ঢাকা ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ভাসছে সুনামগঞ্জ-সিলেট, পানিবন্দি প্রায় ১০ লাখ মানুষ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৬:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪
  • / ৩৩৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারি বৃষ্টির কবলে পুরো দেশ। সুরমা-কুশিয়ারা পানি বাড়ায় আবারও ভাসছে সুনামগঞ্জ-সিলেট। পানিবন্দি প্রায় ১০ লাখ মানুষ। সবচেয়ে বেশি পানি বেড়েছে শেরপুরের চেল্লাখালী নদীর। অন্যদিকে বান্দরবান-রাঙামাটিতে সড়ক ডুবে আটকা পড়েছে বহু পর্যটক। বৈরি আবহাওয়ায় ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় আজকের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত। পানির তোড়ে ভেঙে গেছে মুহুরী ও কহুয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। সুরমায় নৌকাডুবে নিখোঁজ তিনজন।

কয়েকদিনের টানা বর্ষণ আর উজানের ঢলে এবার ফেনীর মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সাথে বেড়েছে কহুয়া নদীর পানি।

পানির তোড়ে ইতোমধ্যেই দৌলতখান ও পরশুরামের মুহুরী নদীর ৪টি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। প্লাবিত অন্তত ১০টি গ্রাম। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও মাছের ঘের। বিভিন্ন সড়কে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। তলিয়ে গেছে ফুলগাজী বাজার ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘বাঁধ ভেঙ্গে সব তলিয়ে গেছে। দোকানে পানি উঠে নষ্ট হয়ে গেছে বেশির ভাগ পণ্য।’

ফেনী-১ সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম বলেন, ‘বাঁধ নির্মাণের জন্য সমীক্ষা শেষ হয়েছে। আশা করছি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প পাশ হলে কাজ শুরু করা হবে।’

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক । আশ্বাস দিয়েছে টেকসই বাঁধ নির্মাণের।

জাহিদ ফারুক বলেন, ‘৫০ কোটি টাকার প্রকল্প হলে সেটা নিয়ে আমরা কাজ করি। সমীক্ষার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। প্রকল্প পাশ হলে কাজ শুরু হবে।’

এদিকে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও বন্যায় এরই মধ্যে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় স্থগিত করা হয়েছে মঙ্গলবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।

ভারি বর্ষণে জলাবদ্ধতার কবলে নোয়াখালী শহর। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জজ কোর্টের সামনের সড়কসহ শহরের অধিকাংশ এলাকাই পানির নিচে। হঠাৎ করে বাসা-বাড়িতে পানি ওঠায় ভোগান্তিতে পৌরবাসী।

সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমায় প্রবাহিত হওয়ায় হু হু করে ঢুকছে উজানের পানি।

তলিয়ে গেছে তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক উপজেলার সড়ক, ঘরবাড়ি ও ফসিল জমি। পানিবন্দি দুই উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ।

শহরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তাহিরপুর উপজেলা এবং দোয়ারাবাজার উপজেলার সাথে যোগাযোগ তিন ইউনিয়নের। মাস ব্যবধানে দু’বার সুনামগঞ্জ বন্যা আক্রান্ত হওয়ায় বিপাকে এই অঞ্চলের মানুষ।

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে আবারও ভাসছে সিলেট। ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি বাড়ায় বিভিন্ন পয়েন্টে বিপৎসীমায় বইছে সুরমা-কুশিয়ারা।

দ্রুত পানি বাড়তে থাকায় গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাটে সতর্কতা জারি উপজেলা প্রশাসনের। চলতি বন্যায় সিলেটের ১৩ উপজেলায় পানিবন্দি ৭ লাখের বেশি বাসিন্দা। আর আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে প্রায় ৮ হাজার মানুষ।

উত্তরের জীবনরেখা তিস্তার পানি ফের বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত। ভাঙনের কবলে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সলিড স্পার। বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেললেও কাজ না হওয়ার দাবি ভুক্তভোগীদের।

সবচেয়ে বেশি বেড়েছে শেরপুরের চেল্লাখালী নদীর পানি। বিপৎসীমায় বইছে চেল্লাখালী ও ভোগাই নদী। এছাড়া মহারশী নদীর বাঁধ ভেঙে ঝিনাইগাতী উপজেলার ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত।

এদিকে, বৃষ্টিতে বান্দরবানে দেখা দিয়েছে পাহাড় ধসের শঙ্কা। ঝুঁকিতে দিন পার করছেন পাহাড়ের পাদদেশের বাসিন্দারা। আর বৃষ্টিতে রাঙামাটির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় দিঘীনালা-সাজেক সড়ক ডুবে গেছে। এতে সাজেকে আটকা পড়েছেন অনেক পর্যটক।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভাসছে সুনামগঞ্জ-সিলেট, পানিবন্দি প্রায় ১০ লাখ মানুষ

আপডেট সময় : ০৯:৪৬:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪

ভারি বৃষ্টির কবলে পুরো দেশ। সুরমা-কুশিয়ারা পানি বাড়ায় আবারও ভাসছে সুনামগঞ্জ-সিলেট। পানিবন্দি প্রায় ১০ লাখ মানুষ। সবচেয়ে বেশি পানি বেড়েছে শেরপুরের চেল্লাখালী নদীর। অন্যদিকে বান্দরবান-রাঙামাটিতে সড়ক ডুবে আটকা পড়েছে বহু পর্যটক। বৈরি আবহাওয়ায় ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় আজকের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত। পানির তোড়ে ভেঙে গেছে মুহুরী ও কহুয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। সুরমায় নৌকাডুবে নিখোঁজ তিনজন।

কয়েকদিনের টানা বর্ষণ আর উজানের ঢলে এবার ফেনীর মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সাথে বেড়েছে কহুয়া নদীর পানি।

পানির তোড়ে ইতোমধ্যেই দৌলতখান ও পরশুরামের মুহুরী নদীর ৪টি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। প্লাবিত অন্তত ১০টি গ্রাম। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও মাছের ঘের। বিভিন্ন সড়কে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। তলিয়ে গেছে ফুলগাজী বাজার ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘বাঁধ ভেঙ্গে সব তলিয়ে গেছে। দোকানে পানি উঠে নষ্ট হয়ে গেছে বেশির ভাগ পণ্য।’

ফেনী-১ সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম বলেন, ‘বাঁধ নির্মাণের জন্য সমীক্ষা শেষ হয়েছে। আশা করছি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প পাশ হলে কাজ শুরু করা হবে।’

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক । আশ্বাস দিয়েছে টেকসই বাঁধ নির্মাণের।

জাহিদ ফারুক বলেন, ‘৫০ কোটি টাকার প্রকল্প হলে সেটা নিয়ে আমরা কাজ করি। সমীক্ষার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। প্রকল্প পাশ হলে কাজ শুরু হবে।’

এদিকে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও বন্যায় এরই মধ্যে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় স্থগিত করা হয়েছে মঙ্গলবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।

ভারি বর্ষণে জলাবদ্ধতার কবলে নোয়াখালী শহর। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জজ কোর্টের সামনের সড়কসহ শহরের অধিকাংশ এলাকাই পানির নিচে। হঠাৎ করে বাসা-বাড়িতে পানি ওঠায় ভোগান্তিতে পৌরবাসী।

সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমায় প্রবাহিত হওয়ায় হু হু করে ঢুকছে উজানের পানি।

তলিয়ে গেছে তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক উপজেলার সড়ক, ঘরবাড়ি ও ফসিল জমি। পানিবন্দি দুই উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ।

শহরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তাহিরপুর উপজেলা এবং দোয়ারাবাজার উপজেলার সাথে যোগাযোগ তিন ইউনিয়নের। মাস ব্যবধানে দু’বার সুনামগঞ্জ বন্যা আক্রান্ত হওয়ায় বিপাকে এই অঞ্চলের মানুষ।

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে আবারও ভাসছে সিলেট। ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি বাড়ায় বিভিন্ন পয়েন্টে বিপৎসীমায় বইছে সুরমা-কুশিয়ারা।

দ্রুত পানি বাড়তে থাকায় গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাটে সতর্কতা জারি উপজেলা প্রশাসনের। চলতি বন্যায় সিলেটের ১৩ উপজেলায় পানিবন্দি ৭ লাখের বেশি বাসিন্দা। আর আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে প্রায় ৮ হাজার মানুষ।

উত্তরের জীবনরেখা তিস্তার পানি ফের বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত। ভাঙনের কবলে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সলিড স্পার। বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেললেও কাজ না হওয়ার দাবি ভুক্তভোগীদের।

সবচেয়ে বেশি বেড়েছে শেরপুরের চেল্লাখালী নদীর পানি। বিপৎসীমায় বইছে চেল্লাখালী ও ভোগাই নদী। এছাড়া মহারশী নদীর বাঁধ ভেঙে ঝিনাইগাতী উপজেলার ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত।

এদিকে, বৃষ্টিতে বান্দরবানে দেখা দিয়েছে পাহাড় ধসের শঙ্কা। ঝুঁকিতে দিন পার করছেন পাহাড়ের পাদদেশের বাসিন্দারা। আর বৃষ্টিতে রাঙামাটির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় দিঘীনালা-সাজেক সড়ক ডুবে গেছে। এতে সাজেকে আটকা পড়েছেন অনেক পর্যটক।