অর্থ সংকটে থমকে আছে ডেঙ্গু টিকা উদ্ভাবনের অগ্রগতি
- আপডেট সময় : ১১:৪০:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪
- / ৩৮১ বার পড়া হয়েছে
অর্থ সংকটে থমকে আছে ডেঙ্গু টিকা উদ্ভাবনের অগ্রগতি। আইসিডিডিআরবি’র একটি টিকা বাংলাদেশে দ্বিতীয় ধাপে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেলেও তৃতীয় ধাপে এখনও পরীক্ষা চালানো যায়নি। এ অবস্থায় নানা জটিলতায় শিগগিরই মিলছে না প্রাণসংহারী ডেঙ্গুর টিকা।
টানা কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গু আতঙ্ক ঝেঁকে বসেছে। গত বছর জুলাইয়ে মহামারি পর্যায়ে পৌঁছায় ডেঙ্গু। এ বছরও বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। হাসপাতালগুলো থেকে পাওয়া তথ্য মতে শহরের চেয়ে বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে মফস্বলে। এমন অবস্থায় বাঁচার উপায় কী? কেবল সচেতনতায় তো সমাধান মিলছে না।
২০২৩ সালে ডেঙ্গু টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কথা জানায় সরকার। এক বছর পার হলেও এখনও টিকার অগ্রগতি জানা যায়নি। ঐ বছর ডেঙ্গু প্রতিরোধী টিকা ‘টিভি-০০৫’তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ, ইউনিভার্সিটি অব ভারমন্ট ও জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সঙ্গে কাজ করছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র আইসিডিডিআরবি। গত বছর এই টিকার দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয় বাংলাদেশে। প্রয়োগে এ টিকার ইতিবাচক ফলাফলও মেলে।
আইসিডিডিআরবি জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী রাশিদুল হক বলেন, ‘ডেঙ্গু হয় চারটা জিনিসের ওপরে। আমরা যে ভ্যাক্সিন করছি তার ভেতরে চারটা কম্পোনেন্টই আছে। বাংলাদেশ পপুলেশনে এটার অ্যান্টিবডির রেসপন্স ভালো হয়। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে একটু বেশি ভালো হয়। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে একটু কম রেসপন্স পাওয়া গেছে।’
টিভি-০০৫ ডেঙ্গুর টিকা পরীক্ষায় নেতৃত্বদানকারী এ বিজ্ঞানী জানালেন, এ টিকা পেতে দীর্ঘ সময় লাগবে। তবে তৃতীয় ধাপেও বাংলাদেশে পরীক্ষা সুযোগ পেলে স্বল্পমূল্যে টিকা প্রাপ্তি সহজ হতো।
রাশিদুল হক বলেন, ‘এটা সিঙ্গেল ডোজ ভ্যাক্সিন। এর সাথে সম্পৃক্ত দেশগুলোর কোম্পানিতে ওরা লাইসেন্স দিচ্ছে। এটা প্রোডাকশনে গেলে একটা অ্যাফোর্টেবল প্রাইজে পাওয়া যাবে। এতে করে আমাদের দেশে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষরাও এটা ব্যবহার করতে পারতো।’
এদিকে, জাপানে উৎপাদিত ডেঙ্গুর টিকা ‘কিউডেঙ্গা’ দেশে এনে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কথা থাকলেও অগ্রগতি নেই। এতে দেশে সহসা মিলছে না এ ডেঙ্গুর টিকাটিও।
এ অবস্থায় শুধু টিকার উপর ভরসা না করে এডিস নিয়ন্ত্রণ ও নিধনে প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানসম্মত উদ্যেগের কথা বললেন আইডিডিডিআরবি গবেষক ড. শফিউল আলম।
তিনি বলেন, ‘মশাকে যদি আমরা এভাবে মডিফাই করতে পারি যে মশা আর জীবাণু বহন করবে না। হয়তো দেখা গেলো এডিস মশা থাকবে কিন্তু এটি ডেঙ্গু বহন করবে না। এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়া আছে যেটা মশার শরীরে ব্যবহার করলে মশাতে আর কোনো রোগের ভাইরাস থাকবে না।’
চলতি বছর প্রথম ছয় মাসে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৬৫ শতাংশ মানুষ। অথচ গত বছর এ সময়ে ঢাকার বাইরে রোগী ছিল ২৩.৫০ শতাংশ। ২০২২ সালে যে সংখ্যা ছিল ১২.৪০ শতাংশ। অর্থাৎ ঢাকার বাইরে আক্রান্তের হার বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। এমন বাস্তবতায় একটি কার্যকর ডেঙ্গু টিকা এবং জনসচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করছেন বিশেষজ্ঞরা।