ঘোষণাটা আগেই দিয়েছিলেন অ্যান্ডি মারে। জানিয়েছিলেন, প্যারিস অলিম্পিকেই শেষ বারের মতো টেনিস কোর্টে দেখা যাবে ৩৭ বছর বয়সী এ মহাতারকাকে। কিন্তু শেষটা প্রত্যাশামাফিক হলো না ব্রিটিশ কিংবদন্তির। চোটের কারণে অলিম্পিকের একক ইভেন্ট থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন মারে। চালিয়ে যাচ্ছিলেন কেবল দ্বৈত ইভেন্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সেখান থেকেও বিদায় নিয়েছেন মারে।
দ্বৈত ইভেন্টের সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আমেরিকান জুটি টেইলর ফ্রিৎজ ও টমি পলের কাছে হেরে যান মারে-ড্যান ইভানস জুটি। এতে কোয়ার্টার ফাইনালেই থামে ব্রিটিশ তারকার যাত্রা। তাতে কেবল প্যারিস অলিম্পিক নয়, ঘোষণা অনুযায়ী প্রায় দীর্ঘ দুই দশকের ক্যারিয়ারের ইতি ঘটল মারের।
২০০৫ সালে প্রফেশনাল টেনিস শুরু করার পর এ পর্যন্ত ৩টি গ্র্যান্ড স্লামসহ মোট ৪৬টি শিরোপা জিতেছেন। এর বাইরে ২০১২ লন্ডন ও ২০১৬ রিও অলিম্পিকে ছেলেদের এককেও সোনা জেতেন মারে। প্যারিস অলিম্পিকে শেষটা প্রত্যাশামাফিক না হলেও গর্ব করার মতোই ক্যারিয়ার। সেটা ম্যাচ শেষে নিজ মুখেও স্বীকার করেছেন মারে।
তবে এমন দিনে অন্য অনেকে যেখানে স্মৃতিচারণ আর দীর্ঘশ্বাস ফেলেন, মারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করলেন খুনসুটি। লিখেছেন, টেনিসটা আসলে কখনো তেমন পছন্দই করেননি তিনি!
গতকাল ছেলেদের দ্বৈত ইভেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে আমেরিকার জুটির কাছে ৬-২, ৬-৪ গেমে হেরে বিদায় নেওয়ার পর মারে বলেছেন, ‘নিজের ক্যারিয়ার, অর্জন ও এই খেলায় যতটুকু অবদান রাখতে পেরেছি, তা নিয়ে আমি গর্বিত।’
অবসরের কথাটা আরেকবার জানিয়েছেন মারে, ‘অবশ্যই এটা আবেগের। কারণ, এটাই (আমার) শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ। তবে এখন আমি সত্যিই খুশি। যেভাবে শেষ হলো, তাতে আমি খুশি। এটা ভালো লাগছে যে অলিম্পিকে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী শেষ করতে পেরেছি। কারণ, (চোটের কারণে) গত কয়েক বছরে এর কোনো নিশ্চয়তা ছিল না।’
মারে অবশ্য দীর্ঘদিন ধরেই চোটকে সঙ্গী করে খেলে যাচ্ছেন। এ বছরের শুরুতে অ্যাঙ্কেলের চোট পাওয়ার পরে মেরুদণ্ডের সিস্টও অপসারণ করিয়েছেন। চোটের কারণে উইম্বলডন খেলতে পারেননি। প্যারিস অলিম্পিকে নাম লেখালেও ছেলেদের একক থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন। অনিশ্চয়তার ভিড়েও চালিয়ে যান দ্বৈত ইভেন্ট। কিন্তু সেখানেও বাদ পড়লেন কোয়ার্টার ফাইনালে।
মারের ক্যারিয়ারের প্রথম বড় সাফল্য আসে ২০১২ সালে। লন্ডন অলিম্পিকে রজার ফেদেরারকে হারিয়ে সোনা জেতার পর ইউএস ওপেনের শিরোপা জেতেন নোভাক জোকোভিচকে হারিয়ে। পরের বছর সার্বিয়ান কিংবদন্তির বিপক্ষেই উইম্বলডনের শিরোপা জিতে ব্রিটিশদের প্রায় আট দশকের অপেক্ষার অবসান ঘটান। এরপর ২০১৬ উইম্বডলন শিরোপাও ঘরে তোলেন ব্রিটিশ তারকা। একই বছরের রিও অলিম্পিকে হুয়ান মার্তিন দেল পোত্রোকে হারিয়ে ছেলেদের এককে আবারও জেতেন সোনা। এর আগে ২০১৫ সালে ডেভিস কাপ জয়ে ব্রিটেনকে নেতৃত্ব দেন মারে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি অনুসারে ১০০১টি একক ও আরও অনেক দ্বৈত ম্যাচে ৪৬টি এটিপি শিরোপা জিতেছেন মারে। এমন দুর্দান্ত ক্যারিয়ারের ইতি টানার পর কিনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) পোস্ট দিয়ে মারে লিখেছেন, ‘টেনিসটা এমনিতেও কখনোই ভালো লাগত না।’ পছন্দ না করেই এমন সাফল্য!