০১:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাজারে সব পণ্যেই হাকিয়েছে সেঞ্চুরি

মৌসুম শেষ, বৃষ্টি ও কোটাবিরোধী আন্দোলন, এমন বেশকিছু অজুহাতে রাজধানীতে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বাজারে করলা-বরবটি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। আর বেগুন, কচুর মুখি ও কাঁকরোলের কেজি সেঞ্চুরিতে গিয়ে ঠেকেছে। সবমিলিয়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বৃষ্টির কারণে আবহাওয়া ঠান্ডা থাকলেও সবজির বাজার আজ বেশ গরম।

বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজিই বিক্রি হচ্ছে উচ্চমূল্যে। টমেটো ২০০ টাকা কেজি এবং পেঁয়াজের দাম ১২০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। উচ্চমূল্যের বাজারে নাকাল অবস্থা সাধারণ মানুষের। প্রতিনিয়তই বাজারে এসে হিমশিম খেতে হয় এসব মানুষের।

সবজির বাজারে দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা দাবি করছেন, বন্যা ও বৃষ্টির কারণে সবজির উৎপাদন কমে গেছে, তাই দাম বাড়াতে হচ্ছে।

শুক্রবার (১২ জুলাই) রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, গুলশান, মালিবাগ, মেরাদিয়া হাট বাজার, গোড়ান বাজার, খিলগাঁও রেলগেট কাঁচাবাজারসহ বেশকিছু বাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব ধরনের সবজিই বিক্রি হচ্ছে উচ্চমূল্যে।

আজকের বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো। সপ্তাহের ব্যবধানে টমেটো কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০- ২০০ টাকায়। মানভেদে প্রতিকেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৫০- ১৭০ টাকায়, শসা ৮০-১২০ টাকায়, কাঁচা মরিচ ২৬০ টাকা, ধনেপাতা ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে হঠাৎ করে বেগুনের দাম কেজিতে ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। আজ বাজারে লম্বা বেগুন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা কিছুদিন আগেও ছিল ৮০-১০০ টাকায়। আর সবুজ গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০- ১০০ টাকায়। কালো গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।

এ ছাড়া, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ঝিঁঙে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কচুর লতি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৭০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, কাঁকরোল প্রতি কেজি ১০০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স প্রতি কেজি ৭০ টাকা, কচুর মুখি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, প্রতিটি লাউ ৭০- ৮০ টাকায়, চাল কুমড়া ৬০ টাকা, ফুলকপি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মেরাদিয়া হাটের পাশে শাক বিক্রি করছিলেন আয়শা বেগম। শাকের দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে বাজারে শাকের দাম অনেক বেড়েছে। আজকের বাজারে প্রতি আঁটি লাউ শাক ৫০ টাকা, পুঁই শাক ৫০ টাকা, ডাটা শাক ২০ টাকা, লাল শাক ৩০ টাকা, পাট শাক ৩০ টাকা, কচু শাক ২০ টাকা, শাপলা ২০ টাকা, কলমি শাক ১৫ টাকা, ডাটা ৩০ টাকা দরে বিক্রি করছি।

প্রায় দেড় মাস ধরে কোরবানির ঈদের আগে থেকেই বাজারে পেঁয়াজের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়। বাজারে কমদামি ভারতীয় পেঁয়াজের সঙ্গে দেশি পেঁয়াজ মিশিয়ে বিক্রি করছে অনেকেই এমনটি জানিয়েছেন।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর মহাখালী বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে আবহাওয়া আজ ঠান্ডা। তবে বাজার করতে এসে দেখলাম সবজির বাজার অনেক গরম। এমন কোনো সবজি নেই যার দাম বাড়তি নয়, এত দাম হলে সাধারণ মানুষ কীভাবে কিনে খাবে?

তিনি বলেন, মাছ মাংসের কথা তো বাদই দিলাম, এত দাম দিয়ে সবজি কেনাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। করলা-বরবটির দাম ১৪০ টাকা, গাজর ২০০ টাকা, বেগুন-কাঁকরোল ১০০ টাকা। এই যদি হয় সবজির দাম, তাহলে কি সাধারণ ক্রেতা সবজি কিনে খেতে পারে?

মালিবাগ এলাকার সবজি বাজারের আরেক ক্রেতা মুতাসিম বিল্লাহ বলেন, যেখানে এক কেজি সবজি কিনতাম, আজ বাজারে বাড়তি দামের কারণে আধা কেজি করে সবজি কিনলাম। সব ধরনের সবজির দাম অতিরিক্ত বেশি। এত দাম দিয়ে সাধারণ মানুষের সবজি কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। প্রতিদিনই সবজির দাম বাড়ছে, কিন্তু এর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। কেউ কি বাজার মনিটরিং করে না? হুটহাট এভাবে দাম বেড়ে যায়, যা কমার কোনও নামই থাকে না। বাজার নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করা যাদের কাজ, তারা আসলে কী করে?

