০৫:২০ পূর্বাহ্ন, রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফ্রান্সে সরকার গঠন নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা

শেষ সময়ে এসে চমক দেখিয়েও এককভাবে সরকার গঠনের পথে এগোতে পারছে না ফ্রান্সের বামপন্থী জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি)। দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। রাজধানী প্যারিসে আসন্ন অলিম্পিকের আসর বসতে যাওয়ার আগমুহূর্তে এমন পরিস্থিতি নতুন উদ্বেগ যোগ করেছে।

সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটাভুটির পর আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণায় বামপন্থী জোট এনএফপি সবচেয়ে বেশি আসন পায়। দ্বিতীয় হয়েছে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর মধ্যপন্থী জোট এনসেম্বল। আর তৃতীয় অবস্থানে আছে উগ্র ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র‍্যালি (আরএন)।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাদ্যমগুলো বলছে, সরকার গঠনের জন্য পরস্পরের মধ্যে চুক্তিতে যেতে অসম্মতি জানিয়েছেন বামপন্থী, ডানপন্থী ও মধ্যপন্থী জোটের নেতারা। এ অবস্থা সরকার গঠন হলে বিরোধীদের অনাস্থা ভোটের মুখে পড়তে হতে পারে। অবশ্য এরই মধ্যে বামপন্থী জোট সরকার গঠনের জন্য দাবি জানিয়েছে।

আধুনিক ফ্রান্সের ইতিহাসে পার্লামেন্টে এমন নির্বাচনের ঘটনা নজিরবিহীন। দেশের অর্থনীতির জন্যও ঝুঁকি বাড়িয়েছে নির্বাচনের এই ফল। কার্যত আইনসভা এখন বামপন্থী জোট নিউ এনএফপি, এমানুয়েল মাখোঁর মধ্যপন্থী জোট এনসেম্বল আর উগ্র ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র‍্যালিতে (আরএন) বিভক্ত।

বার্তা সংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে লিখেছে, প্যারিস অলিম্পিক শুরুর তিন সপ্তাহেরও কম সময় আগে মাখোঁ গত সোমবার তাঁর প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আতালকে তাঁর প্রতিদিনের দায়িত্ব পালন করে যেতে বলেছেনন। এরইমধ্যে পদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েছেন আতাল। এদিকে ওয়াশিংটনে চলমান ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন মাখোঁ।

অনিশ্চয়তা আর দ্বিধাবিভক্তির মধ্যেই বামপন্থী জোটের তিনটি প্রধান দল- কট্টর-বাম ফ্রান্স আনবোড, সোশ্যালিস্ট এবং গ্রিনস- প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী খুঁজতে আলোচনা শুরু করেছে। জোট একটি বিবৃতিতে মাখোঁকে অবিলম্বে নিউ পপুলার ফ্রন্ট ঘিরে সরকার গঠনের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আতালের দায়িত্বে থাকার ব্যাপারটিকে সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফলাফল মুছে ফেলার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

আগামী ২৬ জুলাই ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে শুরু হবে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ক্রীড়ার আসর গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক। এ অবস্থায় এর মধ্যে যদি সরকার গঠন নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসলে তা দেশজুড়ে বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

বামপন্থী জোটের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রতিষ্ঠানগুলোকে হাইজ্যাক করার যে কোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আমরা প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্টকে আন্তরিকভাবে সতর্ক করছি। প্রেসিডেন্ট যদি ফলাফল উপেক্ষা করতে থাকেন তাহলে তা হবে আমাদের সংবিধানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। ’

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের (ইইউ) নির্বাচনে হারের পর পার্লামেন্ট ভেঙে দেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। গত ৯ জুন আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পর সোশ্যালিস্ট (সমাজতান্ত্রিক), পরিবেশবাদী, কমিউনিস্ট ও কট্টর বামপন্থী দল ফ্রান্স আনবোয়েড পার্টি (এলএফআই) মিলে গঠন করে এনএফপি জোট।

