রমজান, ঈদ থাকলে সে মাসে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) বেড়ে যায়। চলতি জুন মাসে এর ব্যতিক্রম হয়নি। ঈদুল আজহা থাকায় এ মাসে ২৩ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২০৫ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে শুধু ২৩ জুনই এসেছে ১৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৮ কোটি ৯১ লাখ ডলার। মঙ্গলবার (২৫ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে ১৪৬ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় পাঠিয়েছেন। আর ২৩ জুন পর্যন্ত তারা পাঠান ২০৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত বছরের ১ থেকে ২১ জুন প্রবাসী আয় এসেছিল ১৬৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক একলাফে ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা নির্ধারণ করার পর বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা বেড়ে যায়। এতে মাসের প্রথম ২৩ দিনেই এসেছে ২০৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। আর শুধুমাত্র সোমবার (২৩ জুন) এই এক দিনেই এসেছে ১৩ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক একলাফে ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা নির্ধারণ করার পর বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা বেড়েছে। যার প্রভাব দেখা গেছে গত মাসে। চলতি মাসেও এখন পর্যন্ত প্রবাসী আয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারা চলছে। তবে নথিপত্রে ডলারের দাম ১১৭ টাকা হলেও ব্যাংকগুলো ১১৮-১১৯ টাকা দরেও প্রবাসী আয়ের ডলার কিনছে। যে ব্যাংক ডলারের দাম যত বেশি দিচ্ছে, সেটি প্রবাসীদের কাছ থেকে তত বেশি ডলার পাচ্ছে। এসব ব্যাংক অবশ্য বেশি দামে অন্য ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে। এতে আমদানিকারকদের বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। মাঝেমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকও এসব ব্যাংক থেকে ডলার কিনে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ায়।
২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের কারণে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা বেড়ে গিয়েছিল। তখন প্রবাসী আয় প্রতি মাসে গড়ে ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছিল। এর প্রভাবে তখন বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ডলার–সংকট শুরু হয়। ফলে মোট রিজার্ভ কমতে কমতে এখন ২৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। তবে প্রকৃত রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলার।
দেশে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় আসে। আর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলার।