমে আসায় সুনামগঞ্জের সুরমা, যাদুকাটা ও বোলাই নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সুরমা নদীর পানি ষোলঘর পয়েন্ট দিয়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি কমলেও ছাতক, দোয়ারা বাজার, তাহিরপুর, বিশম্ভরপুর, মধ্যনগর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ এখনও দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

এছাড়া ইতিমধ্যে শহরের নিচু এলাকা থেকে বন্যার পানি নামলেও নিম্নাঞ্চল থেকে নামেনি। এতে এখনও পানিবন্দি ৫ লাখ মানুষ। জেলা প্রশাসনের ৫১৫টি আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ইতিমধ্যে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সহায়তার চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া রেল স্টেশন থেকে বরমচাল রেল স্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে রেল লাইনে বন্যার পানি উঠে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে ১০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করছে। নদীর পানি কমতে থাকলেও অপরিবর্তিত রয়েছে বন্যা পরিস্থিতি, কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যায় ৫ হাজার ১০০ হেক্টর আউশ ধান, ১ হাজার ২৫ হেক্টর সবজি ক্ষেত ও ১৩ টন মাছের ক্ষতি হয়েছে। জুড়ি নদীর পানি বিপৎসীমার ১৯৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

হবিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার, মার্কুলী পয়েন্টে ৩৯ সেন্টিমিটার এবং আজমিরীগঞ্জ পয়েন্টে ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত। তবে কুশিয়ারার পানি কমে আসায় সকাল থেকে স্থিতিশীল রয়েছে বন্যা পরিস্থিতি।

এদিকে নেত্রকোণায় সকাল ১১টা পর্যন্ত কলমাকান্দা অংশে উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে জারিয়া পয়েন্টে কংস নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ও খালিয়াজুড়ি পয়েন্টে ধনু নদীর পানি বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে কুড়িগ্রামের সব নদ-নদীতে পানি কমছে। তিস্তা নদীর পানি আরও কমে সকাল ৯টায় কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেটে বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যে সংকট

আপডেট : ০২:০৪:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ জুন ২০২৪

সিলেট অঞ্চলের বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে সিলেট জেলাসহ সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ৈ প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যের সংকট।

আজ (শনিবার, ২২ জুন) সকাল ৬টা পর্যন্ত প্রাপ্ত সংবাদে জানা যায়, সিলেটে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে কমছে নগরের জলাবদ্ধতা। জেলায় ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি। বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে সারি, গোয়াইন, ডাউকি, পিয়াইন নদীর পানি।

তবে ৩টি পয়েন্টে এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে কুশিয়ারা নদীর পানি। অমলসীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১০৩ সেন্টিমিটার ও শেরপুরে ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ তথ্যমতে, বন্যায় আক্রান্ত ১০ লাখ ৪৩ হাজার ১৬১ জন। আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন ২৫ হাজার ২৭৫ জন। তবে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় ৩ হাজার ৬৫০ জন বাড়ি ফিরেছে। জেলায় সাতশ’রও বেশি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে এখনও প্রায় সাড়ে ৯ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে।

পাহাড়ি ঢল কমে আসায় সুনামগঞ্জের সুরমা, যাদুকাটা ও বোলাই নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সুরমা নদীর পানি ষোলঘর পয়েন্ট দিয়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি কমলেও ছাতক, দোয়ারা বাজার, তাহিরপুর, বিশম্ভরপুর, মধ্যনগর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ এখনও দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

এছাড়া ইতিমধ্যে শহরের নিচু এলাকা থেকে বন্যার পানি নামলেও নিম্নাঞ্চল থেকে নামেনি। এতে এখনও পানিবন্দি ৫ লাখ মানুষ। জেলা প্রশাসনের ৫১৫টি আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ইতিমধ্যে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সহায়তার চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া রেল স্টেশন থেকে বরমচাল রেল স্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে রেল লাইনে বন্যার পানি উঠে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে ১০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করছে। নদীর পানি কমতে থাকলেও অপরিবর্তিত রয়েছে বন্যা পরিস্থিতি, কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যায় ৫ হাজার ১০০ হেক্টর আউশ ধান, ১ হাজার ২৫ হেক্টর সবজি ক্ষেত ও ১৩ টন মাছের ক্ষতি হয়েছে। জুড়ি নদীর পানি বিপৎসীমার ১৯৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

হবিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার, মার্কুলী পয়েন্টে ৩৯ সেন্টিমিটার এবং আজমিরীগঞ্জ পয়েন্টে ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত। তবে কুশিয়ারার পানি কমে আসায় সকাল থেকে স্থিতিশীল রয়েছে বন্যা পরিস্থিতি।

এদিকে নেত্রকোণায় সকাল ১১টা পর্যন্ত কলমাকান্দা অংশে উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে জারিয়া পয়েন্টে কংস নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ও খালিয়াজুড়ি পয়েন্টে ধনু নদীর পানি বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে কুড়িগ্রামের সব নদ-নদীতে পানি কমছে। তিস্তা নদীর পানি আরও কমে সকাল ৯টায় কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।