ঢাকা ১২:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ডলারের সংকটে বিশ্ব, নেতাদের চোখ শুধু গদিতে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:০৯:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪
  • / ৩৭৫ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

করোনা মহামারি থেকে শুরু। এরপর থেকে ঋণের বোঝা বাড়ছেই। আর সেই ঋণ কাঁধে নিয়ে অনেকটা গাধার মতো পথ চলছে বিশ্বের মানুষ। শুধু দরিদ্র দেশগুলোতে নয়, উন্নত দেশগুলোও খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয়। আর সেই ব্যয় মেটাতে বাড়ছে কাঁধে থাকা ঋণের বোঝা।

একটা হিসাব দিলে ঋণের বোঝার আকারটা একটু আন্দাজ করা যেতে পারে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ঠিক এই মুহূর্তে ৯১ ট্রিলিয়ন (৯১ লাখ কোটি) মার্কিন ডলারের ঋণের জালে বন্দী। এই বোঝাটা বিশ্বের মোট অর্থনীতির প্রায় সমান।

এই বোঝা যখন বিশ্ববাসীর মাথায়, ঠিক তখনই (এ বছর) নির্বাচনের মাঠ জমজমাট। বলা হচ্ছে ২০২৪ হচ্ছে নির্বাচনের বছর। আর সেসব নির্বাচনে জিততে মরিয়া ক্ষমতাসীনরা। তার চেয়ে বেশি মরিয়া বিরোধী দলগুলো। সমস্যার সমাধানে দিচ্ছেন একের পর এক প্রতিশ্রুতি। এর একটি বড় অংশই ফাঁকা বুলি ছাড়া কিছুই নয়। মূল সমস্যার দিকে তাকাচ্ছেনই না তাঁরা। আবার একগাদা রঙিন প্রতিশ্রুতি সাধারণ মানুষের সামনে হাজির করার মধ্য দিয়ে অর্থনীতির মূল সংকটকেও তাঁরা আড়াল করছেন বলা যায়।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ঋণ কমানোর চিন্তা মাথায় না নিয়ে, জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর চিন্তা না করে এসব নেতারা আছেন কেবল কর বাড়ানো নিয়ে। এমন সব প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, যাতে করে সমস্যা সমাধান না হয়ে বরং দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে আটকে যেতে পারে অর্থনীতি। আর তাতে আরও গভীর হবে অর্থনৈতিক সংকট।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, সম্প্রতি এ ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতাও দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তাতে সংস্থাটি বলছে, আমেরিকায় যে ক্রমাগত রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে, তা দ্রুত চিহ্নিত করে সমাধান করা উচিত। কারণ, বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন সরকারের সঙ্গে আছে। সংকট ঘনীভূত হলে তারা হয়তো মুখ ফিরিয়েও নিতে পারে।

এ ব্যাপারে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অ্যাসেট ম্যানেজার ভ্যানগার্ডের গ্লোবাল হেড অব রেটস রজার হালাম সিএনএনকে বলেন, ‘ক্রমেই রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ বাড়ছে। এ ছাড়া ঋণের বোঝা আরও ভারী হচ্ছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা এখন দ্বিধায় রয়েছেন।’

শুধু আমেরিকা নয়, বিশ্বের আরও অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের একই চিত্র। ঋণের বোঝা ভারী হওয়ার কারণে উদ্বেগ বাড়ছে। ঠিক এই মুহূর্তের কথা বলতে হলে ফ্রান্সের কথা বলা যেতে পারে। ফ্রান্সের নির্বাচন ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। আর তাতে ঋণ, সরকারি প্রকল্পে বিনিয়োগ ও কিনে রাখা বন্ড নিয়ে বেশ দ্বিধায় রয়েছে বিনিয়োগকারীরা। বর্তমান সরকারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে তারা।

সরকারের পক্ষ থেকে এসব বিনিয়োগকারীকে ঋণ ও ভর্তুকি দেওয়ার মানে সাধারণ মানুষের পেটে ‘লাথি মারা’। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ঠিক এমনটাই মনে করছেন সিএনএনের প্রতিবেদক হান্না জিয়াদি। তাঁর মতে, এতে বড় ক্ষতি হবে অর্থনীতিরই।

