কোটা’র বিষয়ে সমাধান আদালতে : প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ১০:১৮:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪
- / ৩৭৪ বার পড়া হয়েছে
কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চালালে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বিকালে রাজধানীর গণভবনে তাঁর সাম্প্রতিক চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোটার আওতায় যোগ্য কাউকে না পেলে সাধারণ তালিকা থেকে নিয়োগ দিয়েছি। তারপরও কথা হচ্ছে। গত কয়েক বছরে কোটা না থাকায় সরকারি চাকরিতে নারীদের নিয়োগ এখন নেই বললেই চলে। নারী কোটা না চাওয়া মেয়েরা কি চাকরি পেয়েছে?’
শেখ হাসিনা প্রশ্ন রাখেন, সব এলাকা সমান উন্নত নয়। সেসব এলাকার জন্য আলাদা কোটা তো যৌক্তিক একটা ব্যাপার। ২৩টা জেলায় গত কয়েক বছরে এক জনও পুলিশে চাকরি পায়নি। এটা কি উচিত হচ্ছে?’
তিনি বলেন, ‘আদালত রায় দিলে আমাদের কি কিছু করার আছে? আন্দোলনকারিরা আইন-আদালত, সংবিধান কিছুই চিনে না। রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কেও তাদের কোন ধারণাই নেই। আদালত তাদের সুযোগ দেয়ার পরেও রাজপথেই সমাধান চায়।
আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কি আমার দাঁড়ানোর কোন সুযোগ আছে? এই বাস্তবতা তাদের মানতে হবে। না মানলে আন্দোলন করতে চাইলে করুক। কিন্তু ধ্বংসাত্মক কিছু করা যাবে না। পুলিশের ওপর হামলা ভাঙচুর হলে আইন নিজের গতিতে চলবে। ‘
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে বাণিজ্যিক ঋণ প্রদানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে চীন। অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ আরও বাড়াবে দেশটি।
যারা চীন সফর নিয়ে সমালোচনা করছে তাদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, তারা যেনে বুঝে করছে নাকি আমাকে হেয় করার জন্য করছে সেটাই প্রশ্ন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশে ৩টি বিশেষ পর্যটন অঞ্চল প্রতিষ্ঠা ও সেখানে বিনিয়োগে চীনা ব্যবসায়ীরা আগ্রহী।
লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপাক্ষিক সফরে আমি গত ৮ থেকে ১০ জুলাই চীন সফর করি। ৮ জুলাই বেইজিং পৌঁছালে বিমানবন্দরে আমাকে লাল গালিচা সংবর্ধনার মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। ৯ জুলাই সকালে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। আমি এআইআইবিকে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ উপযোগী খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানাই। এরপর আমি দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না- শীর্ষক একটি ব্যবসায়িক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করি। সেখানে বাংলাদেশ ও চীনের ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্মেলনে আমি চীনা ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বিশ্বের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাই। এ সময় অবকাঠামো, আইসিটি, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ জ্বালানি খাত, জলবায়ু-সহনশীল স্মার্ট ফার্মিং, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সবুজ প্রযুক্তি ও উন্নয়ন খাতে বৃহত্তর বিনিয়োগের আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, চীনে বাংলাদেশ দূতাবাস, বিডা, বিএসইসি এবং চায়না ওয়ার্ল্ড সামিট উইং আয়োজিত এ সম্মেলনে চীনের ভাইস মিনিস্টার অব কমার্স লি ফেই, চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওয়াং টং ঝু, এইচএসবিসি চায়নার প্রেসিডেন্ট ও সিইও মার্ক ওয়াং, হুয়াওয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইমন লিন বক্তব্য দেন এবং তাদের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন। এই সম্মেলনে বাংলাদেশের ১০টি কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে চীনের বিভিন্ন কোম্পানির ১৬টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে তিনটি বিশেষ পর্যটন অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ও সেখানে চীন রিয়েল এস্টেট এবং হসপিটালিটি খাতে বিনিয়োগের সুযোগের কথা উল্লেখ করলে চীনের ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দেখান। একই সঙ্গে এআইআইবিকে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ উপযোগী খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।