কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ মধ্যে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা, রামপুরা, ও বনশ্রী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারী ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী-পুলিশসহ দুই শতাধিক আহত হয়েছেন।
এছাড়া দুলাল নামে এক ট্রাক চালককে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ফরাজী হাসপাতালের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হাসান পারভেজ।
ফরাজী হাসপাতালের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হাসান পারভেজ বলেন, আমাদের হাসপাতালে আজকে পরিস্থিতি বুঝে ফ্রি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য। দুপুর থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের এখানে ১৫০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬ পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। দুলাল নামে এক ট্রাক চালক নিহত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে। আরেক শিক্ষার্থীকে গুরুতর অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, গুরুতর অবস্থায় আনা ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢামেকে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরাজী হাসপাতালের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হাসান পারভেজ।
নাগরিক স্পেশালাইডজ হাসপাতালের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি সুমি জানান, এখানে প্রচুর আহত লোকজন আসছে। তাদের চিকিৎসা দিয়ে আমরা পাঠিয়ে দিচ্ছি। এই মুহূর্তে হতাহতের সংখ্যা বা চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা বলার মতোও অবস্থা নেই।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার পর রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকশ শিক্ষার্থী ইস্ট-ওয়েস্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রামপুরা ও মেরুল বাড্ডা এলাকার রাস্তা অবরোধ করে। সড়কে যাতায়াত ও যানবাহনের চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ব্র্যাকের শিক্ষার্থীদের অবরোধের এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় প্রথমবার শিক্ষার্থীরা পিছু হটলেও পরে তারাও পুলিশের দিকে তেড়ে আসেন। শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন, এক পর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভেতরে অবস্থান করছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, পুলিশ বিনা উসকানিতে ব্র্যাকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। এমনকি তারা ক্যাম্পাসের ভেতরেও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। পুলিশের হামলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা রামপুরায় পুলিশ বক্সে আগুন দেয় ও পুড়িয়ে দেয় ১২ মোটরসাইকেল। সেখানে বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি সেখানে উত্তপ্ত রয়েছে।