রাজধানীতে পেশাজীবী-শিল্পীসমাজের গণমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ
- আপডেট সময় : ০৪:৫০:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০২৪
- / ৩৭৫ বার পড়া হয়েছে
বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজধানীতে গণমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিভিন্ন পেশাজীবী ও শিল্পীসমাজ। এ সময় শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে সংহতি জানান তারা। গান, কবিতা আর রঙ তুলির ছোঁয়ায় জানান দেয়, প্রতিবাদের স্পষ্টতা। বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার হাতে কর্মসূচিতে অংশ নেন আশপাশের এলাকার বাসিন্দারাও।
আজ (শুক্রবার, ২ আগস্ট) সকাল থেকেই মুষল ধারে বৃষ্টি হয়েছে। তবু সেই বাধাকে তোয়াক্কা না করে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হত্যা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এক হতে শুরু করেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হত্যা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদ করেছে নিপীড়ন বিরোধী শিল্পীসমাজ। সকাল ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডির আবাহনী মাঠের সামনে এই প্রতিবাদ করেন শিল্পীরা। বৃষ্টির জলে বারবার মুছে গেলেও একটি সাদা কাপড়ে কোটা আন্দোলনে নিহত হওয়া শিক্ষার্থীদের স্মরণে তাদের নাম লেখেন শিল্পীরা। একইসাথে নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে রক্তমাখা গায়ে এক প্রতিচ্ছবিমূলক পরিবেশনা করেন শিল্পীরা।
সেখানে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতার বিরুদ্ধে গণগ্রেপ্তার ও মামলা বন্ধ, কারফিউ তুলে নিয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে দেয়া, কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনের নামে সংঘটিত সকল হত্যার তদন্ত ও বিচারসহ বেশকিছু দাবি তুলে ধরেন তারা। এসময় বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার হাতে আশেপাশের এলাকার বাসিন্দারাও এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
তারা বলেন, আমরা গণতান্ত্রিকভাবে আমাদের চাওয়াগুলো উপস্থাপন করতেই পারি। আমাদের মতো করে শিক্ষার্থীদের পাশে আছি। দিনে দিনে ছাত্রদের উপরে অত্যাচার একটা অনৈতিক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১১টায় রাজধানীর বাংলামোটরে প্ল্যানার্স টাওয়ারের সামনে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানববন্ধনে অংশ নেন পরিকল্পনাবিদরা। তারা চলমান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেয়া ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে পূর্ণ সমর্থন জানান।
নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিলুর রহমান বলেন, ‘এটা এখন শুধুমাত্র ছাত্রদের আন্দোলন নয়। এখানে পেশাজীবী, শ্রমিক ও অভিভাবককরা যোগ দিয়েছে।’
নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির সাথে আমরা একাত্মতা প্রকাশ করছি। এগুলো রাষ্ট্র গঠনের মৌলিক দাবি।’
বাংলামোটরে হত্যা ও নিপীড়নের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বিক্ষুব্ধ কবি-লেখক সমাজ। সংহতি প্রকাশের সময় তারা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেয়া ৯ দফা দাবি যৌক্তিক। এসময় শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে সংহতি প্রকাশ করেন তারা।
ছাত্রদের ওপর অত্যাচার ও গণগ্রেপ্তার একইসাথে মেধাবী চিকিৎসক ডা. সজিবকে হত্যার প্রতিবাদে অবস্থা কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করে দেশের চিকিৎসকরা। এসময় সারাদেশে গণগ্রেফতার ও হত্যার বিচার দাবি করেন। সকল ছাত্র-ছাত্রী, চিকিৎসক ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা চান। সেইসঙ্গে চলমান আন্দোলনের ৯ দফা দাবির সাথে একাত্মতা জানান চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা বলেন, ‘আজকের এই দিনে যারা ঘরে বসে থাকবে তারা এদেশ ও সার্বভৌমত্তের সাথে বেঈমানি করবে। নাগরিক হিসেবে কখনো এমন দৃশ্য দেখবো তা কখনো চিন্তাও করিনি। আমাদের সমাজ আজকে ক্ষত বিক্ষত হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থী আজ গুলিবিদ্ধ। আমরা এর বিচার চাই।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী-গোষ্ঠী ও নাগরিক সমাজ। এসময় আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু বিচারের দাবির পাশাপাশি গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবি জানান তারা। কবিতা ও গানের মাধ্যমে নিহতদের স্মরণ করা হয়।
এদিকে কোটা আন্দোলনে সংবাদ সংগ্রহের সময় নিহত ৪ সাংবাদিকের সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করতে তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন গণমাধ্যম কর্মীরা। আজ সকালে কারওয়ান বাজারের এই সমাবেশে সাম্প্রতিক সহিংসতায় নিহত সাংবাদিকদের হত্যার বিচার চান তারা। সব ধরনের গুলির ঘটনা বন্ধ করাসহ সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানান সাংবাদিকরা।