বিচারের মুখোমুখি বেনজীর, যেকোনো মুহূর্তে মামলা
- আপডেট সময় : ০১:৫৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪
- / ৩৮১ বার পড়া হয়েছে
পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে । তবে তার বর্তমান অবস্থান কেউ জানেন না। সরকারি-বেসরকারি ও সংখ্যালঘুদের জমি দখলসহ একডজন অভিযোগের অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আদালত থেকে তিন দফা সম্পদ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার নির্দেশও দেয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে। দুদকের আইনজীবী জানিয়েছেন, বেনজীরের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলমান আছে। সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘অকল্পনীয় অপরাধ করেছেন বেনজীর’।
পুলিশ বাহিনীতে থাকাকালীন নানান কারণে আলোচিত সমালোচিত ছিলেন বেনজীর আহমেদ। ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, র্যাবের মহাপরিচালক এবং সবশেষ পুলিশের আইজিপি। বাহিনীর সব গুরুত্বপূর্ণ পদেই নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ পেয়েছেন বেনজীর।
অবসরে যাওয়ার আগেই ২০২১ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতির দায়ে বেনজীরকে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর অবসরে যান পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।
অবসরে যাওয়ার প্রায় দুই বছর পর বেনজীরের অবৈধ সম্পদ ও অর্থের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। সংস্থাটি প্রাথমিক অনুসন্ধান করেই বেনজীরের পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি ক্রোক করার নির্দেশ পায় আদালত থেকে।
৩৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করাসহ বেনজীরের নামে থাকা শেয়ারবাজারের চারটি অ্যাকাউন্টও জব্দ করা হয়৷ তার নামে ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাটের খোঁজ পেয়েছে দুদক। এর মধ্যে গুলশানে রয়েছে চারটি ফ্ল্যাট। বেনজীরের পরিবারের সব মিলিয়ে ৬৯৭ বিঘা জমি পাওয়া গেছে।
আদালত তিন দফা বেনজীর ও তার পরিবারের নামে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, কক্সবাজার, সাভারে থাকা ৬২১ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার, ৩৪টি ব্যাংক হিসাবসহ সব সম্পত্তি জব্দ করার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে জমি, রিসোর্ট দেখভালের জন্য জেলা প্রশাসকদের দায়িত্ব দিয়েছে আদালত।
বেনজীরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষের পথে রয়েছে দুদক। শিগগিরই তার বিরুদ্ধে করবে দুদক। তবে বেনজীরের বর্তমান অবস্থান জানে না দুদক।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘অবশ্যই দুদক আদালতে যাবে, আবেদন করবে। নিয়ম অনুযায়ী আদালতের কাছে আর্জি জানাবে। আদালত তখন যে আদেশ দেবে তা আমাদের মানতে হবে। গত ৫০ বছরে ২৮ বা ২৯ জন আইজিপির মধ্যে অন্য কারও বিরুদ্ধে তো এমন অভিযোগ আসেনি।’
তিনি বলেন, ‘বাহিনীকে দোষারোপ করে লাভ নেই। এখানে ব্যক্তি অনুসন্ধান চলছে।’
পুলিশের কোনো সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে এত বড় দুর্নীতির অভিযোগ আগে কখনও ওঠেনি। ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির সংবাদে বিস্ময় প্রকাশ করে সাবেক আইনমন্ত্রী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ জানান, বেনজীরকে বিচারের মুখোমুখি করার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে সরকার যদি কোনো পদক্ষেপ নেয়, তাহলে সেটা আমার মতে যথাযথ হয়েছে। দুদক তার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পালিয়ে গেলেই যে নিস্তার পাবে, বিষয়টা তা নয়। তাকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’
ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘সরকার কিন্তু খুব সহজভাবে এই বিষয়টি নেয়নি। তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান হচ্ছে, তা যদি প্রমাণ হয় তাহলে আমার বিশ্বাস সরকার তাদের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে।’
দুদক বেনজীর ও তার পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করলেও তাতে হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে সময় নিয়েছেন তিনি।