ফ্রান্সে সরকার গঠন নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা

আপডেট : ১২:০০:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪

শেষ সময়ে এসে চমক দেখিয়েও এককভাবে সরকার গঠনের পথে এগোতে পারছে না ফ্রান্সের বামপন্থী জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি)। দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। রাজধানী প্যারিসে আসন্ন অলিম্পিকের আসর বসতে যাওয়ার আগমুহূর্তে এমন পরিস্থিতি নতুন উদ্বেগ যোগ করেছে।

সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটাভুটির পর আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণায় বামপন্থী জোট এনএফপি সবচেয়ে বেশি আসন পায়। দ্বিতীয় হয়েছে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর মধ্যপন্থী জোট এনসেম্বল। আর তৃতীয় অবস্থানে আছে উগ্র ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র‍্যালি (আরএন)।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাদ্যমগুলো বলছে, সরকার গঠনের জন্য পরস্পরের মধ্যে চুক্তিতে যেতে অসম্মতি জানিয়েছেন বামপন্থী, ডানপন্থী ও মধ্যপন্থী জোটের নেতারা। এ অবস্থা সরকার গঠন হলে বিরোধীদের অনাস্থা ভোটের মুখে পড়তে হতে পারে। অবশ্য এরই মধ্যে বামপন্থী জোট সরকার গঠনের জন্য দাবি জানিয়েছে।

আধুনিক ফ্রান্সের ইতিহাসে পার্লামেন্টে এমন নির্বাচনের ঘটনা নজিরবিহীন। দেশের অর্থনীতির জন্যও ঝুঁকি বাড়িয়েছে নির্বাচনের এই ফল। কার্যত আইনসভা এখন বামপন্থী জোট নিউ এনএফপি, এমানুয়েল মাখোঁর মধ্যপন্থী জোট এনসেম্বল আর উগ্র ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র‍্যালিতে (আরএন) বিভক্ত।

বার্তা সংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে লিখেছে, প্যারিস অলিম্পিক শুরুর তিন সপ্তাহেরও কম সময় আগে মাখোঁ গত সোমবার তাঁর প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আতালকে তাঁর প্রতিদিনের দায়িত্ব পালন করে যেতে বলেছেনন। এরইমধ্যে পদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েছেন আতাল। এদিকে ওয়াশিংটনে চলমান ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন মাখোঁ।

অনিশ্চয়তা আর দ্বিধাবিভক্তির মধ্যেই বামপন্থী জোটের তিনটি প্রধান দল- কট্টর-বাম ফ্রান্স আনবোড, সোশ্যালিস্ট এবং গ্রিনস- প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী খুঁজতে আলোচনা শুরু করেছে। জোট একটি বিবৃতিতে মাখোঁকে অবিলম্বে নিউ পপুলার ফ্রন্ট ঘিরে সরকার গঠনের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আতালের দায়িত্বে থাকার ব্যাপারটিকে সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফলাফল মুছে ফেলার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

আগামী ২৬ জুলাই ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে শুরু হবে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ক্রীড়ার আসর গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক। এ অবস্থায় এর মধ্যে যদি সরকার গঠন নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসলে তা দেশজুড়ে বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

বামপন্থী জোটের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রতিষ্ঠানগুলোকে হাইজ্যাক করার যে কোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আমরা প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্টকে আন্তরিকভাবে সতর্ক করছি। প্রেসিডেন্ট যদি ফলাফল উপেক্ষা করতে থাকেন তাহলে তা হবে আমাদের সংবিধানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। ’

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের (ইইউ) নির্বাচনে হারের পর পার্লামেন্ট ভেঙে দেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। গত ৯ জুন আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পর সোশ্যালিস্ট (সমাজতান্ত্রিক), পরিবেশবাদী, কমিউনিস্ট ও কট্টর বামপন্থী দল ফ্রান্স আনবোয়েড পার্টি (এলএফআই) মিলে গঠন করে এনএফপি জোট।