ঢাকা ১০:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফরে ক্ষোভ বাড়ছে মার্কিনিদের মনে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৩৯:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪
  • / ৩৭৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধছে মার্কিনিদের মনে। আজ (বুধবার, ২৪ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলের ভেতরে বিক্ষোভে অংশ নেন ৪ শতাধিক ইহুদি। বিশ্লেষকদের ধারণা, যুদ্ধ শুরুর পর প্রথম বিদেশ সফরের মাধ্যমে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা আদায়ের কোনো পথই বাদ রাখবেন না ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী।

বুকে লাল টি শার্ট জড়িয়ে কিছুক্ষণের জন্য মার্কিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিল দখলে নেয় বিক্ষোভকারীরা। প্রত্যেকের মুখে ছিলো যুদ্ধবিরোধী ঝাঁঝালো স্লোগান। প্রায় ১০ মাস ধরে গাজায় চলমান যুদ্ধে ইসরাইলকে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সহায়তা বন্ধে এমন বিরল প্রতিবাদ করলো চার শতাধিক ইহুদি বিক্ষোভকারী। যার মধ্যে অধিকাংশকেই আটক করে পুলিশ।

আন্দোলনকারীদের একজন বলেন, ‘আমাদের করের অর্থে গণহত্যা চলতে পারে না। আমরা ইহুদিরা নিজেদের মূল্যবোধের স্থান থেকে বলতে চাই আমরা গণহত্যাকে অর্থায়ন করতে চাই না।’

বিক্ষোভে অংশ নেয়া এক আমেরিকান ইহুদি বলেন, ‘আমার পূর্বপুরুষেরা হলোকাস্ট থেকে বেঁচে ফিরেন। ছোটবেলায় তারা আমাদের বলেন হলোকাস্টের মতো কিছু যাতে চলতে না পারে। তাই আজ আমি আন্দোলনে অংশ নিতে এসেছি।’

মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজনীতিতে ব্যাপক উত্থান-পতন লক্ষ্য করেছে মার্কিনিরা। ১২ জুলাই ন্যাটো সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্টকে ভুল নামে সম্বোধন করে কটাক্ষের শিকার হন জো বাইডেন। এর ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই বন্দুক হামলা হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর। হাসপাতালের বিছানা থেকে ফিরতেই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ট্রাম্পকে মনোনয়ন দেয় রিপাবলিকান পার্টি।

অন্যদিকে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন জো বাইডেন। ব্যাপক চাপের মুখে রোববার ৮১ বছরের এই ডেমোক্রেট নেতা প্রত্যাহার করেন প্রার্থিতা। এতে নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সামনে চলে আসেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।

বিশ্বের একমাত্র সুপারপাওয়ার রাষ্ট্রটিতে রাজনৈতিক পালাবদলের এই সময়ে সুবিধা নেয়ার কথা ভোলেননি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ঘরে ও বাইরে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা ঠেকেছে তলানিতে। দেশ বিদেশ থেকে প্রতিনিয়ত চাপ বাড়ছে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য। তাই নিজের স্বার্থসিদ্ধিতে নেতানিয়াহু ছুটলেন যুক্তরাষ্ট্রে। চলতি সপ্তাহে ভাষণ দেবেন কংগ্রেসে, দেখা করবেন দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের সঙ্গে। অর্থাৎ ভবিষ্যৎ মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে অস্ত্র ও অর্থ আদায়ের কোনো পথই বাদ রাখছেন না তিনি।

চলতি সপ্তাহে নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্রের সফরকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে বার্তা সংস্থা এপি। কারণ গেল বছর ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর এটি। এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর প্রথমবার ইসরাইলের বাইরে যাচ্ছেন তিনি। নিজ দেশে ও বহির্বিশ্বে নিজের অবস্থান জানান দেয়ার মাধ্যম হিসেবে মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দেয়াকে ব্যবহার করবেন নেতানিয়াহু, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।

এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরোধী অনেক মার্কিন আইনপ্রণেতা নেতানিয়াহুর কংগ্রেস ভাষণ বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। ক্যাপিটল হিলসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলপন্থী বিভিন্ন সংগঠন।

নিউজটি শেয়ার করুন

নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফরে ক্ষোভ বাড়ছে মার্কিনিদের মনে

আপডেট সময় : ১০:৩৯:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪

নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধছে মার্কিনিদের মনে। আজ (বুধবার, ২৪ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলের ভেতরে বিক্ষোভে অংশ নেন ৪ শতাধিক ইহুদি। বিশ্লেষকদের ধারণা, যুদ্ধ শুরুর পর প্রথম বিদেশ সফরের মাধ্যমে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা আদায়ের কোনো পথই বাদ রাখবেন না ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী।

বুকে লাল টি শার্ট জড়িয়ে কিছুক্ষণের জন্য মার্কিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিল দখলে নেয় বিক্ষোভকারীরা। প্রত্যেকের মুখে ছিলো যুদ্ধবিরোধী ঝাঁঝালো স্লোগান। প্রায় ১০ মাস ধরে গাজায় চলমান যুদ্ধে ইসরাইলকে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সহায়তা বন্ধে এমন বিরল প্রতিবাদ করলো চার শতাধিক ইহুদি বিক্ষোভকারী। যার মধ্যে অধিকাংশকেই আটক করে পুলিশ।

আন্দোলনকারীদের একজন বলেন, ‘আমাদের করের অর্থে গণহত্যা চলতে পারে না। আমরা ইহুদিরা নিজেদের মূল্যবোধের স্থান থেকে বলতে চাই আমরা গণহত্যাকে অর্থায়ন করতে চাই না।’

বিক্ষোভে অংশ নেয়া এক আমেরিকান ইহুদি বলেন, ‘আমার পূর্বপুরুষেরা হলোকাস্ট থেকে বেঁচে ফিরেন। ছোটবেলায় তারা আমাদের বলেন হলোকাস্টের মতো কিছু যাতে চলতে না পারে। তাই আজ আমি আন্দোলনে অংশ নিতে এসেছি।’

মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজনীতিতে ব্যাপক উত্থান-পতন লক্ষ্য করেছে মার্কিনিরা। ১২ জুলাই ন্যাটো সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্টকে ভুল নামে সম্বোধন করে কটাক্ষের শিকার হন জো বাইডেন। এর ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই বন্দুক হামলা হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর। হাসপাতালের বিছানা থেকে ফিরতেই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ট্রাম্পকে মনোনয়ন দেয় রিপাবলিকান পার্টি।

অন্যদিকে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন জো বাইডেন। ব্যাপক চাপের মুখে রোববার ৮১ বছরের এই ডেমোক্রেট নেতা প্রত্যাহার করেন প্রার্থিতা। এতে নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সামনে চলে আসেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।

বিশ্বের একমাত্র সুপারপাওয়ার রাষ্ট্রটিতে রাজনৈতিক পালাবদলের এই সময়ে সুবিধা নেয়ার কথা ভোলেননি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ঘরে ও বাইরে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা ঠেকেছে তলানিতে। দেশ বিদেশ থেকে প্রতিনিয়ত চাপ বাড়ছে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য। তাই নিজের স্বার্থসিদ্ধিতে নেতানিয়াহু ছুটলেন যুক্তরাষ্ট্রে। চলতি সপ্তাহে ভাষণ দেবেন কংগ্রেসে, দেখা করবেন দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের সঙ্গে। অর্থাৎ ভবিষ্যৎ মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে অস্ত্র ও অর্থ আদায়ের কোনো পথই বাদ রাখছেন না তিনি।

চলতি সপ্তাহে নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্রের সফরকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে বার্তা সংস্থা এপি। কারণ গেল বছর ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর এটি। এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর প্রথমবার ইসরাইলের বাইরে যাচ্ছেন তিনি। নিজ দেশে ও বহির্বিশ্বে নিজের অবস্থান জানান দেয়ার মাধ্যম হিসেবে মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দেয়াকে ব্যবহার করবেন নেতানিয়াহু, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।

এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরোধী অনেক মার্কিন আইনপ্রণেতা নেতানিয়াহুর কংগ্রেস ভাষণ বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। ক্যাপিটল হিলসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলপন্থী বিভিন্ন সংগঠন।