ঢাকা ০১:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দেশের সম্পদ বেচে শেখ মুজিবের মেয়ে ক্ষমতায় আসে না: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৩:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪
  • / ৩৭০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রিতে বাধ সাধায় ২০০১ সালে সরকার গঠন করতে পারিনি। ওই সময় অনেক ভোট পেয়েছিলাম, কিন্তু প্রয়োজনীয় সিট পাইনি। বাংলাদেশের সম্পদ না বেচায় যদি ক্ষমতায় না আসি, তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। শেখ মুজিবের মেয়ে কখনো দেশের সম্পদ বেঁচে ক্ষমতায় আসে না।

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে মুন্সিগঞ্জে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী খরস্রোতা পদ্মাকে শাসন করে সেতু নির্মাণের সঙ্গে জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি পদ্মা সেতু নির্মাণে যারা জমি দান করেছেন তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হিলারি ক্লিনটনের নির্দেশেই তখন পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দেয় বিশ্বব্যাংক। তখন বিশ্বের অনেক নেতার সঙ্গে কথা হয়েছে। সবাই ভেবেছিল বিশ্বব্যাংক ছাড়া সম্ভব না। শুধু মালয়েশিয়া বলেছিল, তাঁরা আমাদের সেতুটা করে দেবে। তখন আমিই বলেছিলাম, আমাদের সেতু আমাদের টাকাতেই হবে। যেদিন টাকা হবে সেদিন সেতু হবে। কারও কথায় মাথা নত করে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতা ছিল না বিদেশে গেছি, তখন বাংলাদেশের নামটা শুনলে কেউ জিজ্ঞাসা করত, এটা কি ভারতের কোনও অংশ? জিজ্ঞেস করত, এদেশে তো শুধু ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, দুর্ভিক্ষ লেগে থাকে। মিসকিন হিসেবে আমাদেরকে হিসেব করা হতো। যেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্ট, ব্যথার ছিল। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। আর সেই স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের মর্যাদা থাকবে না, আমরা মাথা তুলে কথা বলতে পারবো না, আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ থাকবে না, এটা কি ধরনের বাংলাদেশ?

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দুই বছরেই নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগে বদলে গেছে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থা। ২০২২ সালের ২৫ জুন সড়কপথের পর ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর চালু হয় পদ্মা সেতু প্রকল্পের রেলপথ। বাকি ছিল নদীশাসনসহ কারিগরি কিছু কাজ। এবার প্রকল্পের সেসব কাজও শেষ হয়েছে।

গত ৩০ জুন সেতুর সব কর্মযজ্ঞ শেষ হওয়ার কথা জানান সংশ্লিষ্টরা। উদ্বোধনের পর থেকে গত ২৫ জুন পর্যন্ত দুই বছরে পদ্মা সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ১ হাজার ৬৪৮ কোটি ৭৬ লাখ ১৮ হাজার ৩০ টাকা।

এ সমাপনী অনুষ্ঠানের ব্যয় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে করার অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। অনুষ্ঠানের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি টাকার ওপরে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এতে সভাপতিত্ব করেন।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন। প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই পদ্মা সেতুর থিমসং প্রচার করা হয়। এছাড়া পদ্মা সেতুর ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হয়। সুধী সমাবেশে সেতুমন্ত্রীর ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন, সেতু বিভাগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলামসহ অনেকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশের সম্পদ বেচে শেখ মুজিবের মেয়ে ক্ষমতায় আসে না: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৬:৩৩:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রিতে বাধ সাধায় ২০০১ সালে সরকার গঠন করতে পারিনি। ওই সময় অনেক ভোট পেয়েছিলাম, কিন্তু প্রয়োজনীয় সিট পাইনি। বাংলাদেশের সম্পদ না বেচায় যদি ক্ষমতায় না আসি, তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। শেখ মুজিবের মেয়ে কখনো দেশের সম্পদ বেঁচে ক্ষমতায় আসে না।

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে মুন্সিগঞ্জে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী খরস্রোতা পদ্মাকে শাসন করে সেতু নির্মাণের সঙ্গে জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি পদ্মা সেতু নির্মাণে যারা জমি দান করেছেন তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হিলারি ক্লিনটনের নির্দেশেই তখন পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দেয় বিশ্বব্যাংক। তখন বিশ্বের অনেক নেতার সঙ্গে কথা হয়েছে। সবাই ভেবেছিল বিশ্বব্যাংক ছাড়া সম্ভব না। শুধু মালয়েশিয়া বলেছিল, তাঁরা আমাদের সেতুটা করে দেবে। তখন আমিই বলেছিলাম, আমাদের সেতু আমাদের টাকাতেই হবে। যেদিন টাকা হবে সেদিন সেতু হবে। কারও কথায় মাথা নত করে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতা ছিল না বিদেশে গেছি, তখন বাংলাদেশের নামটা শুনলে কেউ জিজ্ঞাসা করত, এটা কি ভারতের কোনও অংশ? জিজ্ঞেস করত, এদেশে তো শুধু ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, দুর্ভিক্ষ লেগে থাকে। মিসকিন হিসেবে আমাদেরকে হিসেব করা হতো। যেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্ট, ব্যথার ছিল। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। আর সেই স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের মর্যাদা থাকবে না, আমরা মাথা তুলে কথা বলতে পারবো না, আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ থাকবে না, এটা কি ধরনের বাংলাদেশ?

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দুই বছরেই নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগে বদলে গেছে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থা। ২০২২ সালের ২৫ জুন সড়কপথের পর ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর চালু হয় পদ্মা সেতু প্রকল্পের রেলপথ। বাকি ছিল নদীশাসনসহ কারিগরি কিছু কাজ। এবার প্রকল্পের সেসব কাজও শেষ হয়েছে।

গত ৩০ জুন সেতুর সব কর্মযজ্ঞ শেষ হওয়ার কথা জানান সংশ্লিষ্টরা। উদ্বোধনের পর থেকে গত ২৫ জুন পর্যন্ত দুই বছরে পদ্মা সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ১ হাজার ৬৪৮ কোটি ৭৬ লাখ ১৮ হাজার ৩০ টাকা।

এ সমাপনী অনুষ্ঠানের ব্যয় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে করার অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। অনুষ্ঠানের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি টাকার ওপরে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এতে সভাপতিত্ব করেন।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন। প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই পদ্মা সেতুর থিমসং প্রচার করা হয়। এছাড়া পদ্মা সেতুর ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হয়। সুধী সমাবেশে সেতুমন্ত্রীর ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন, সেতু বিভাগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলামসহ অনেকে।