ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের ছাত্রলীগের নেত্রীদের হল থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একে একে নেত্রীদের বের করে দেয়ার সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ছাত্রলীগের রোকেয়া হল শাখার সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ১ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকা বিনতে হোসাইনকে শিক্ষার্থীরা বের করে দিচ্ছেন। এ সময় তার সঙ্গে অন্তত ১০ জনকে বের করে দিতে দেখা যায়।
হলের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই ১০ ছাত্রলীগ নেত্রীর মধ্যে আছেন হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইন, ছাত্রলীগ নেত্রী বর্ণালী ঘোষ বর্ণ, সামিহা মাহবুব, সাজিয়া রহমান সিলভী, বিপর্ণা রায় ও সাইফুন্নেসা ইলমি প্রমুখ। আতিকা ছাড়া বাকি সবাই আসন্ন হল শাখা ছাত্রলীগে শীর্ষ পদপ্রত্যাশী বলেও জানা গেছে।
রোকেয়া হলের এক নিরাপত্তা প্রহরী গণমাধ্যমকে জানান, ১০ জন ছাত্রলীগ নেত্রীকে বের করে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। পরে আবাসিক শিক্ষকেরা এসে তাদের নিরাপদে নিয়ে গেছেন।
এদিকে, সারাদেশে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল’ করার ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার পুলিশ ও ছাত্রলীগের যৌথ হামলা ও গুলিবর্ষণে শহিদ ভাইদের জন্য আগামীকাল বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর ২টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল’ অনুষ্ঠিত হবে। আপনারা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জেলায় জেলায় গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল পালন করুন। ঢাকায় অবস্থানরত সকলে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সময়মতো চলে আসুন।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ভিসি চত্বর থেকে নতুন কোনো কর্মসূচি ঘোষণা না করে চলে যান কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী হাসনাত আব্দুল্লাহ। ওই সময় তিনি বলেন, আজকের মতো এখানে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করছি। আমরা আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেবো। সেটি পরে আপনাদের জানিয়ে দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দিনভর সারাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষে ৬ জন নিহত হন। এরমধ্যে রাজধানীতে দুজন, চট্টগ্রামে তিনজন ও রংপুরে একজন নিহত হয়েছেন।