০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চার দিনে পোশাক রপ্তানি খাতে লোকসান ৭ হাজার কোটি টাকা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : ১২:৩২:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪
  • ৩২ দেখেছেন

গেল সপ্তাহে চার দিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় দেশের শীর্ষ রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকের রপ্তানি হারিয়েছে প্রায় ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকার। আর আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় কাঁচামাল সংকটে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজে ক্ষতির পরিমাণ ৩ হাজার কোটি টাকা। এ সংকট থেকে উত্তরণে সরকারের নীতিসহায়তার পাশাপাশি আর্থিক সহযোগিতার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। আর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বন্দরে গতি ফিরিয়ে আনার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।

ক্রেতাদের নানা শর্ত আর বিধিনিষেধ যেখানে সর্বদা ছায়ার মতো, সেই তৈরি পোশাক খাতে যেন পান থেকে চুন খসলেই উদ্বেগ বাড়ে।

কয়েকদিনের অস্থিরতা যেন পোশাক রপ্তানির খোলা আকাশে ছড়িয়েছে কালো ধোঁয়া। কেননা গেল ১৯ থেকে ২২ জুলাই টানা ৪দিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় প্রায় ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকার রপ্তানি হারিয়েছে দেশের শীর্ষ রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক। এসময় আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় কাঁচামাল সংকটে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ, ওয়াশিং আর ডায়িং খাতে উৎপাদন ব্যাহত হয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার।

এমনিতেই গেল অর্থবছরের ১১ মাসে আশানুরূপ হয়নি পোশাক রপ্তানি। এই সময়ে রপ্তানি বেড়েছে মাত্র ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। যা এর আগের অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় কমেছে প্রায় ৮ শতাংশ। এমন নেতিবাচক ধারার মধ্যে দেশের অধিকাংশ কারখানায় চলছে এখন শীতকালীন পণ্যের উৎপাদন। এছাড়া বড়দিন উপলক্ষ্যে ক্রয়াদেশের উপযুক্ত সময় পার করছে তৈরি পোশাকখাত। এমন সময় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় ক্রেতাদের মধ্যে আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে।

বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে বায়াররা আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে নাই। আগামীদিনের যেই অর্ডারগুলো এইসময়ে প্লেস হওয়ার কথা ছিল তা অন্যদেশে চলে গিয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া আমাদের জন্য চ্যালেন্জ হয়ে দাঁড়াবে।’

এ সংকট থেকে উত্তরণে সরকারের নীতিসহায়তা, উৎসে কর কমানোসহ কাস্টমস, ব্যাংকিং নীতিমালায় শিথিলতা এবং আর্থিক সহযোগিতার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা।

বিজিএমইএ’র সভাপতি এস এম মান্নান কচি বলেন, ‘এই আঘাত পুষিয়ে নেয়া কষ্টকর হবে। কারণ যোগাযোগের অভাবে ক্রেতাদের কাছে আমাদের ইমেজ হারিয়েছি।’

এ অবস্থায় বন্দরে গতি ফিরিয়ে আনা সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। আর দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় পোশাক খাতে বিশেষ সহায়তার দাবি উঠলেও তা সরকারের পক্ষেও মানা কষ্টসাধ্য বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

অর্থনীতিবিদ ড. তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘সরকারের এখন আর্থিক সক্ষমতা অনেক কম। চাইলেই তাদেরকে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে আর্থিক সহায়তা দিতে পারবে তা কিন্তু না। বাজেট পরিস্থিতি কিন্তু তা বলে না। অন্য জায়গায় তাদের সহায়তা দিতে পারে যা হতে পারে জ্বালানি, গ্যাস, লজিস্টিক ও কাস্টমস ফি কমিয়ে।’

২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ হাজার ৫৫৫ কোটি ডলারের মোট রপ্তানি আয়ের ৪ হাজার ৬৯৯ কোটিই ছিল তৈরি পোশাকের।

