রাজধানীর বাড্ডা, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন পয়েন্টে কড়া অবস্থান নিয়েছে পুলিশ-বিজিবি ও র্যাব। কয়েকটি স্থানে ধাওয়া এবং ধরপাকড়ের ঘটনাও ঘটেছে।
সোমবার (২৯ জুলাই) ডিবি হেফাজত থেকে কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কদের কর্মসূচী বাতিলের পর বিক্ষোভের কথা জানায় একটি অংশ। সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে আজ এ বিক্ষোভ করার কথা জানায় তারা। এজন্য সকাল থেকে কড়া পাহারা দেখা যায় পুলিশের।
রাজধানীর পল্টনমোড় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সহ-সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক এবং রাফিসহ চারজনকে পুলিশ আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ধানমন্ডিতে বিক্ষোভ শুরু করে কিছু শিক্ষার্থী। কিছুক্ষণ পর পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আটক করা হয় বেশ কয়েক জনকে। বাড্ডায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হবার চেষ্টা করে। এখানেও কয়েক জনকে আটক করা হয়। এছাড়া, কয়েকটি ক্যাম্পাসের সামনে তল্লাশি এবং ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, জননিরাপত্তার জন্য সরকারি নির্দেশে পুলিশ মোতায়েন এবং সন্দেহভাজনদের আটক করা হচ্ছে।
দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ও ছাত্রলীগের আক্রমণে নিহত হওয়া এবং ডিবি কার্যালয়ে জিম্মি রেখে সমন্বয়কদের মাধ্যমে জোরপূর্বক স্ক্রিপ্টেড বিবৃতি আদায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মেহেদী হাসান সজীব বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে জিম্মি করে অস্ত্রের মুখে স্ক্রিপ্টেড বিবৃতি দিয়ে ছাত্রসমাজের দাবিসমূহের প্রতি সরকার চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছে। শুধু তাই নয়, সারা দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত শহীদদের পরিবারকে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে, আর্মড ফোর্সকে ব্যবহার করে ঢাকায় এনে সরকার তাদের থেকে মিথ্যা জবানবন্দি নেওয়া ও সমস্ত দায় আন্দোলনকারীদের ওপর চাপিয়ে শহীদের রক্তের সঙ্গে তামাশা করেছে। আমরা এতদিন চুপ ছিলাম, এখন আর নয়।
এদিকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে উল্লেখ করে সারাদেশে সোমবার (২৯ জুলাই) ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সমাবেশ ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
রোববার (২৮ জুলাই) রাত পৌনে ১২টার দিকে আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদেরের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি দেয়া হয়। গণমাধ্যমকর্মীদের এটি দেন আরেক সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ।
এতে বলা হয়, ‘সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ও ছাত্রলীগের আক্রমণে নিহত শত শত শহিদের আত্মত্যাগ তিরস্কার করে ডিবি কার্যালয়ে বন্দুকের নলের মুখে জিম্মি করে সমন্বয়কদের মাধ্যমে জোরপূর্বক স্ক্রিপ্টেড বিবৃতি আদায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমাদের দাবি আদায়ে আমরা অবিচল ছিলাম, রয়েছি এবং থাকব।’