রাজধানীর রামপুরার প্রধান সড়কে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় আন্দোলনরতরা পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছে। তাঁদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এতে রামপুরা থেকে লিংক রোড পর্যন্ত রণক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
আমাদের প্রতিবেদক ঘটনাস্থল থেকে জানিয়েছেন, বেলা ১১টার কিছু সময় পর পুলিশ বক্সটিতে আগুন দেওয়া হয়।
প্রতিবেদক জানান, বেলা ১১টার পর থেকে বনশ্রীর সড়ক ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের পাশে গলি দিয়ে বের হয়ে শিক্ষার্থীরা মূল সড়কে অবস্থান নেয়। তখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে আগুন জলতে থাকলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সারা দেশে ছাত্রদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার সময় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর বেলা ১১টার দিকে পুলিশ সড়ক অবরোধ মুক্ত করতে গেলে তাদের সঙ্গে ছাত্রদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশে তাদের ছত্রভঙ্গ করেতে কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
পরে আন্দোলনে যোগ দেয় ইস্ট ওয়েস্ট, সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজ ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের দুপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এরপর শিক্ষার্থীরা আবার একত্রিত হয়ে রামপুরা ব্রিজের পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এছাড়া পুলিশ সংঘর্ষে জড়িয়েছে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার এক পর্যায়ে ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢুকে পড়ে পুলিশ সদস্যরা। পরে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোড়ে তারা।
গতকাল বুধবার রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে আজও সারা দেশে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
জরুরি সেবা, অ্যাম্বুলেন্স, ওষুধ ও খাদ্য পণ্য বহনকারী যানবাহন এই শাটডাউনের আওতার বাইরে থাকার ঘোষণা দেয় আন্দোলনকারীরা।
এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ঘোষিত দেশব্যাপী ‘কমপ্লিট শাটডাউনকে’ কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঢাকাসহ সারা দেশে ২২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। রাজধানীতে মোতায়েন করা হয়েছে ১৬ প্লাটুন আনসার সদস্য।