টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে গেলো ভারত। সুপার এইটের হাইভোল্টেজ ম্যাচে অজিদের বিপক্ষে ২৪ রানের জয় পেয়েছে রোহিতরা।
২০৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে ডেভিড ওয়ার্নারকে হারালেও রানের গতি সচল রাখে অজি দুই ব্যাটার ট্রাভিস হেড ও মিচেল মার্শ। তাদের ৮১ রানের জুটি ভাঙেন কুলদীপ যাদব। দলীয় ৮৭ রানে মার্শকে বিদায় করে দেন তিনি। তবে আক্সার প্যাটেলের অনবদ্য ক্যাচ এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে। এরপর ক্রিজে এসে শুরু থেকেই আক্রমণ করতে থাকেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ১২ বলে ২০ রান করে তিনিও যখন যাদবের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন, এরপরই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানরা।
এরপর বুমরাহের বলে ট্রাভিস হেড ৪৩ বলে ৭৬ রান করে আউট হন। পরে টিম ডেভিড কিছুটা চেষ্টা করলেও সেটা বেশি দূর নিয়ে যেতে পারেনি। ভারতের পক্ষে ৩৭ রান খরচ করে ৩ উইকেট তুলে নেন আর্শ্বদীপ সিং। কুলদীপ যাদবের বোলিং স্পেল ছিল ৪-০-২৪-২।
এর আগে সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক মিচেল মার্শ। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই শুন্য রানে ফেরেন ভিরাট কোহলি। আসরজুড়ে পুরোপুরি ব্যর্থ ভারতের এই তারকা ব্যাটার।
এরপর রিশাভ পান্তকে নিয়ে ব্যাটিং তাণ্ডব চালান রোহিত। ইনিংসের তৃতীয় ওভার করতে আসা মিচেল স্টার্ককে রোহিত এক ওভারে পিটিয়ে ২৯ রান নেন। পরের ওভারে প্যাট কামিন্সের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে অনন্য মাইলফলক গড়েন রোহিত। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ২০০ ছক্কার একমাত্র মালিক এখন তিনি।
রোহিত ঝড়ের পর অবশ্য বৃষ্টিতে খেলা কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে। কিন্তু মাঠে ফিরেই আবার ঝড় শুরু করেন ভারতীয় ওপেনার। মাত্র ১৯ বলে ফিফটি করেন তিনি। যা এই বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দ্রুততম।
রোহিত এক প্রান্তে টর্নেডো বইয়ে দিলেও আরেক প্রান্তে বেশ ভুগছিলেন রিশাভ পান্ত। তিনে নেমে রান করতে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়েছে তার। শেষ পর্যন্ত ১৪ বলে ১৫ রান করে ফেরেন তিনি। কোহলি-পান্তকে হারিয়েও সাবলীল ছিলেন রোহিত। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির পথে। তবে ১২তম ওভারে এই ওপেনারকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান মিচেল স্টার্ক। রোহিতের ব্যাট থেকে এসেছে ৪১ বলে ৯২ রান। যেখানে ৭ চার ও ৮টি ছক্কা মেরেছেন এই ওপেনার। তিনি ব্যাটিং করেছেন প্রায় ২২৪ স্ট্রাইকরেটে। এরপর সুরিয়া কুমার যাদবের ৩ চার ও ২ ছক্কায় করা ৩১, শিভাম দুবের ২৮ ও হার্দিক পান্ডিয়ার অপরাজিত ২৭ রানের ইনিংসে ভর করে ভারত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করে। বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক ৪ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে ২টি ও মার্কাস স্টয়নিস ৪ ওভারে ৫৬ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন। জশ হ্যাজলেউড ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে নেন ১টি উইকেট।
এই ম্যাচে জয় না পেলেও সেমির স্বপ্ন বেঁচে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে সরাসরি সেমিফাইনালে উঠেছে রোহিতরা। অন্যদিকে, মঙ্গলবারের (২৫ শে জুন) ম্যাচে যদি আফগানিস্তানকে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ, তখন গ্রুপের বাকি তিন দলের পয়েন্ট হবে সমান ২। তখন হিসেব করা হবে নেট রানরেট। রানরেটে যে দল এগিয়ে থাকবে, তারাই উঠবে সেমিতে। পয়েন্ট টেবিলের হিসেব অনুযায়ী ভারতের বর্তমান নেট রানরেট +২.৪২৫। অস্ট্রেলিয়ার নেট রানরেট +২.৪২৫। আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের রানরেট সবচেয়ে কম। সেমিতে যেতে হলে রশিদদের বিপক্ষে শান্তদের জিততে হবে তাই বিশাল ব্যবধানে। ইএসপিএন ক্রিকইনফো বলছে, যদি বাংলাদেশ আগে ব্যাট করে ১৬০ রান করে, তাহলে টাইগারদের জিততে হবে অন্তত ৬২ রানে।