চার দিনে পোশাক রপ্তানি খাতে লোকসান ৭ হাজার কোটি টাকা

আপডেট : ১২:৩২:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪

গেল সপ্তাহে চার দিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় দেশের শীর্ষ রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকের রপ্তানি হারিয়েছে প্রায় ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকার। আর আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় কাঁচামাল সংকটে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজে ক্ষতির পরিমাণ ৩ হাজার কোটি টাকা। এ সংকট থেকে উত্তরণে সরকারের নীতিসহায়তার পাশাপাশি আর্থিক সহযোগিতার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। আর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বন্দরে গতি ফিরিয়ে আনার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।

ক্রেতাদের নানা শর্ত আর বিধিনিষেধ যেখানে সর্বদা ছায়ার মতো, সেই তৈরি পোশাক খাতে যেন পান থেকে চুন খসলেই উদ্বেগ বাড়ে।

কয়েকদিনের অস্থিরতা যেন পোশাক রপ্তানির খোলা আকাশে ছড়িয়েছে কালো ধোঁয়া। কেননা গেল ১৯ থেকে ২২ জুলাই টানা ৪দিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় প্রায় ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকার রপ্তানি হারিয়েছে দেশের শীর্ষ রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক। এসময় আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় কাঁচামাল সংকটে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ, ওয়াশিং আর ডায়িং খাতে উৎপাদন ব্যাহত হয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার।

এমনিতেই গেল অর্থবছরের ১১ মাসে আশানুরূপ হয়নি পোশাক রপ্তানি। এই সময়ে রপ্তানি বেড়েছে মাত্র ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। যা এর আগের অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় কমেছে প্রায় ৮ শতাংশ। এমন নেতিবাচক ধারার মধ্যে দেশের অধিকাংশ কারখানায় চলছে এখন শীতকালীন পণ্যের উৎপাদন। এছাড়া বড়দিন উপলক্ষ্যে ক্রয়াদেশের উপযুক্ত সময় পার করছে তৈরি পোশাকখাত। এমন সময় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় ক্রেতাদের মধ্যে আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে।

বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে বায়াররা আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে নাই। আগামীদিনের যেই অর্ডারগুলো এইসময়ে প্লেস হওয়ার কথা ছিল তা অন্যদেশে চলে গিয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া আমাদের জন্য চ্যালেন্জ হয়ে দাঁড়াবে।’

এ সংকট থেকে উত্তরণে সরকারের নীতিসহায়তা, উৎসে কর কমানোসহ কাস্টমস, ব্যাংকিং নীতিমালায় শিথিলতা এবং আর্থিক সহযোগিতার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা।

বিজিএমইএ’র সভাপতি এস এম মান্নান কচি বলেন, ‘এই আঘাত পুষিয়ে নেয়া কষ্টকর হবে। কারণ যোগাযোগের অভাবে ক্রেতাদের কাছে আমাদের ইমেজ হারিয়েছি।’

এ অবস্থায় বন্দরে গতি ফিরিয়ে আনা সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। আর দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় পোশাক খাতে বিশেষ সহায়তার দাবি উঠলেও তা সরকারের পক্ষেও মানা কষ্টসাধ্য বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

অর্থনীতিবিদ ড. তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘সরকারের এখন আর্থিক সক্ষমতা অনেক কম। চাইলেই তাদেরকে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে আর্থিক সহায়তা দিতে পারবে তা কিন্তু না। বাজেট পরিস্থিতি কিন্তু তা বলে না। অন্য জায়গায় তাদের সহায়তা দিতে পারে যা হতে পারে জ্বালানি, গ্যাস, লজিস্টিক ও কাস্টমস ফি কমিয়ে।’

২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ হাজার ৫৫৫ কোটি ডলারের মোট রপ্তানি আয়ের ৪ হাজার ৬৯৯ কোটিই ছিল তৈরি পোশাকের।