যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর বেশি দিন বাকি নেই। নির্বাচন সামনে রেখে দেশের প্রথা মেনে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাতে সরাসরি বিতর্ক হয় প্রধান দুই প্রার্থী জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে। বিতর্কে ট্রাম্পের জোরালো বক্তব্যের বিপরীতে অনেকটাই নিষ্প্রভ ছিলেন বাইডেন। এ নিয়ে ডেমোক্র্যাট ভোটারদের মধ্যে অসন্তোষ ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তাদের অসন্তোষ ও আতঙ্কের মাত্রা এতই প্রবল যে তারা বাইডেনকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বলছেন। এমনকি নিজেদের মধ্যে ব্যক্তিগত আলোচনায় বাইডেনের বিকল্প হিসেবে কে দলের প্রার্থী হতে পারেন, তা নিয়ে আলোচনা করছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর খবর অনুযায়ী, গতকাল রাতের বিতর্কে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে পারফরম্যান্স করেছেন, তাতে ডেমোক্র্যাটরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। আতঙ্ক থেকে তারা বাইডেনের বদলে কে নির্বাচন করতে পারেন, তা নিয়ে সক্রিয় আলোচনা শুরু করেছেন।
তিনজন সম্ভাব্য ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর ঘনিষ্ঠ ভোটকৌশলী বলেছেন, বিতর্কে ট্রাম্পের কাছে বাইডেন ধরাশায়ী হলে তাদের কাছে একের পর এক বার্তা আসতে থাকে। এসব বার্তা দলের ভোটার ও অর্থদাতারা পাঠান। আরেকজন ভোটকৌশলী বলেছেন, কিছু বার্তায় তাদের প্রার্থী যেন বাইডেনের বিকল্প হিসেবে এগিয়ে যায় সে আবেদনও এসেছে।
অন্য একজন উপদেষ্টা বলেছেন, বাইডেন যা করেছেন তা বিপর্যয় হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়ে অন্তত অর্ধডজন মূল অর্থ দাতা বার্তা পাঠিয়েছেন। এই জন্য দলের কিছু একটা করতে হবে বলে জানান তারা। তবে এটাও মানতে হবে বাইডেন নিজ থেকে সরে না দাঁড়ালে এখন কোনো কিছু করা সম্ভব না।
এ বিষয়ে পলিটিকোর সঙ্গে কথা বলেছেন এক ডজনের বেশি ডেমোক্র্যাট ভোটার ও সমর্থক। তারা যেন কোনো রাখঢাক ছাড়া কথা বলতে পারেন সে জন্য তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
ডেমোক্র্যাট পার্টির একজন অর্থদাতা ও বাইডেনের সমর্থক বলেন, প্রেসিডেন্টের এখনই নির্বাচনী প্রচারে ইতি টানার সময় এসেছে। গতকাল রাতে বাইডেনের পারফরম্যান্স ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে হয়েছে। তিনি এতটাই বাজে করেছেন যে কেউ ট্রাম্পের কথার সত্য-মিথ্যা যাচাই-বাছাই করতে যাবে না।
তিনি বলেন, বাইডেনকে এখনই বাদ দেয়া দরকার। এ নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। বাইডেনের বদলে মেরিল্যান্ড ও মিশিগানের গভর্নরের নাম প্রস্তাব করেন তিনি।
তবে নির্বাচনের আগমুহূর্তে বাইডেন সরে যাবেন, এমন সম্ভাবনা নেই। এই বিষয়টি যারা বাইডেনের সমালোচনা করছেন তারাও স্বীকার করছেন।
বাইডেন এতো বাজেভাবে কোণঠাসা হলেও তা সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে তার প্রচারশিবির। তার একজন উপদেষ্টা বলেছেন, তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করেছেন। তিনি এবারও তাই করবেন।
বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাড়াবেন কিনা, এমন প্রশ্ন করা হলে নির্বাচনী প্রচারের এক সহযোগী বলেন, ‘অবশ্যই না।’