১০:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার বিচার দাবি ২২ পেশাজীবী সংগঠনের

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : ০৭:২৪:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪
  • ২৭ দেখেছেন

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদসহ ২২টি পেশাজীবী সংগঠন। আজ বুধবার (১৭ জুলাই) এক যৌথ বিবৃতিতে পেশাজীবী নেতারা চলমান ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হত্যা, তাদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি, কোটা বাতিলের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান।

এক বিবৃতিতে পেশাজীবী নেতারা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের দাবিকে অত্যন্ত যৌক্তিক বলে মনে করি। আমরা মনে করি, ‘কোটা কখনো, মেধার বিকল্প হতে পারে না’। এ কোটার কারণে প্রতিভাবান অনেক চাকরিপ্রার্থী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বঞ্চিত হচ্ছেন।

কোটা ব্যবস্থার বিলোপ হলে, সকল প্রার্থীর মধ্যে যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। এতে করে মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থীরা তাদের প্রকৃত প্রতিভার স্বীকৃতি পাবেন এবং যোগ্য প্রার্থীদের মাধ্যমে সরকারি খাতে দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বৃদ্ধি পাবে।

তাঁরা বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক হওয়া সত্ত্বেও তাদের দাবি না মেনে বল প্রয়োগের পথ বেছে নিয়েছে সরকার। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, গত কদিন ধরে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উপর নির্বিচার হামলা চালানো হয়েছে। সরকারি ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পিস্তল, রড, লাঠি, হকিষ্টিক, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। নির্বিচার হামলায় নারী শিক্ষার্থীরাও রেহাই পায়নি। বিশেষ করে গতকাল মঙ্গলবার ছাত্রলীগ ও পুলিশ যৌথভাবে দেশের বিভিন্নস্থানে অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলে পড়ে। আমাদের সন্তান সমতুল্য কোমলমতি অসংখ্য শিক্ষার্থীকে রক্তাক্ত করতে দেখেছি। তাদের শরীর বেয়ে ঝরছিল রক্ত। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি রাস্তায়। শিক্ষার্থীদের রক্তে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরের পিচঢালা কালো রাস্তা লালে লাল হয়ে যায়। যা একাত্তরের পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে ৬ জন টকবগে ছাত্র-যুবকে। এই বর্বরোচিত হামলায় আমরা শুধু উদ্বিগ্নই নই, ক্ষুব্ধ ও বেদনার্তও। ‘জাতির কাঁধে ছাত্রের লাশ’ এর চেয়ে বেদনার খবর আর কি হতে পারে?

আমরা অবাক বিস্ময়ে দেখলাম, পুলিশের সামনে সরকারিদলের সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করছে; আর তারা নীরব দর্শকের মতো তাকিয়ে থাকল। কোথাও কোথাও পুলিশ আর সরকারি দলের ক্যাডারটা যৌথভাবে ছাত্রদের উপর হামলা চালিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, আহত ও রক্তাক্ত ছাত্ররা যখন কাতরাচ্ছে তাদের হসপিটালে নেওয়ার ব্যবস্থা পর্যন্ত পুলিশ করেনি। এমনকি আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার পথে বাধা দেওয়া হয়। হামলা থেকে শিক্ষকরাও রেহাই পায়নি। হামলায় আহত শিক্ষার্থীরা চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে জরুরি বিভাগে থাকা অবস্থায় তাদের উপর আবারো হামলা চালানো হয়েছে, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের সমতুল্য। আমরা এসব হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও উপযুক্ত শাস্তি চাই।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের দায় সরকার কিছুতেই এড়াতে পারে না। কারণ প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও ছাত্রলীগ নেতাদের উসকানিমূলক বক্তব্য ছাত্রদের বিক্ষুব্ধ করে তোলে। শিক্ষার্থীরা যখন কোটা বাতিলের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে আসছিল তখন আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ না নিয়ে নানা ধরনের হুমকি দিতে থাকেন তারা।

বিশেষ করে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কটাক্ষ করে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, নাতি, পুতিরা কেউ মেধাবী না; যত রাজাকারের বাচ্চারা, নাতি, পুতি ওরা মেধাবী তা-ই না? এই মন্তব্যকে ঘিরে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। হলে হলে শুরু হয় স্লোগান, বিক্ষোভ। রাতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়তে থাকে উত্তেজনা। হল থেকে দলে দলে বেরিয়ে আসেন ছাত্রীরা। এ মিছিলের যেন শেষ নেই। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন ছাত্ররাও। অন্যরকম এক রাতের নজির তৈরি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। যা ১৯৫২ ও ১৯৬৯ স্মরণ করিয়ে দেয়। ছাত্রদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিতে অন্যদিকে চলতে থাকে ভিন্ন প্রস্তুতি। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্রলীগ এবং ক্ষমতাসীনদের সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। তাদের অনেকের হাতেই ছিল হকিস্টিক, নানা ধরনের অস্ত্র। আতঙ্ক আর উত্তেজনা বাড়তে থাকে। গভীর রাতে ছাত্ররা ফিরে যান হলে। একপর্যায়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগের বহিরাগতরা। উদ্বেগের রাত শেষ হয়। তবে পরের দিন সরকার কিছু একটা করতে যাচ্ছে, সেটা সবাই অনুমান করতে পারছিলেন।

সোমবার দৃশ্যপট পরিষ্কার করে দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি রীতিমতো হুমকি দিয়ে বলেন, ক্যাম্পাসে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জবাব দিতে ছাত্রলীগ প্রস্তুত। একই ভাবে, ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব কোটা আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে উচ্চারণ করে চরম হুঁশিয়ারি।

ছাত্রলীগ সভাপতি ‘তাদের শেষ দেখে ছাড়বো’ বলে হুমকি দেয়। সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের উসকানি ও আস্কারা পেয়ে ছাত্রলীগ মঙ্গলবার ছাত্র হত্যার উন্মত্ততায় মেতে ওঠে। আমরা বিশ্বাস করি সরকার সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হলে এত প্রাণহানি ঘটতো না। কিন্তু ৭১’র পাকিস্তান স্বৈরাচারী সরকারের মতো আওয়ামী লীগ সরকার আলোচনার পথকে ছুঁড়ে ফেলে রক্তই বেছে নিল।

বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুধু শিক্ষার্থীদেরই বিক্ষুব্ধ করেনি, তাদের অভিভাবকদেরও ক্ষুব্ধ করেছে। তাই আমরা প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর এই বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধরী প্রমুখ।

আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার বিচার দাবি ২২ পেশাজীবী সংগঠনের

আপডেট : ০৭:২৪:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদসহ ২২টি পেশাজীবী সংগঠন। আজ বুধবার (১৭ জুলাই) এক যৌথ বিবৃতিতে পেশাজীবী নেতারা চলমান ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হত্যা, তাদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি, কোটা বাতিলের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান।

এক বিবৃতিতে পেশাজীবী নেতারা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের দাবিকে অত্যন্ত যৌক্তিক বলে মনে করি। আমরা মনে করি, ‘কোটা কখনো, মেধার বিকল্প হতে পারে না’। এ কোটার কারণে প্রতিভাবান অনেক চাকরিপ্রার্থী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বঞ্চিত হচ্ছেন।

কোটা ব্যবস্থার বিলোপ হলে, সকল প্রার্থীর মধ্যে যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। এতে করে মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থীরা তাদের প্রকৃত প্রতিভার স্বীকৃতি পাবেন এবং যোগ্য প্রার্থীদের মাধ্যমে সরকারি খাতে দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বৃদ্ধি পাবে।

তাঁরা বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক হওয়া সত্ত্বেও তাদের দাবি না মেনে বল প্রয়োগের পথ বেছে নিয়েছে সরকার। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, গত কদিন ধরে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উপর নির্বিচার হামলা চালানো হয়েছে। সরকারি ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পিস্তল, রড, লাঠি, হকিষ্টিক, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। নির্বিচার হামলায় নারী শিক্ষার্থীরাও রেহাই পায়নি। বিশেষ করে গতকাল মঙ্গলবার ছাত্রলীগ ও পুলিশ যৌথভাবে দেশের বিভিন্নস্থানে অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলে পড়ে। আমাদের সন্তান সমতুল্য কোমলমতি অসংখ্য শিক্ষার্থীকে রক্তাক্ত করতে দেখেছি। তাদের শরীর বেয়ে ঝরছিল রক্ত। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি রাস্তায়। শিক্ষার্থীদের রক্তে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরের পিচঢালা কালো রাস্তা লালে লাল হয়ে যায়। যা একাত্তরের পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে ৬ জন টকবগে ছাত্র-যুবকে। এই বর্বরোচিত হামলায় আমরা শুধু উদ্বিগ্নই নই, ক্ষুব্ধ ও বেদনার্তও। ‘জাতির কাঁধে ছাত্রের লাশ’ এর চেয়ে বেদনার খবর আর কি হতে পারে?

