ঢাকা ০৮:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

জাতীয় নির্বাচনের আগেই চাঙা হবে লঙ্কান অর্থনীতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:২৯:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪
  • / ৩৭৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঋণদাতা দেশগুলোর সঙ্গে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পুনর্গঠনের চুক্তি সই করেছে শ্রীলঙ্কা। এরমধ্য দিয়ে খেলাপির তালিকা থেকে বের হয়ে আসবে দেশটি। নতুন চুক্তির আওতায় বিদেশি ঋণ পরিশোধে শ্রীলঙ্কা সময় পাবে ২০৪৩ সাল পর্যন্ত। আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচনের আগেই চাঙা হবে লঙ্কান অর্থনীতি। এমনটা আশা করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।

২০২২ সালে ভয়াবহ সংকটে বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় শ্রীলঙ্কা। চরম অর্থনৈতিক সংকটে দেখা দেয় খাদ্যসংকট। আকাশচুম্বী মূল্যস্ফীতি ও জ্বালানির সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে পালিয়ে যান। বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালায় প্রেসিডেন্টের বাসভবনে।

এরপর দেশের হাল ধরেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ রনিল বিক্রমাসিংহে। তার নেতৃত্বে ধীরে ধীরে সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি। রনিলের ক্ষমতা গ্রহণের সময় শ্রীলঙ্কার বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল জিডিপির ৯ শতাংশ। ২০২৭ সালে তা সাড়ে ৪ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা বলেন প্রেসিডেন্ট। আগামী বছর অনুষ্ঠিত দেশের সাধারণ নির্বাচনের আগেই সরকারি বন্ডের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে সংগ্রহ করা ১ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ পুনর্গঠনেরও ঘোষণা দেন বিক্রমাসিংহে।

সম্প্রতি, প্যারিসে ভারত, জাপান ও ফ্রান্সের কাছ থেকে নেয়া ঋণের পুনর্গঠনসংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেছে শ্রীলঙ্কা। যা লঙ্কান অর্থনীতিকে স্বস্তি দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ‘এই চুক্তির ফলে সব ধরনের দ্বিপক্ষীয় ঋণ পরিশোধ ২০২৮ সাল পর্যন্ত স্থগিত থাকবে এবং ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ২০৪৩ সাল পর্যন্ত বাড়বে।’

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘নতুন চুক্তিতে আমরা ২০৪৩ সাল পর্যন্ত সব ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ পাব। ২০২৩ সালে অভ্যন্তরীণ ঋণ আমরা সফলভাবে পুনর্গঠন করতে পেরেছি। বিদেশিদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ঋণগুলো পুনর্গঠন সফলভাবে শেষ করতে পারবো । আন্তর্জাতিক বন্ড হোল্ডারদের সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক চুক্তিতে পৌঁছানো আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য ।’

আগামী ২ জুলাই চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত সংসদে তুলে ধরবেন প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহে। তার এমন পদক্ষেপে খুশি লঙ্কানরা। তাদের আশা বিক্রমাসিংহের নেতৃত্বে সচল হবে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি।

শ্রীলঙ্কার বিদেশি ঋণের বড় উৎস চীন। চীনের এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে নেয়া ৪০০ কোটি ডলারের ঋণও পুনর্গঠন হওয়ার পথে। যদিও দুই দেশের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছুই জানানো হয়নি। তবে বিভিন্ন চীনা ব্যাংক থেকে নেয়া ২১০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ বাণিজ্যিক ঋণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বেইজিং। এছাড়া শ্রীলঙ্কাকে প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণসহায়তা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

জাতীয় নির্বাচনের আগেই চাঙা হবে লঙ্কান অর্থনীতি

আপডেট সময় : ১১:২৯:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪

ঋণদাতা দেশগুলোর সঙ্গে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পুনর্গঠনের চুক্তি সই করেছে শ্রীলঙ্কা। এরমধ্য দিয়ে খেলাপির তালিকা থেকে বের হয়ে আসবে দেশটি। নতুন চুক্তির আওতায় বিদেশি ঋণ পরিশোধে শ্রীলঙ্কা সময় পাবে ২০৪৩ সাল পর্যন্ত। আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচনের আগেই চাঙা হবে লঙ্কান অর্থনীতি। এমনটা আশা করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।

২০২২ সালে ভয়াবহ সংকটে বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় শ্রীলঙ্কা। চরম অর্থনৈতিক সংকটে দেখা দেয় খাদ্যসংকট। আকাশচুম্বী মূল্যস্ফীতি ও জ্বালানির সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে পালিয়ে যান। বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালায় প্রেসিডেন্টের বাসভবনে।

এরপর দেশের হাল ধরেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ রনিল বিক্রমাসিংহে। তার নেতৃত্বে ধীরে ধীরে সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি। রনিলের ক্ষমতা গ্রহণের সময় শ্রীলঙ্কার বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল জিডিপির ৯ শতাংশ। ২০২৭ সালে তা সাড়ে ৪ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা বলেন প্রেসিডেন্ট। আগামী বছর অনুষ্ঠিত দেশের সাধারণ নির্বাচনের আগেই সরকারি বন্ডের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে সংগ্রহ করা ১ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ পুনর্গঠনেরও ঘোষণা দেন বিক্রমাসিংহে।

সম্প্রতি, প্যারিসে ভারত, জাপান ও ফ্রান্সের কাছ থেকে নেয়া ঋণের পুনর্গঠনসংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেছে শ্রীলঙ্কা। যা লঙ্কান অর্থনীতিকে স্বস্তি দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ‘এই চুক্তির ফলে সব ধরনের দ্বিপক্ষীয় ঋণ পরিশোধ ২০২৮ সাল পর্যন্ত স্থগিত থাকবে এবং ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ২০৪৩ সাল পর্যন্ত বাড়বে।’

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘নতুন চুক্তিতে আমরা ২০৪৩ সাল পর্যন্ত সব ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ পাব। ২০২৩ সালে অভ্যন্তরীণ ঋণ আমরা সফলভাবে পুনর্গঠন করতে পেরেছি। বিদেশিদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ঋণগুলো পুনর্গঠন সফলভাবে শেষ করতে পারবো । আন্তর্জাতিক বন্ড হোল্ডারদের সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক চুক্তিতে পৌঁছানো আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য ।’

আগামী ২ জুলাই চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত সংসদে তুলে ধরবেন প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহে। তার এমন পদক্ষেপে খুশি লঙ্কানরা। তাদের আশা বিক্রমাসিংহের নেতৃত্বে সচল হবে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি।

শ্রীলঙ্কার বিদেশি ঋণের বড় উৎস চীন। চীনের এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে নেয়া ৪০০ কোটি ডলারের ঋণও পুনর্গঠন হওয়ার পথে। যদিও দুই দেশের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছুই জানানো হয়নি। তবে বিভিন্ন চীনা ব্যাংক থেকে নেয়া ২১০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ বাণিজ্যিক ঋণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বেইজিং। এছাড়া শ্রীলঙ্কাকে প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণসহায়তা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল।