ঢাকা ০১:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে গণতন্ত্রের জয় দেখছেন উচ্ছ্বসিত ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:৪০:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪
  • / ৩৮৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিভিন্ন মামলায় চাপের মধ্যে থাকা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সুপ্রিম কোর্টের রায়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। এই রায়কে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও গণতন্ত্রের জয় বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

গতকাল সোমবার রায় ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, ‘এই রায় আমাদের সংবিধান এবং গণতন্ত্রের জন্য বিশাল এক জয়। একজন আমেরিকান হিসেবে আমি গর্বিত।’

২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা, যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলায় উসকানি, পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে মুখ বন্ধ রাখার জন্য ঘুষ প্রদান, কর ফাঁকি এবং রাষ্ট্রের গোপন নথি সরানোর অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টসহ বিভিন্ন আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা চলছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এছাড়া কর ফাঁকি, সম্পদের তথ্য গোপন ও ২০১৫ সালের নির্বাচনের আগে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ প্রদানের ঘটনায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের জেলা আদালতে ইতোমধ্যে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি অভিযোগ আনা হয়েছে। সেসব অভিযোগের বিচারকাজও চলছে।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের নেতৃত্বে ৬ জন বিচারপতির একটি বেঞ্চ যে রায় ঘোষণা করেছেন—তাতে বলা হয়েছে দেশের প্রেসিডেন্টের পদে থাকা অবস্থায় যেসব দাপ্তরিক অপরাধমূলক পদক্ষেপ ট্রাম্প নিয়েছেন, সেসবের ক্ষেত্রে দায়মুক্তি ভোগ করবেন তিনি।

তবে প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে যেসব অপতৎপরতায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে, সেসবের জন্য বিচারের মুখোমুখী হতে হবে ট্রাম্পকে। এক্ষেত্রে কোনো সুবিধা তিনি পাবেন না।

এ রায়ের ফলে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে সংশ্লিষ্টতা, ক্যাপিটল হিলে হামলার উসকানি দেওয়া এবং রাষ্ট্রের গোপন তথ্য সরানোর অভিযোগ সংক্রান্ত যেসব মামলার বিচারকাজ বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে চলমান রয়েছে, সেসব এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফের নিম্ন আদালতে চলে যাবে।

এতে এসব মামলার বিচার প্রক্রিয়া একটি দীর্ঘসূত্রিতার মধ্যে পড়বে এবং তা রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক হবে ট্রাম্পের জন্য। কারণ আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বচন হবে। সেই নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প। যদি নির্বাচনের আগেই এসব মামলার রায় ঘোষিত হতো, তাহলে তা নির্বাচনে ট্রাম্পের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতো।

সুপ্রিম কোর্টের যে ৬ সদস্যের বেঞ্চ রায় ঘোষনা করেছেন, তাদের মধ্যে ৩ জন রায়ে সমর্থন জানানো থেকে বিরত ছিলেন। এই তিনজনের মধ্যে অন্যতম বিচারপতি সোনিয়া সোটোমেয়র এএফপিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট পদে থাকার কারণে কোনো ব্যক্তি অপরাধ থেকে দায়মুক্তি পাচ্ছেন— এমনটা এই দেশের ইতিহাসে এর আগে কখনও ঘটেনি। আমার মনে হয়েছে— এই রায় দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিপন্থি। তাই আমি এতে সমর্থন জানাইনি।’

প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসসহ বর্তমানে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে যেসব বিচারপতি রয়েছেন, তাদের অর্ধেকই নিয়োগ পেয়েছিলেন ট্রাম্পের আমলে। জন রবার্টসকেও প্রধান বিচারপতি করেছিল ট্রাম্প প্রশাসনই।

নিউইয়র্কের যে আদালতে ট্রাম্পের ৩৪টি অভিযোগের বিচার চলছে, সেসব অভিযোগের রায় আগামী ১১ জুলাই ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে গণতন্ত্রের জয় দেখছেন উচ্ছ্বসিত ট্রাম্প

আপডেট সময় : ০২:৪০:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪

বিভিন্ন মামলায় চাপের মধ্যে থাকা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সুপ্রিম কোর্টের রায়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। এই রায়কে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও গণতন্ত্রের জয় বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

গতকাল সোমবার রায় ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, ‘এই রায় আমাদের সংবিধান এবং গণতন্ত্রের জন্য বিশাল এক জয়। একজন আমেরিকান হিসেবে আমি গর্বিত।’

২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা, যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলায় উসকানি, পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে মুখ বন্ধ রাখার জন্য ঘুষ প্রদান, কর ফাঁকি এবং রাষ্ট্রের গোপন নথি সরানোর অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টসহ বিভিন্ন আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা চলছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এছাড়া কর ফাঁকি, সম্পদের তথ্য গোপন ও ২০১৫ সালের নির্বাচনের আগে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ প্রদানের ঘটনায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের জেলা আদালতে ইতোমধ্যে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি অভিযোগ আনা হয়েছে। সেসব অভিযোগের বিচারকাজও চলছে।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের নেতৃত্বে ৬ জন বিচারপতির একটি বেঞ্চ যে রায় ঘোষণা করেছেন—তাতে বলা হয়েছে দেশের প্রেসিডেন্টের পদে থাকা অবস্থায় যেসব দাপ্তরিক অপরাধমূলক পদক্ষেপ ট্রাম্প নিয়েছেন, সেসবের ক্ষেত্রে দায়মুক্তি ভোগ করবেন তিনি।

তবে প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে যেসব অপতৎপরতায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে, সেসবের জন্য বিচারের মুখোমুখী হতে হবে ট্রাম্পকে। এক্ষেত্রে কোনো সুবিধা তিনি পাবেন না।

এ রায়ের ফলে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে সংশ্লিষ্টতা, ক্যাপিটল হিলে হামলার উসকানি দেওয়া এবং রাষ্ট্রের গোপন তথ্য সরানোর অভিযোগ সংক্রান্ত যেসব মামলার বিচারকাজ বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে চলমান রয়েছে, সেসব এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফের নিম্ন আদালতে চলে যাবে।

এতে এসব মামলার বিচার প্রক্রিয়া একটি দীর্ঘসূত্রিতার মধ্যে পড়বে এবং তা রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক হবে ট্রাম্পের জন্য। কারণ আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বচন হবে। সেই নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প। যদি নির্বাচনের আগেই এসব মামলার রায় ঘোষিত হতো, তাহলে তা নির্বাচনে ট্রাম্পের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতো।

সুপ্রিম কোর্টের যে ৬ সদস্যের বেঞ্চ রায় ঘোষনা করেছেন, তাদের মধ্যে ৩ জন রায়ে সমর্থন জানানো থেকে বিরত ছিলেন। এই তিনজনের মধ্যে অন্যতম বিচারপতি সোনিয়া সোটোমেয়র এএফপিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট পদে থাকার কারণে কোনো ব্যক্তি অপরাধ থেকে দায়মুক্তি পাচ্ছেন— এমনটা এই দেশের ইতিহাসে এর আগে কখনও ঘটেনি। আমার মনে হয়েছে— এই রায় দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিপন্থি। তাই আমি এতে সমর্থন জানাইনি।’

প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসসহ বর্তমানে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে যেসব বিচারপতি রয়েছেন, তাদের অর্ধেকই নিয়োগ পেয়েছিলেন ট্রাম্পের আমলে। জন রবার্টসকেও প্রধান বিচারপতি করেছিল ট্রাম্প প্রশাসনই।

নিউইয়র্কের যে আদালতে ট্রাম্পের ৩৪টি অভিযোগের বিচার চলছে, সেসব অভিযোগের রায় আগামী ১১ জুলাই ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র : বিবিসি