বাজারে এখনো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা দরে। যা কয়েকদিন আগেও ছিল ৫০ টাকা করে।

সবজির পাশাপাশি বাজারের সব ধরনের মাছের দাম চড়া। বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, রুই প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, কাতল প্রতি কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা ও শিং প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া, টেংরা প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, কই প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা ও বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে সব পণ্যেই হাকিয়েছে সেঞ্চুরি

আপডেট : ০১:২৭:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪

মৌসুম শেষ, বৃষ্টি ও কোটাবিরোধী আন্দোলন, এমন বেশকিছু অজুহাতে রাজধানীতে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বাজারে করলা-বরবটি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। আর বেগুন, কচুর মুখি ও কাঁকরোলের কেজি সেঞ্চুরিতে গিয়ে ঠেকেছে। সবমিলিয়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বৃষ্টির কারণে আবহাওয়া ঠান্ডা থাকলেও সবজির বাজার আজ বেশ গরম।

বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজিই বিক্রি হচ্ছে উচ্চমূল্যে। টমেটো ২০০ টাকা কেজি এবং পেঁয়াজের দাম ১২০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। উচ্চমূল্যের বাজারে নাকাল অবস্থা সাধারণ মানুষের। প্রতিনিয়তই বাজারে এসে হিমশিম খেতে হয় এসব মানুষের।

সবজির বাজারে দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা দাবি করছেন, বন্যা ও বৃষ্টির কারণে সবজির উৎপাদন কমে গেছে, তাই দাম বাড়াতে হচ্ছে।

শুক্রবার (১২ জুলাই) রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, গুলশান, মালিবাগ, মেরাদিয়া হাট বাজার, গোড়ান বাজার, খিলগাঁও রেলগেট কাঁচাবাজারসহ বেশকিছু বাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব ধরনের সবজিই বিক্রি হচ্ছে উচ্চমূল্যে।

আজকের বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো। সপ্তাহের ব্যবধানে টমেটো কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০- ২০০ টাকায়। মানভেদে প্রতিকেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৫০- ১৭০ টাকায়, শসা ৮০-১২০ টাকায়, কাঁচা মরিচ ২৬০ টাকা, ধনেপাতা ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে হঠাৎ করে বেগুনের দাম কেজিতে ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। আজ বাজারে লম্বা বেগুন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা কিছুদিন আগেও ছিল ৮০-১০০ টাকায়। আর সবুজ গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০- ১০০ টাকায়। কালো গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।

এ ছাড়া, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ঝিঁঙে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কচুর লতি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৭০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, কাঁকরোল প্রতি কেজি ১০০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স প্রতি কেজি ৭০ টাকা, কচুর মুখি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, প্রতিটি লাউ ৭০- ৮০ টাকায়, চাল কুমড়া ৬০ টাকা, ফুলকপি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মেরাদিয়া হাটের পাশে শাক বিক্রি করছিলেন আয়শা বেগম। শাকের দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে বাজারে শাকের দাম অনেক বেড়েছে। আজকের বাজারে প্রতি আঁটি লাউ শাক ৫০ টাকা, পুঁই শাক ৫০ টাকা, ডাটা শাক ২০ টাকা, লাল শাক ৩০ টাকা, পাট শাক ৩০ টাকা, কচু শাক ২০ টাকা, শাপলা ২০ টাকা, কলমি শাক ১৫ টাকা, ডাটা ৩০ টাকা দরে বিক্রি করছি।

প্রায় দেড় মাস ধরে কোরবানির ঈদের আগে থেকেই বাজারে পেঁয়াজের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়। বাজারে কমদামি ভারতীয় পেঁয়াজের সঙ্গে দেশি পেঁয়াজ মিশিয়ে বিক্রি করছে অনেকেই এমনটি জানিয়েছেন।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর মহাখালী বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে আবহাওয়া আজ ঠান্ডা। তবে বাজার করতে এসে দেখলাম সবজির বাজার অনেক গরম। এমন কোনো সবজি নেই যার দাম বাড়তি নয়, এত দাম হলে সাধারণ মানুষ কীভাবে কিনে খাবে?

তিনি বলেন, মাছ মাংসের কথা তো বাদই দিলাম, এত দাম দিয়ে সবজি কেনাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। করলা-বরবটির দাম ১৪০ টাকা, গাজর ২০০ টাকা, বেগুন-কাঁকরোল ১০০ টাকা। এই যদি হয় সবজির দাম, তাহলে কি সাধারণ ক্রেতা সবজি কিনে খেতে পারে?

মালিবাগ এলাকার সবজি বাজারের আরেক ক্রেতা মুতাসিম বিল্লাহ বলেন, যেখানে এক কেজি সবজি কিনতাম, আজ বাজারে বাড়তি দামের কারণে আধা কেজি করে সবজি কিনলাম। সব ধরনের সবজির দাম অতিরিক্ত বেশি। এত দাম দিয়ে সাধারণ মানুষের সবজি কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। প্রতিদিনই সবজির দাম বাড়ছে, কিন্তু এর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। কেউ কি বাজার মনিটরিং করে না? হুটহাট এভাবে দাম বেড়ে যায়, যা কমার কোনও নামই থাকে না। বাজার নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করা যাদের কাজ, তারা আসলে কী করে?

বাজারে এখনো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা দরে। যা কয়েকদিন আগেও ছিল ৫০ টাকা করে।

সবজির পাশাপাশি বাজারের সব ধরনের মাছের দাম চড়া। বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, রুই প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, কাতল প্রতি কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা ও শিং প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া, টেংরা প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, কই প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা ও বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।