ছুটির দিন হিসেবে অন্য সপ্তাহের তুলনায় আজ ক্রেতার উপস্থিতি কিছুটা কম। কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফলে গত কয়েক দিনের সহিংস ঘটনায় দেশের বাজারে পণ্যের সাপ্লাই চেইন প্রায় ভেঙে পড়েছিল। এতে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে পণ্যের ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে বাড়তে থাকে দাম। বর্তমানে রাজধানীর সঙ্গে সারা দেশের পণ্য সরবরাহ সচল হতে শুরু করেছে। এতে সবজির বাজারে উত্তাপ কিছুটা কমেছে। সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে সব ধরনের সবজি ও মাছের দাম কমেছে।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর রামপুরা, গুলশান, বাড্ডা, মালিবাগ, মোহাম্মদপুরসহ স্থানীয় বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায় গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
রাজধানীর শেওড়াপাড়া ও তালতলা বাজার ঘুরে দেখা যায়, গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী কেজিতে ২০ টাকা কমে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন কেজিতে ৪০ টাকা কমে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। করলা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপের কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, সজনে ১৬০ টাকা এবং শসা ৬০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ব্রোকলি ৫০ টাকা, পাকা টমেটোর কেজি প্রকারভেদে ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা এবং গাজর ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
লেবুর হালি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কলার হালি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। লাল শাকের আঁটি ১৫ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা।
সপ্তাহ ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। কাঁচামরিচের দাম কেজিতে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কমে প্রকারভেদে ১৬০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।
বিক্রেতারা বলছেন, কারফিউর কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় কাঁচা পণ্যের দাম কিছুটা বেশি ছিল। এখন তা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। সামনে আরও দাম কমবে।
মুরগির দোকানগুলোতে ব্রয়লার, লাল লেয়ার, সাদা লেয়ার, সোনালী, পাকিস্তানি কক ও দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগির ১৮০ টাকা, লাল লেয়ার মুরগি ৩৫০ টাকা, সোনালী মুরগি ২৭০ টাকা, সাদা লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা, পাকিস্তানি কক মুরগি ২৯০ টাকা এবং দেশী মুরগি ৫০০-৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহ এবং চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকের তুলনায় এখন সব জাতের মুরগির দাম কেজিতে সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংসের কেজি এক হাজার ১৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।
বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন ১৮০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকা।
সপ্তাহ ব্যবধানে মাছের দামও কিছুটা কমেছে। বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম আকারের ইলিশ মাছের কেজি এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা এবং ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
চাষের শিং (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা হয়েছে। দেশি মাগুরের কেজি ৯০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের পাঙাস ১৯০ থেকে ২২০ টাকা ও চিংড়ির কেজি ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।
বোয়ালের কেজি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মলা ৬০০ টাকা, বাতাসি টেংরা এক হাজার ৪০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা এক হাজার ২০০ টাকা, বাইম এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা, দেশি কই এক হাজার ২০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ টাকা এবং কাইক্কা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।