ঢাকা ০২:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বাংলাদেশের সঙ্গে ফারাক্কা চুক্তি নিয়ে মমতা ক্ষুব্ধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:২৫:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪
  • / ৩৬৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশে সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে ফারাক্কা চুক্তির ওপর দায় চাপিয়ে আবারও কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে একটি উচ্চ-পর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠকের পর নবান্নে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এ নিয়ে কথা বলেন বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘উত্তরের জেলাগুলো বন্যার মুখোমুখি হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ফারাক্কা চুক্তি নবায়ন নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কেন্দ্র পরামর্শ করেনি।’

গত মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে ১০টি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সইয়ের পাশাপাশি ফারাক্কা চুক্তি নবায়ন করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। তখনই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেন মমতা। মমতার তৃণমূলের পক্ষে তখন বলা হয়, ফারাক্কা-গঙ্গা চুক্তিতে রাজ্য সরকারও পক্ষ। কিন্তু চুক্তি নবায়নের বিষয়ে রাজ্য সরকারকে কিছুই জানানো হয়নি। গঙ্গার ড্রেজিংয়ের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে, যা বাংলায় বন্যা ও ভাঙনের প্রাথমিক কারণ।

বৈঠকের পর সোমবার মমতা বলেন, ‘গঙ্গার ভাঙনের সমস্যা কেন্দ্রের দেখা উচিত ছিল। তবে গত ১০–১২ বছর ধরে কিছুই করা হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার ফারাক্কায় ড্রেজিংয়ের কাজ করেনি। বাংলাদেশের সঙ্গে যখন (পানি–বণ্টন) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তখন বলা হয়েছিল গঙ্গা ড্রেজিংয়ের কাজ করা হবে যাতে আমাদের কোনো সমস্যা না হয়, কিন্তু গঙ্গা নদীর তীরের ভাঙনে বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ভাঙন রোধে ৭০০ কোটি রুপির প্যাকেজও ঘোষণা করা হয়েছে। আমি এটা জানি, কারণ আমি তখন এমপি ছিলাম। অথচ বিশেষ প্যাকেজের টাকা আজ পর্যন্ত রাজ্যকে দেওয়া হয়নি।’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগে, তারা (কেন্দ্র) বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করার আগে রাজ্য সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করত। কিন্তু এবার আমাকে না জানিয়ে ফারাক্কা চুক্তি নবায়ন করা হচ্ছে।’

তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কেন্দ্রের চলমান আলোচনার প্রসঙ্গও আসে মমতার বক্তব্যে। এ ইস্যুতে তার বিরোধিতার কারণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা কি এমন কোনো পানি দিতে চায়? সেই চুক্তি স্বাক্ষর হলে উত্তরবঙ্গে কেউ পানীয় জল পাবে না।’

মমতা বলেন, ‘সিকিম যখন ১৪টি প্রকল্প (তিস্তার ওপর) নির্মাণ করেছিল, তখন কেন্দ্রীয় সরকার একটি কথাও বলেনি। তাদের কোনো পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া নেই এবং আমরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। উত্তরবঙ্গের নদী ভাঙন রোধে আমরা এখন কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছি। আমরা আত্রাই নদীর ভাঙন বন্ধ করেছি।’

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৯৯৬ সালে হওয়া গঙ্গার পানি চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালে। এরই মধ্যে ফারাক্কা চুক্তির নবায়নকে বাংলা ‘বিক্রি করার পরিকল্পনা’ বলেও মন্তব্য করেছে মমতার দল।

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশের সঙ্গে ফারাক্কা চুক্তি নিয়ে মমতা ক্ষুব্ধ

আপডেট সময় : ১২:২৫:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশে সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে ফারাক্কা চুক্তির ওপর দায় চাপিয়ে আবারও কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে একটি উচ্চ-পর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠকের পর নবান্নে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এ নিয়ে কথা বলেন বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘উত্তরের জেলাগুলো বন্যার মুখোমুখি হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ফারাক্কা চুক্তি নবায়ন নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কেন্দ্র পরামর্শ করেনি।’

গত মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে ১০টি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সইয়ের পাশাপাশি ফারাক্কা চুক্তি নবায়ন করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। তখনই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেন মমতা। মমতার তৃণমূলের পক্ষে তখন বলা হয়, ফারাক্কা-গঙ্গা চুক্তিতে রাজ্য সরকারও পক্ষ। কিন্তু চুক্তি নবায়নের বিষয়ে রাজ্য সরকারকে কিছুই জানানো হয়নি। গঙ্গার ড্রেজিংয়ের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে, যা বাংলায় বন্যা ও ভাঙনের প্রাথমিক কারণ।

বৈঠকের পর সোমবার মমতা বলেন, ‘গঙ্গার ভাঙনের সমস্যা কেন্দ্রের দেখা উচিত ছিল। তবে গত ১০–১২ বছর ধরে কিছুই করা হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার ফারাক্কায় ড্রেজিংয়ের কাজ করেনি। বাংলাদেশের সঙ্গে যখন (পানি–বণ্টন) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তখন বলা হয়েছিল গঙ্গা ড্রেজিংয়ের কাজ করা হবে যাতে আমাদের কোনো সমস্যা না হয়, কিন্তু গঙ্গা নদীর তীরের ভাঙনে বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ভাঙন রোধে ৭০০ কোটি রুপির প্যাকেজও ঘোষণা করা হয়েছে। আমি এটা জানি, কারণ আমি তখন এমপি ছিলাম। অথচ বিশেষ প্যাকেজের টাকা আজ পর্যন্ত রাজ্যকে দেওয়া হয়নি।’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগে, তারা (কেন্দ্র) বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করার আগে রাজ্য সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করত। কিন্তু এবার আমাকে না জানিয়ে ফারাক্কা চুক্তি নবায়ন করা হচ্ছে।’

তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কেন্দ্রের চলমান আলোচনার প্রসঙ্গও আসে মমতার বক্তব্যে। এ ইস্যুতে তার বিরোধিতার কারণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা কি এমন কোনো পানি দিতে চায়? সেই চুক্তি স্বাক্ষর হলে উত্তরবঙ্গে কেউ পানীয় জল পাবে না।’

মমতা বলেন, ‘সিকিম যখন ১৪টি প্রকল্প (তিস্তার ওপর) নির্মাণ করেছিল, তখন কেন্দ্রীয় সরকার একটি কথাও বলেনি। তাদের কোনো পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া নেই এবং আমরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। উত্তরবঙ্গের নদী ভাঙন রোধে আমরা এখন কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছি। আমরা আত্রাই নদীর ভাঙন বন্ধ করেছি।’

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৯৯৬ সালে হওয়া গঙ্গার পানি চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালে। এরই মধ্যে ফারাক্কা চুক্তির নবায়নকে বাংলা ‘বিক্রি করার পরিকল্পনা’ বলেও মন্তব্য করেছে মমতার দল।