ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলকভাবে ইহুদি সম্প্রদায় হারেদিদের যোগদানের প্রতিবাদে কয়েক দিন ধরেই জেরুজালেমে বিক্ষোভ হচ্ছে। গতকাল রোববার বিক্ষোভ থেকে পুলিশ ও এক ইসরায়েলি মন্ত্রীর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ইসরায়েলি পুলিশের একজন মুখপাত্র সিএনএনকে বলেন, ইসরায়েলের আবাসন ও নির্মাণমন্ত্রী ইতজাক গোল্ডকনফ বাড়ি ফেরার পথে হামলার শিকার হয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা তাঁর গাড়িতে পাথর ছুঁড়ে মেরেছে। এ ছাড়া বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। এতে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশ সদস্যরা মন্ত্রীকে উদ্ধার করে নিরাপদে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে গেছনে। মন্ত্রী ইতজাক আহত হননি বলে জানিয়েছেন তাঁর মুখপাত্র।
গত মঙ্গলবার (২৫ জুন) হারেদি ইহুদিদের বাধ্যতামূলক সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার নির্দেশ দেয় ইসরায়েলি সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের এই রায়ের পর থেকেই তারা সড়কে নেমে বিক্ষোভ করছেন।
আল্ট্রা অর্থোডক্স হিসেবে পরিচিত হারেদি ইহুদিদের এতদিন সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক ছিল না। এই গোষ্ঠীর পুরুষেরা জীবনের অধিকাংশ সময়ই ধর্মীয় পড়াশোনায় ব্যয় করেন।
গত ৯ মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে ইসরায়েলি বাহিনীতে প্রচুর সেনা সদস্যের প্রয়োজন হচ্ছে। এসব কারণে দেশের সব ইসরায়েলি নারী ও পুরুষকে বাধামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে যুক্ত করতে চাচ্ছেন নেতানিয়াহু সরকার।
এদিকে ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মটরিচের একজন মুখপাত্র গতকাল জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভা অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধভাবে তৈরি হওয়া পাঁচটি ইহুদি বসতিকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। বিনিময়ে স্মটরিচ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জন্য ট্যাক্স ফান্ড দেওয়ার অনুমোদন দেবেন। এই ফান্ড এখন ইসরায়েল সংগ্রহ করছে।
সিএনএনকে পাঠানো এক বিবৃতিতে স্মটরিচের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে ফান্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাস্তবায়ন হবে এবং এর সঙ্গে আগের তিন মাসও যুক্ত হবে। গত ৭ অক্টোবরের আক্রমণের পর এই ফান্ড অবরুদ্ধ করা হয়।
এ ঘোষণার পর থেকে আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছে ইসরায়েল। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি রাষ্ট্র এই পরিকল্পনা প্রত্যাখান করেছে। গত শনিবার এক্স হ্যান্ডলে প্রকাশ করা এক বিবৃতিতে ইইউ মুখপাত্র পিটার স্টানো জানান, ইইউ শক্ত ভাষায় স্মটরিচের ঘোষণার নিন্দা জানায়। তিনি বলেন, ‘শান্তি প্রক্রিয়া নষ্ট করতে এটি আরেকটি ইচ্ছাকৃত প্রয়াস।’
কাতারের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বলছে, দেশটি এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে। পৃথক পৃথক বিবৃতিতে মিশর এবং সৌদি আরব এ সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিক আইন ও নিরাপত্তা পরিষদের রেজ্যুলেশনের লঙ্ঘন বলে জানিয়েছে।