সব গ্রেডে সকল প্রকার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে নূন্যতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধনের দাবিতে দেশব্যাপী লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন'। আন্দোলন পরিচালনার লক্ষ্যে দেশব্যাপী ৬৫ সদস্য বিশিষ্ট সমন্বয়ক টিম গঠন করেছে প্ল্যাটফর্মটি।
সোমবার (০৮ জুলাই) বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেয়া হয়। আন্দোলনের সুবিধার্থে সামনের দিনে সারাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়কদের নিয়ে সমন্বয়ক টিম বর্ধিত করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। আন্দোলনকে আরও গতিশীল করতে কমিটিতে ২৩ জন সমন্বয়ক এবং সহ-সমন্বয়ক হিসেবে ৪২ জন শিক্ষার্থীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে ও স্থায়ী সমাধানের দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সফল করার জন্য সারাদেশের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে ৬৫ সদস্য বিশিষ্ট সমন্বয়ক টিম গঠন করা হলো।”
কমিটিতে সমন্বয়ক হিসেবে আছেন, নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, মো. মাহিন সরকার, আব্দুল কাদের, আবু বাকের মজুমদার, আব্দুল হান্নান মাসুদ, আদনান আবির, জামান মৃধা, মোহাম্মদ সোহাগ মিয়া নুসরাত তাবাসসুম (শামসুন্নহার হল, ঢাবি), রাফিয়া রেহনুমা হৃদি (বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল, ঢাবি), মুমতাহীনা মাহজাবিন মোহনা (বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা হল, ঢাবি), আনিকা তাহসিনা (রোকেয়া হল, ঢাবি), উমামা ফাতেমা (সুফিয়া কামাল হল, ঢাবি), আলিফ হোসাইন, কাউসার মিয়া, আরিফ সোহেল (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়), রাসেল আহমেদ (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়), আসাদুল্লাহ আল গালিব (শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), মো: তৌহিদ আহমেদ আশিক (শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়), সাবিনা ইয়াসমিন (ইডেন মহিলা কলেজ)।
সহ সমন্বয়ক হিসেবে পদপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন- রিফাত রশিদ, হাসিব আল ইসলাম, আব্দুল্লাহ সালেহীন অয়ন, নিশিতা জামান নিহা, রেজোয়ান রিফাত, মেহেদী হাসান, মো. আবু সাঈদ, নূমান আহমাদ চৌধুরী, রিজভি আলম, সানজানা আফিফা অদিতি, ফাহিম শাহরিয়ার, গোলাম রাব্বি, কুররাতুল আন কানিজ, মিনহাজ ফাহিম, মো: মহিউদ্দিন, মেহেদী হাসান মুন্না, সরদার নাদিম সরকার শুভ, রিদুয়ান আহমেদ, নুরুল ইসলাম নাহিদ, রাইয়ান ফেরদৌস, সাব্বির উদ্দিন রিয়ন, হামজা মাহবুব, এবি যুবায়ের, তানজিলা তামিম হাপসা, বায়েজিদ হাসান, মো. শাহেদ, মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ, দিলরুবা আক্তার পলি, ঈশী সরকার, ফাতিহা শারমিন এনি, সামিয়া আক্তার, মাইশা মালিহা, সাদিয়া হাসান লিজা, তারেক আদনান, আফজালুল হক রাকিব (ঢাকা কলেজ), মো: মেহেদী হাসান (কবি নজরুল সরকারি কলেজ), মো: সুজন মিয়া (সরকারি তিতুমীর কলেজ), ইব্রাহীম নিরব (বোরহানউদ্দিন কলেজ), আতিক মুন্সি (নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি), এস এম সুইট (ইবি), খান তালাত মাহমুদ রাফি (চবি), সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি (বিএল কলেজ, খুলনা)
গত ৫ জুন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এ রায় প্রত্যাখ্যান করে তাৎক্ষণিকভাবে সে দিন বিকেলে আন্দোলন করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরের দিনও একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হয়ে ৩০জুন পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেন তারা।
এরপর গ্রীষ্মকালীন ও ঈদুল আযহার ছুটি শেষ হওয়ার পরের দিন থেকে ফের রাজপথে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় ৭ জুলাই থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন। এতে ঢাবির ৭০ এর অধিক বিভাগ ও ডিপার্টমেন্ট সংহতি জানিয়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবে না বলে ঘোষণা দেন তারা। রোববার (০৭ জুলাই) দেশব্যাপী পালন করে করে 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি। ফলে অচল হয়ে পড়ে পুরো ঢাকা, পরে চারদফা দাবিকে এক দফাকরে সোমবারও সারাদেশে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করে তারা।
শিক্ষার্থীদের বর্তমান এক দফা দাবি হলো- 'সকল গ্রেডে সকল প্রকার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে নূন্যতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে৷'