০৫:২০ পূর্বাহ্ন, রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা দূরের লক্ষ্য অর্জন স্থবির হয়ে পড়েছে: জাতিসংঘ

বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা দূর করার লক্ষ্য অর্জনের অভিযান স্থবির হয়ে পড়েছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। এরজন্য দেশে দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতি, জলবায়ু পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক সংকটকে দায়ী করছে সংস্থাটি। এভাবে চলতে থাকলে ২০৩০ সালে সবচেয়ে বেশি অপুষ্টির শিকার হবে আফ্রিকা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে ধুঁকছে বৈশ্বিক বাণিজ্য ও সরবরাহ ব্যবস্থা। এছাড়া, আফ্রিকা মহাদেশসহ বিভিন্ন অঞ্চলে দেশে দেশে অভ্যন্তরীণ সংঘাততো আছেই। অন্যদিকে জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবে প্রকৃতির নানামুখী আগ্রাসী আচরণে ধেয়ে আসছে একের পর এক বিপর্যয়।

একই সঙ্গে মানবসৃষ্ট সংঘাত ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে রীতিমতো জ্বলন্ত উনুনের মধ্য দিয়ে দিন পার করছে পুরো বিশ্ব। লম্বা হচ্ছে খাদ্য ও অর্থনৈতিক সংকটের বোঝা। এতে করে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা দূর করার লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব হয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। এতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে আফ্রিকা মহাদেশ।

বার্ষিক স্টেট অব ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ইন ওয়ার্ল্ড রিপোর্টে বলা হয়েছে ২০২৩ সালে ৭৩ কোটির বেশি মানুষ ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছে। সেই হিসেবে বিশ্বব্যাপী ১১ জনের মধ্যে একজন এবং আফ্রিকাতে পাঁচজনের মধ্যে একজন ক্ষুধার্ত। তবে করোনা পরিস্থিতির পরে কিছুটা শক্তিশালী অবস্থায় ফিরেছে এশিয়া। তবে কিছু কিছু অঞ্চলে অগ্রগতি হলেও, সামগ্রিকভাবে বৈশ্বিক পর্যায়ে পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে।

এফএও’র কৃষি খাদ্য অর্থনীতি বিভাগের পরিচালক ডেভিড লেবারডে বলেন, ‘আফ্রিকা এখনও বৈশ্বিক ও স্থানীয় সংঘাতের প্রভাব মোকাবিলা করছি। উত্তর আফ্রিকায় কী ঘটছে তা নিয়ে ভাবতে পারেন, আপনি সুদানের কথাও ভাবতে পারেন। জলবায়ু ধাক্কায় আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মহাদেশটি। খরা-বন্যার কবলে মোজাম্বিক থেকে পশ্চিম আফ্রিকা। এছাড়া অর্থনৈতিক পরিস্থিতির গতিতে উন্নতি নেই। যেভাবে করোনা পরবর্তী এশিয়ার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে।’

এ অবস্থায় বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা দূর করার অভিযানে স্থবিরতা দূর করতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ দরকার বলে মনে করছে ইউএন ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন- এফএও। কারণ নয় বছর আগের তুলনায় বর্তমান অবস্থা আরও বেশি খারাপ হয়েছে বলে দাবি সংস্থাটির। যুক্তি হিসেবে বলা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আঞ্চলিক যুদ্ধের মতো চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে এক দশক আগে যেই ধারণা ছিল তার চেয়ে বেশি গুরুতর হওয়ায় সংকটও ঘনীভূত হয়েছে।

ডেভিড লেবারডে বলেন, ‘আমরা যদি এটি অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ না করি তবে বিশ্ব ক্ষুধা দূর করার লক্ষ্যটি মিস করতে পারে। এখন পরিস্থিতি খুবই চ্যালেঞ্জিং। আমরা নয় বছর আগে যখন ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা নির্মূল করার লক্ষ্য চালু করছিলাম তার চেয়ে বর্তমান পরিস্থিতি আরও খারাপ। বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন, দ্বন্দ্ব ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আমাদের বৈষম্য বাড়ছে।’

সংঘাত ও জলবায়ু পরিবর্তনের চলমান প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে, তবে এই দশকের শেষে ৫৮ কোটির বেশি মানুষ দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টির শিকার হবে। তাদের অর্ধেক হবে আফ্রিকার বাসিন্দা।

বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা দূরের লক্ষ্য অর্জন স্থবির হয়ে পড়েছে: জাতিসংঘ

আপডেট : ১২:০৮:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪

বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা দূর করার লক্ষ্য অর্জনের অভিযান স্থবির হয়ে পড়েছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। এরজন্য দেশে দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতি, জলবায়ু পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক সংকটকে দায়ী করছে সংস্থাটি। এভাবে চলতে থাকলে ২০৩০ সালে সবচেয়ে বেশি অপুষ্টির শিকার হবে আফ্রিকা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে ধুঁকছে বৈশ্বিক বাণিজ্য ও সরবরাহ ব্যবস্থা। এছাড়া, আফ্রিকা মহাদেশসহ বিভিন্ন অঞ্চলে দেশে দেশে অভ্যন্তরীণ সংঘাততো আছেই। অন্যদিকে জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবে প্রকৃতির নানামুখী আগ্রাসী আচরণে ধেয়ে আসছে একের পর এক বিপর্যয়।

একই সঙ্গে মানবসৃষ্ট সংঘাত ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে রীতিমতো জ্বলন্ত উনুনের মধ্য দিয়ে দিন পার করছে পুরো বিশ্ব। লম্বা হচ্ছে খাদ্য ও অর্থনৈতিক সংকটের বোঝা। এতে করে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা দূর করার লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব হয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। এতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে আফ্রিকা মহাদেশ।

বার্ষিক স্টেট অব ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ইন ওয়ার্ল্ড রিপোর্টে বলা হয়েছে ২০২৩ সালে ৭৩ কোটির বেশি মানুষ ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছে। সেই হিসেবে বিশ্বব্যাপী ১১ জনের মধ্যে একজন এবং আফ্রিকাতে পাঁচজনের মধ্যে একজন ক্ষুধার্ত। তবে করোনা পরিস্থিতির পরে কিছুটা শক্তিশালী অবস্থায় ফিরেছে এশিয়া। তবে কিছু কিছু অঞ্চলে অগ্রগতি হলেও, সামগ্রিকভাবে বৈশ্বিক পর্যায়ে পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে।

এফএও’র কৃষি খাদ্য অর্থনীতি বিভাগের পরিচালক ডেভিড লেবারডে বলেন, ‘আফ্রিকা এখনও বৈশ্বিক ও স্থানীয় সংঘাতের প্রভাব মোকাবিলা করছি। উত্তর আফ্রিকায় কী ঘটছে তা নিয়ে ভাবতে পারেন, আপনি সুদানের কথাও ভাবতে পারেন। জলবায়ু ধাক্কায় আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মহাদেশটি। খরা-বন্যার কবলে মোজাম্বিক থেকে পশ্চিম আফ্রিকা। এছাড়া অর্থনৈতিক পরিস্থিতির গতিতে উন্নতি নেই। যেভাবে করোনা পরবর্তী এশিয়ার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে।’

এ অবস্থায় বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা দূর করার অভিযানে স্থবিরতা দূর করতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ দরকার বলে মনে করছে ইউএন ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন- এফএও। কারণ নয় বছর আগের তুলনায় বর্তমান অবস্থা আরও বেশি খারাপ হয়েছে বলে দাবি সংস্থাটির। যুক্তি হিসেবে বলা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আঞ্চলিক যুদ্ধের মতো চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে এক দশক আগে যেই ধারণা ছিল তার চেয়ে বেশি গুরুতর হওয়ায় সংকটও ঘনীভূত হয়েছে।

ডেভিড লেবারডে বলেন, ‘আমরা যদি এটি অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ না করি তবে বিশ্ব ক্ষুধা দূর করার লক্ষ্যটি মিস করতে পারে। এখন পরিস্থিতি খুবই চ্যালেঞ্জিং। আমরা নয় বছর আগে যখন ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা নির্মূল করার লক্ষ্য চালু করছিলাম তার চেয়ে বর্তমান পরিস্থিতি আরও খারাপ। বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন, দ্বন্দ্ব ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আমাদের বৈষম্য বাড়ছে।’

সংঘাত ও জলবায়ু পরিবর্তনের চলমান প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে, তবে এই দশকের শেষে ৫৮ কোটির বেশি মানুষ দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টির শিকার হবে। তাদের অর্ধেক হবে আফ্রিকার বাসিন্দা।