পর্দা নামলো তিনদিনের প্রথম আন্তর্জাতিক জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনীর। সারাদেশের ৫ হাজারের বেশি জুয়েলারি ব্যবসায়ী অংশ নেন প্রদর্শনীতে। জুয়েলারি শিল্পে আধুনিক মেশিনারিজের সুবিধা আগ্রহী করে তুলেছে স্বর্ণব্যবসায়ীদের। হাতের পরিবর্তে যন্ত্র দিয়ে অলঙ্কার তৈরিতে এই খাতে আরও উন্নতির জন্য আসছে বছরের সেপ্টেম্বরে বড় পরিসরে প্রদর্শনীর ঘোষণা দেন আয়োজকরা।
সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত স্বর্ণব্যবসা ক্রমেই পরিসর বাড়ছে বিশ্ববাজারে। শুধু তাই নয়, উন্নত দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে স্বর্ণের মজুতসহ বহুমুখী ব্যবহার নতুন মাত্রা পেয়েছে স্বর্ণশিল্পে।
এরই প্রেক্ষাপটে দেশে নতুন জুয়েলারি কারখানা স্থাপন ও পুরাতন কারখানাগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজনসহ রপ্তানিমুখী খাত হিসেবে গড়ে তুলতে আয়োজন করা হয় দেশে প্রথম আন্তর্জাতিক মেশিনারিজ প্রদর্শনীর।
'গহনায় হোক প্রযুক্তির ছোঁয়া' প্রতিপাদ্যে আয়োজিত প্রদর্শনীতে সারাদেশের ৫ হাজারের বেশি জুয়েলারি ব্যবসায়ীর ঢল নামে রাজধানীর আইসিসিবিতে। তিনদিনের এ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে দেশীয় ৫টি, ভারতের ৮টি, ইতালি ও তুরস্কের ২টি, জার্মানি, চীন ও থাইল্যান্ডের ১টিসহ মোট ১০ দেশের ৩০টি প্রতিষ্ঠান।
প্রদর্শনী বিক্রেতাদের একজন বলেন, 'বালা টেস্ট করার মেশিনে টেস্ট করলে তখন আর কনফিউশন থাকবে না কিনে ঠকছি কিনা।'
প্রদর্শনীর স্টল ঘুরে আধুনিক মেশিনারিজের উপযোগিতা স্বর্ণব্যবসায়ীদের আগ্রহী করে তুলেছে। এছাড়াও ব্যবসায়ীদের সাড়া পেয়ে খুশি বিক্রয় প্রতিনিধি ও প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
দর্শনার্থদের একজন বলেন, 'এসে অনেক কিছু জানতে পারতেছি, যা আগে জানা ছিল না।'
জুয়েলারি শিল্পের বিকাশে প্রধান বাধা চোরাচালান ও বাড়তি শুল্ক বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশনের মুখপাত্র ও সাবেক সভাপতি এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. দিলীপ কুমার রায়। তিনি বলেন, সহায়ক নীতি সহায়তা পেলে জুয়েলারি শিল্পে বিপ্লব ঘটবে।
আজ শনিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আন্তর্জাতিক জুয়েলারি মেশিনারিজ প্রদর্শনীর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রদর্শনীটি যৌথভাবে আয়োজন করেন বাজুস ও কেএনসি সার্ভিসেস (ভারতীয় প্রতিষ্ঠান)।
বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাজুসের মুখপাত্র ও সাবেক সভাপতি দিলীপ কুমার রায়, সহ-সভাপতি সমিত ঘোষ অপু, রিপনুল হাসান, মাসুদুর রহমান, গুলজার আহমেদ প্রমুখ। প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া সব প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা স্মরক দেওয়া হয়।
সুযোগ সুবিধা পেলে অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা মিটিয়ে জুয়েলারি শিল্প বিশ্ববাজারে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করবে মন্তব্য করে দিলীপ কুমার রায় বলেন, দেশের জুয়েলারি শিল্পে যে অমিত সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে তাতে অনুমান করা যায়, সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে জুয়েলারি শিল্পও তৈরি পোশাক শিল্পের মতো বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
প্রদর্শনীর শেষ দিনে আয়োজকরা ঘোষণা দেন, আগামী বছর ১১-১৩ সেপ্টেম্বর ২য় আন্তর্জাতিক মেশিনারিজ প্রদর্শনী মহাসমারোহে আয়োজন করবে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন-বাজুস।
গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনী আজ শেষ হলো। এবারের প্রদর্শনীর প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো ‘গহনায় হোক প্রযুক্তির ছোঁয়া’। এতে অংশ নিয়েছে ভারত, ইতালি, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, চীন ও থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের প্রায় ১০ দেশের ৩০টি প্রতিষ্ঠান।