আমরা অবাক বিস্ময়ে দেখলাম, পুলিশের সামনে সরকারিদলের সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করছে; আর তারা নীরব দর্শকের মতো তাকিয়ে থাকল। কোথাও কোথাও পুলিশ আর সরকারি দলের ক্যাডারটা যৌথভাবে ছাত্রদের উপর হামলা চালিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, আহত ও রক্তাক্ত ছাত্ররা যখন কাতরাচ্ছে তাদের হসপিটালে নেওয়ার ব্যবস্থা পর্যন্ত পুলিশ করেনি। এমনকি আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার পথে বাধা দেওয়া হয়। হামলা থেকে শিক্ষকরাও রেহাই পায়নি। হামলায় আহত শিক্ষার্থীরা চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে জরুরি বিভাগে থাকা অবস্থায় তাদের উপর আবারো হামলা চালানো হয়েছে, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের সমতুল্য। আমরা এসব হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও উপযুক্ত শাস্তি চাই।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের দায় সরকার কিছুতেই এড়াতে পারে না। কারণ প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও ছাত্রলীগ নেতাদের উসকানিমূলক বক্তব্য ছাত্রদের বিক্ষুব্ধ করে তোলে। শিক্ষার্থীরা যখন কোটা বাতিলের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে আসছিল তখন আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ না নিয়ে নানা ধরনের হুমকি দিতে থাকেন তারা।

বিশেষ করে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কটাক্ষ করে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, নাতি, পুতিরা কেউ মেধাবী না; যত রাজাকারের বাচ্চারা, নাতি, পুতি ওরা মেধাবী তা-ই না? এই মন্তব্যকে ঘিরে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। হলে হলে শুরু হয় স্লোগান, বিক্ষোভ। রাতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়তে থাকে উত্তেজনা। হল থেকে দলে দলে বেরিয়ে আসেন ছাত্রীরা। এ মিছিলের যেন শেষ নেই। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন ছাত্ররাও। অন্যরকম এক রাতের নজির তৈরি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। যা ১৯৫২ ও ১৯৬৯ স্মরণ করিয়ে দেয়। ছাত্রদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিতে অন্যদিকে চলতে থাকে ভিন্ন প্রস্তুতি। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্রলীগ এবং ক্ষমতাসীনদের সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। তাদের অনেকের হাতেই ছিল হকিস্টিক, নানা ধরনের অস্ত্র। আতঙ্ক আর উত্তেজনা বাড়তে থাকে। গভীর রাতে ছাত্ররা ফিরে যান হলে। একপর্যায়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগের বহিরাগতরা। উদ্বেগের রাত শেষ হয়। তবে পরের দিন সরকার কিছু একটা করতে যাচ্ছে, সেটা সবাই অনুমান করতে পারছিলেন।

সোমবার দৃশ্যপট পরিষ্কার করে দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি রীতিমতো হুমকি দিয়ে বলেন, ক্যাম্পাসে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জবাব দিতে ছাত্রলীগ প্রস্তুত। একই ভাবে, ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব কোটা আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে উচ্চারণ করে চরম হুঁশিয়ারি।

ছাত্রলীগ সভাপতি ‘তাদের শেষ দেখে ছাড়বো’ বলে হুমকি দেয়। সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের উসকানি ও আস্কারা পেয়ে ছাত্রলীগ মঙ্গলবার ছাত্র হত্যার উন্মত্ততায় মেতে ওঠে। আমরা বিশ্বাস করি সরকার সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হলে এত প্রাণহানি ঘটতো না। কিন্তু ৭১’র পাকিস্তান স্বৈরাচারী সরকারের মতো আওয়ামী লীগ সরকার আলোচনার পথকে ছুঁড়ে ফেলে রক্তই বেছে নিল।

বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুধু শিক্ষার্থীদেরই বিক্ষুব্ধ করেনি, তাদের অভিভাবকদেরও ক্ষুব্ধ করেছে। তাই আমরা প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর এই বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধরী প্রমুখ।