ফৌজদারি জালিয়াতির অপরাধ স্বীকারে বোয়িংয়ের সম্মতি
- আপডেট সময় : ০৮:৩৮:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪
- / ৩৭১ বার পড়া হয়েছে
অবশেষে মার্কিন আদালতে ফৌজদারি জালিয়াতির অপরাধ স্বীকার করতে সম্মতি জানিয়েছে দেশটির বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং। ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস জানায়, ২৪ কোটি ডলার জরিমানা দিতেও সম্মত প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বোয়িংকে বিনিয়োগ করতে হবে ৪৫ কোটি ডলার। এই ঘটনার কারণে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আকর্ষণীয় সব চুক্তি স্থগিত রাখতে হতে পারে বোয়িংকে।
২০১৮ আর ২০১৯ সালে বোয়িং সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্সের বিমান ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রায় সাড়ে ৩শ’ মানুষের প্রাণ যায়। এরপর থেকেই নিরাপত্তা ইস্যুতে তোপের মুখে পড়ে বোয়িং। এই মডেলের বিমানের উড্ডয়ন বন্ধ থাকে এক বছরেরও বেশি সময়। ২০২১ সালে বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় নিয়মনীতি ভঙ্গের। বলা হয়, ফেডারেল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশনের ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম অনুসরণ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। আর এ কারণেই ঘটে গেছে এতো বড় দুর্ঘটনা। তখন শর্ত দেয়া হয়, ক্ষতিপূরণসহ ৩ বছরে বিমানের নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি অগ্রগতির তথ্য জানাতে হবে বোয়িংকে।
কিন্তু তিন বছর শেষ হওয়ার আগেই চলতি বছরের জানুয়ারিতে আলাস্কা এয়ারলাইন্সের একটি বিমানের মাঝ আকাশে দরজা উড়ে যাওয়ার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আবারও প্রশ্ন ওঠে বোয়িংয়ের নিরাপত্তা নিয়ে।
মে মাসে ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস জানায়, বোয়িং চুক্তি ভঙ্গ করেছে। তদন্ত শুরু হতে পারে যেকোনো সময়। এরপর নিজেদের ফৌজদারি জালিয়াতির অপরাধ স্বীকার করে ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হয় বোয়িং।
বোয়িংয়ের প্রধান নির্বাহী ডেভিড কালহোন বলেন, ‘লায়ন এয়ার ফ্লাইট ৬১০ আর ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৩০২’তে যেসব যাত্রীর প্রাণ গেছে, তাদের কাছের মানুষগুলোর সঙ্গে কথা বলতে চাই। বোয়িংয়ের জন্য আপনাদের যে ক্ষতি হয়েছে, আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। এই অপরাধের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। আমরা তাদের স্মরণ করে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করবো। যতোদিন বোয়িংয়ে কর্মরত আছি, বিমানে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করবো। আমি দুঃখিত।’
বোয়িং দোষ স্বীকার করে না নিলে চলতি সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্রের কারণে তদন্ত আর বিচারের মুখোমুখি হতে হতো প্রতিষ্ঠানটিকে। তবে বোয়িংয়ের আবেদন এখনও অনুমোদনের বাকি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের।
এখন প্রতিষ্ঠানটি ২৪ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দেবে। পাশাপাশি তিন বছরে নিজেদের বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিনিয়োগ করবে ৪৫ কোটি ডলার। একটি পর্যবেক্ষক দলও নিয়োগ দেয়া হবে বোয়িংয়ের কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনায়। যারা দেবে বার্ষিক প্রতিবেদন।
তবে এই ফৌজদারি জালিয়াতির অপরাধ স্বীকারের কারণে আবারও ভাবমূর্তি সংকটে পড়ে গেলো বোয়িং। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ, নাসাসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আকর্ষণীয় সব চুক্তি স্থগিত রাখতে হবে বোয়িংকে। আর এসব কারণে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ার শঙ্কায় বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি।