ঢাকা ০৬:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কক্সবাজারে পাহাড় ধসের পৃথক ঘটনায় নিহত ৪

কক্সবাজার প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০১:০৮:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪
  • / ৩৮৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজার শহর ও আশপাশের এলাকায় পাহাড় ধসের পৃথক ঘটনায় দুই শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) রাতে শহরের সৈকত পাড়ায় পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে এক শিশু নিহত এবং তিনজন আহত হন।

এর আগে পাহাড় ধসে বৃহস্পতিবার ভোরে কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিকদার বাজার এলাকায় এক শিশু ও এবিসি ঘোনা এলাকায় এক নারী এবং বিকেলে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকায় আরেক নারী নিহত হন।

নিহতরা হলেন, শহরের এবিসি ঘোনা এলাকার মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা আক্তার (৩০), সিকদার বাজার এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হাসান (৫), সৈকত পাড়ার মো. সেলিমের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে মীম (১৩) এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকার বজল আহমদের স্ত্রী লায়লা বেগম (৩৫)।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. রকিবুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়দের বরাতে ওসি জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ভারী বর্ষণের সময় কক্সবাজার শহরের সৈকত পাড়ায় পাহাড় ধসে স্থানীয় বাসিন্দা সেলিমের ঘরের ওপর মাটি চাপা পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় আশেপাশের তিনজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থল থেকে পুরো মাটি সরিয়ে মীম নামের এক শিশুকে মৃত উদ্ধার করে।

রকিবুজ্জামান বলেন, বুধবার মধ্যরাত থেকে কক্সবাজার শহরে টানা মাঝারি ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে সিকদার বাজার এলাকায় বসবাসকারী সাইফুল ইসলামের বাড়ির ওপর আকস্মিক পাহাড় ধসে পড়ে। এতে মাটির দেওয়াল ভেঙে সাইফুলের ঘুমন্ত শিশু চাপা পড়ে। পরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে মাটি সরিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে ভোরে শহরের এবিসি ঘোনা এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসে জমিলা নামে এক নারীর পরিবারের বরাত দিয়ে রকিবুজ্জামান বলেন, ভোরে জমিলা আক্তার রান্না ঘরের পাশে ঘুমিয়ে ছিলেন। তার স্বামী আরেক কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। আকস্মিক পাহাড় ধসে পড়লে জমিলা মাটি চাপা পড়ে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্য চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় লায়লা বেগম নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ওসি।

নিহত লায়লা বেগমের স্বজনদের বরাতে তিনি বলেন, দুপু্রে খাবার খাওয়ার সময় লায়লা বেগম ছেলে জোনায়েদকে কোলে নিয়ে পাহাড়ের মাটি ভাঙছে কি না, তা দেখতে বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছিলেন। এ সময় আকস্মিক পাহাড় ধসে বাড়ির ওপর পড়ে। এতে স্বামী ও অপর দুই মেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে পারলেও লায়লা বেগম ও এক শিশু সন্তান মাটির নিচে চাপা পড়ে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয়রা শিশুটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করতে পারলেও তার মা ঘটনাস্থলেই মারা যায়

এ ছাড়া কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি এলাকায় পাহাড় ধসে সকাল থেকে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। কক্সবাজার শহর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে আসতে প্রচারণা চালাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

কক্সবাজারে পাহাড় ধসের পৃথক ঘটনায় নিহত ৪

আপডেট সময় : ০১:০৮:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪

টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজার শহর ও আশপাশের এলাকায় পাহাড় ধসের পৃথক ঘটনায় দুই শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) রাতে শহরের সৈকত পাড়ায় পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে এক শিশু নিহত এবং তিনজন আহত হন।

এর আগে পাহাড় ধসে বৃহস্পতিবার ভোরে কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিকদার বাজার এলাকায় এক শিশু ও এবিসি ঘোনা এলাকায় এক নারী এবং বিকেলে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকায় আরেক নারী নিহত হন।

নিহতরা হলেন, শহরের এবিসি ঘোনা এলাকার মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা আক্তার (৩০), সিকদার বাজার এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হাসান (৫), সৈকত পাড়ার মো. সেলিমের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে মীম (১৩) এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকার বজল আহমদের স্ত্রী লায়লা বেগম (৩৫)।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. রকিবুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়দের বরাতে ওসি জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ভারী বর্ষণের সময় কক্সবাজার শহরের সৈকত পাড়ায় পাহাড় ধসে স্থানীয় বাসিন্দা সেলিমের ঘরের ওপর মাটি চাপা পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় আশেপাশের তিনজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থল থেকে পুরো মাটি সরিয়ে মীম নামের এক শিশুকে মৃত উদ্ধার করে।

রকিবুজ্জামান বলেন, বুধবার মধ্যরাত থেকে কক্সবাজার শহরে টানা মাঝারি ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে সিকদার বাজার এলাকায় বসবাসকারী সাইফুল ইসলামের বাড়ির ওপর আকস্মিক পাহাড় ধসে পড়ে। এতে মাটির দেওয়াল ভেঙে সাইফুলের ঘুমন্ত শিশু চাপা পড়ে। পরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে মাটি সরিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে ভোরে শহরের এবিসি ঘোনা এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসে জমিলা নামে এক নারীর পরিবারের বরাত দিয়ে রকিবুজ্জামান বলেন, ভোরে জমিলা আক্তার রান্না ঘরের পাশে ঘুমিয়ে ছিলেন। তার স্বামী আরেক কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। আকস্মিক পাহাড় ধসে পড়লে জমিলা মাটি চাপা পড়ে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্য চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়া পাতাবুনিয়া এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় লায়লা বেগম নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ওসি।

নিহত লায়লা বেগমের স্বজনদের বরাতে তিনি বলেন, দুপু্রে খাবার খাওয়ার সময় লায়লা বেগম ছেলে জোনায়েদকে কোলে নিয়ে পাহাড়ের মাটি ভাঙছে কি না, তা দেখতে বেড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছিলেন। এ সময় আকস্মিক পাহাড় ধসে বাড়ির ওপর পড়ে। এতে স্বামী ও অপর দুই মেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে পারলেও লায়লা বেগম ও এক শিশু সন্তান মাটির নিচে চাপা পড়ে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয়রা শিশুটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করতে পারলেও তার মা ঘটনাস্থলেই মারা যায়

এ ছাড়া কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি এলাকায় পাহাড় ধসে সকাল থেকে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। কক্সবাজার শহর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে আসতে প্রচারণা চালাচ্ছে।