এ নিয়ে হার্বার্ড কেনেডি স্কুলের অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ কারেন ডাইনান বলেন, ‘অনেক রাজনীতিবিদই এখন সহজ পথ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁরা জটিল সমস্যার সমাধান নিয়ে কথা বলতে রাজি নন। যদিও এই অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে কঠিন পদক্ষেপই নিতে হবে।’

আমেরিকার দিকে আরেকবার তাকানো যাক। চলতি অর্থবছরে সুদ দিতেই মোট ৮৯২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে আমেরিকা। এই খরচ কিন্তু প্রতিরক্ষা, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য খাতের চেয়ে বেশি। আগামী বছর সুদ পরিশোধের জন্য ব্যয় ছাড়াতে পারে ১ হাজার কোটি ডলার। আর এই সংখ্যাটা মার্কিন অর্থনীতির প্রায় সমান।

মার্কিন কংগ্রশনাল বাজেট অফিস (সিবিও) বলছে, সরকারের যে ঋণ রয়েছে, তা জিডিপির ১২২ শতাংশ হতে বেশিদিন লাগবে না। আগামী ২০৫৪ সালের দিকে সেটি ছাড়াতে পারে ১৬৬ শতাংশ।

এই যখন অবস্থা, তখন প্রধান দুই নেতা জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প পড়ে আছেন কাদা ছোড়াছুড়ি নিয়ে। তাঁদের কেউই অর্থনীতির এই সংকট সমাধান নিয়ে একটা শব্দও বলেননি। পুরো বিতর্ক সাজিয়েছেন মিথ্যার পসরা দিয়ে। এই সংকটের জন্য একজন আরেকজনকে দোষ দিচ্ছেন। আসলে দোষ তো দুজনেরই।

যুক্তরাজ্যে সম্প্রতি সাধারণ নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে ঋষি সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টির। ক্ষমতায় এসেছে লেবার পার্টি। নির্বাচনের আগে প্রচারের সময় এই ঋণ ও করের ব্যাপারটি নিয়ে কোনো দলই আওয়াজ তোলেনি। শুধু অভিবাসন নীতি নিয়ে কথা বলেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, আগেরবার নির্বাচনী ইশতেহারে করের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা ছাড়িয়ে গেছে কবেই। সরকারি ঋণও বাড়ছে। এসব খাত নিয়ে কথা বললে সহজ সমাধান দিতে পারবে না কোনো পক্ষ। এ কারণে চুপ সবাই। বিরোধী লেবার পার্টি জিতেছে মূলত সরকার এসব ব্যাপার সামাল দিতে না পারার কারণে।

এ নিয়ে আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন সরকার আসায় যুক্তরাজ্যের অবস্থা কিছুটা হলেও ভালো হতে পারে। এর প্রধান কারণ, আগের সরকারের পরিকল্পনা আর হয়তো থাকবে না। নতুন পরিকল্পনায় এগিয়ে গেলে ভালো কিছু হতেই পারে। তবে, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। বাজার বুঝে সিদ্ধান্ত নিলেই কেবল সংকট আর বাড়বে না।

গত জুনে প্রকাশিত এক প্রতিবদনে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম জানায়, এ বছর স্থিতিশীল হতে পারে বিশ্ব অর্থনীতি। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনের বরাতে তারা এমন দাবিই করে। এর মধ্য দিয়ে গত তিন বছরের মধ্যে এই প্রথম অর্থনীতির এই ইতিবাচক দিক আসছে।

তবে আসল চিত্র বেশ ঘোলাটে। নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচন সামনে রেখে সরকার বিনিয়োগকারীদের ঠিকমতো পাবে কিনা, তা বলা যাচ্ছে না। এ ছাড়া ঋণের বোঝা তো আছেই। তার সঙ্গে সুদ বাদ রাখলে তো আর চলছে না। আসল কথা হচ্ছে এসব সংকট কাটানো বেশ কঠিন হবে। এ জন্য সরকারকে কঠোর হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তাতে খড়্গ নেমে আসতে পারে ব্যবসায়ীদের ওপর। তা কী আর তারা করতে দেবে? সেই বোঝা সাধারণ মানুষের ওপর চাপানোর চেষ্টা তো চলছেই। তাতে অর্থনীতি আর কতটা গভীর সংকটে যায়, তা‑ই দেখার বিষয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ডলারের সংকটে বিশ্ব, নেতাদের চোখ শুধু গদিতে

আপডেট সময় : ০২:০৯:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

করোনা মহামারি থেকে শুরু। এরপর থেকে ঋণের বোঝা বাড়ছেই। আর সেই ঋণ কাঁধে নিয়ে অনেকটা গাধার মতো পথ চলছে বিশ্বের মানুষ। শুধু দরিদ্র দেশগুলোতে নয়, উন্নত দেশগুলোও খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয়। আর সেই ব্যয় মেটাতে বাড়ছে কাঁধে থাকা ঋণের বোঝা।

একটা হিসাব দিলে ঋণের বোঝার আকারটা একটু আন্দাজ করা যেতে পারে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ঠিক এই মুহূর্তে ৯১ ট্রিলিয়ন (৯১ লাখ কোটি) মার্কিন ডলারের ঋণের জালে বন্দী। এই বোঝাটা বিশ্বের মোট অর্থনীতির প্রায় সমান।

এই বোঝা যখন বিশ্ববাসীর মাথায়, ঠিক তখনই (এ বছর) নির্বাচনের মাঠ জমজমাট। বলা হচ্ছে ২০২৪ হচ্ছে নির্বাচনের বছর। আর সেসব নির্বাচনে জিততে মরিয়া ক্ষমতাসীনরা। তার চেয়ে বেশি মরিয়া বিরোধী দলগুলো। সমস্যার সমাধানে দিচ্ছেন একের পর এক প্রতিশ্রুতি। এর একটি বড় অংশই ফাঁকা বুলি ছাড়া কিছুই নয়। মূল সমস্যার দিকে তাকাচ্ছেনই না তাঁরা। আবার একগাদা রঙিন প্রতিশ্রুতি সাধারণ মানুষের সামনে হাজির করার মধ্য দিয়ে অর্থনীতির মূল সংকটকেও তাঁরা আড়াল করছেন বলা যায়।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ঋণ কমানোর চিন্তা মাথায় না নিয়ে, জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর চিন্তা না করে এসব নেতারা আছেন কেবল কর বাড়ানো নিয়ে। এমন সব প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, যাতে করে সমস্যা সমাধান না হয়ে বরং দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে আটকে যেতে পারে অর্থনীতি। আর তাতে আরও গভীর হবে অর্থনৈতিক সংকট।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, সম্প্রতি এ ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতাও দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তাতে সংস্থাটি বলছে, আমেরিকায় যে ক্রমাগত রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে, তা দ্রুত চিহ্নিত করে সমাধান করা উচিত। কারণ, বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন সরকারের সঙ্গে আছে। সংকট ঘনীভূত হলে তারা হয়তো মুখ ফিরিয়েও নিতে পারে।

এ ব্যাপারে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অ্যাসেট ম্যানেজার ভ্যানগার্ডের গ্লোবাল হেড অব রেটস রজার হালাম সিএনএনকে বলেন, ‘ক্রমেই রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ বাড়ছে। এ ছাড়া ঋণের বোঝা আরও ভারী হচ্ছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা এখন দ্বিধায় রয়েছেন।’

শুধু আমেরিকা নয়, বিশ্বের আরও অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের একই চিত্র। ঋণের বোঝা ভারী হওয়ার কারণে উদ্বেগ বাড়ছে। ঠিক এই মুহূর্তের কথা বলতে হলে ফ্রান্সের কথা বলা যেতে পারে। ফ্রান্সের নির্বাচন ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। আর তাতে ঋণ, সরকারি প্রকল্পে বিনিয়োগ ও কিনে রাখা বন্ড নিয়ে বেশ দ্বিধায় রয়েছে বিনিয়োগকারীরা। বর্তমান সরকারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে তারা।

সরকারের পক্ষ থেকে এসব বিনিয়োগকারীকে ঋণ ও ভর্তুকি দেওয়ার মানে সাধারণ মানুষের পেটে ‘লাথি মারা’। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ঠিক এমনটাই মনে করছেন সিএনএনের প্রতিবেদক হান্না জিয়াদি। তাঁর মতে, এতে বড় ক্ষতি হবে অর্থনীতিরই।

এ নিয়ে হার্বার্ড কেনেডি স্কুলের অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ কারেন ডাইনান বলেন, ‘অনেক রাজনীতিবিদই এখন সহজ পথ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁরা জটিল সমস্যার সমাধান নিয়ে কথা বলতে রাজি নন। যদিও এই অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে কঠিন পদক্ষেপই নিতে হবে।’

আমেরিকার দিকে আরেকবার তাকানো যাক। চলতি অর্থবছরে সুদ দিতেই মোট ৮৯২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে আমেরিকা। এই খরচ কিন্তু প্রতিরক্ষা, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য খাতের চেয়ে বেশি। আগামী বছর সুদ পরিশোধের জন্য ব্যয় ছাড়াতে পারে ১ হাজার কোটি ডলার। আর এই সংখ্যাটা মার্কিন অর্থনীতির প্রায় সমান।

মার্কিন কংগ্রশনাল বাজেট অফিস (সিবিও) বলছে, সরকারের যে ঋণ রয়েছে, তা জিডিপির ১২২ শতাংশ হতে বেশিদিন লাগবে না। আগামী ২০৫৪ সালের দিকে সেটি ছাড়াতে পারে ১৬৬ শতাংশ।

এই যখন অবস্থা, তখন প্রধান দুই নেতা জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প পড়ে আছেন কাদা ছোড়াছুড়ি নিয়ে। তাঁদের কেউই অর্থনীতির এই সংকট সমাধান নিয়ে একটা শব্দও বলেননি। পুরো বিতর্ক সাজিয়েছেন মিথ্যার পসরা দিয়ে। এই সংকটের জন্য একজন আরেকজনকে দোষ দিচ্ছেন। আসলে দোষ তো দুজনেরই।

যুক্তরাজ্যে সম্প্রতি সাধারণ নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে ঋষি সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টির। ক্ষমতায় এসেছে লেবার পার্টি। নির্বাচনের আগে প্রচারের সময় এই ঋণ ও করের ব্যাপারটি নিয়ে কোনো দলই আওয়াজ তোলেনি। শুধু অভিবাসন নীতি নিয়ে কথা বলেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, আগেরবার নির্বাচনী ইশতেহারে করের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা ছাড়িয়ে গেছে কবেই। সরকারি ঋণও বাড়ছে। এসব খাত নিয়ে কথা বললে সহজ সমাধান দিতে পারবে না কোনো পক্ষ। এ কারণে চুপ সবাই। বিরোধী লেবার পার্টি জিতেছে মূলত সরকার এসব ব্যাপার সামাল দিতে না পারার কারণে।

এ নিয়ে আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন সরকার আসায় যুক্তরাজ্যের অবস্থা কিছুটা হলেও ভালো হতে পারে। এর প্রধান কারণ, আগের সরকারের পরিকল্পনা আর হয়তো থাকবে না। নতুন পরিকল্পনায় এগিয়ে গেলে ভালো কিছু হতেই পারে। তবে, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। বাজার বুঝে সিদ্ধান্ত নিলেই কেবল সংকট আর বাড়বে না।

গত জুনে প্রকাশিত এক প্রতিবদনে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম জানায়, এ বছর স্থিতিশীল হতে পারে বিশ্ব অর্থনীতি। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনের বরাতে তারা এমন দাবিই করে। এর মধ্য দিয়ে গত তিন বছরের মধ্যে এই প্রথম অর্থনীতির এই ইতিবাচক দিক আসছে।

তবে আসল চিত্র বেশ ঘোলাটে। নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচন সামনে রেখে সরকার বিনিয়োগকারীদের ঠিকমতো পাবে কিনা, তা বলা যাচ্ছে না। এ ছাড়া ঋণের বোঝা তো আছেই। তার সঙ্গে সুদ বাদ রাখলে তো আর চলছে না। আসল কথা হচ্ছে এসব সংকট কাটানো বেশ কঠিন হবে। এ জন্য সরকারকে কঠোর হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তাতে খড়্গ নেমে আসতে পারে ব্যবসায়ীদের ওপর। তা কী আর তারা করতে দেবে? সেই বোঝা সাধারণ মানুষের ওপর চাপানোর চেষ্টা তো চলছেই। তাতে অর্থনীতি আর কতটা গভীর সংকটে যায়, তা‑ই দেখার বিষয়।