এটা সোনার পদকের লড়াই ছিল না। অলিম্পিকে ছেলেদের ফুটবলে সবে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াই। অথচ এমন ম্যাচকে ঘিরে কয়েকদিন আগে থেকেই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছিল। ম্যাচটা ফ্রান্স-আর্জেন্টিনার বলে কথা। প্রায় দুই বছর আগে কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ফরাসিদের। গত মাসে কোপা আমেরিকা জিতে ফরাসিদের নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক উদযাপন করে ফরাসিদের ক্ষোভের আগুনে আরও ঘি ঢেলেছিল আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা।
আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের অলিম্পিক কোয়ার্টার ফাইনালে যে এটার প্রভাব পড়বে, সেটা অনুমিতই ছিল। বোর্দোতে শুক্রবার রাতের ম্যাচে দর্শক গ্যালারি থেকে আলবিসেলেস্তেদের তো দুয়োধ্বনি দেওয়া হয়েছেই, এর বাইরে দুদলের খেলোয়াড়দের মধ্যেও চলেছে কথার লড়াই। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজতেই সেটি হাতাহাতিতে রূপ নেয়। সেখানে জড়িয়ে পড়েন খেলোয়াড়দের পাশাপাশি যোগ দেন দুদলের স্টাফরাও। এমনকি ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পথে টানেলেও চলে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়।
এমন আগুনে ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। অন্যদিকে শেষ আট থেকে বিদায় ঘটেছে হাভিয়ের মাচেরানোর শিষ্যদের। ফ্রান্সের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন জঁ ফিলিপ মাতেতা। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে কর্নার থেকে দারুণ এক হেডে আর্জেন্টিনার জালে বল জড়ান ক্রিস্টাল প্যালেসের ২৭ বছর বয়সী এ ফরাসি স্ট্রাইকার।
এ গোলের পর ফরাসিদের উদযাপন নিয়েও এক চোট হয়ে যায়। আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের অভিযোগ, স্টেডিয়ামের যে প্রান্তে তাঁদের পরিবারের সদস্যরা ছিলেন, সেখানে গিয়ে উদযাপন করেছে ফ্রান্স। ম্যাচ শেষে আর্জেন্টাইন সাংবাদিক গাস্তন এদুলের সঙ্গে আলাপকালে এ নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন নিকোলাস ওতামেন্দি। আর্জেন্টিনার এ অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার বলেছেন, ‘আমাদের পরিবারের সদস্যদের মুখের সামনে গিয়ে ওরা উদযাপন করেছে। আমি ভীষণ রাগান্বিত।’
অলিম্পিক থেকে বিদায় নেওয়া প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন ওতামেন্দি, ‘বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার আগে আমি এমন অনেক পরাজয়ের অভিজ্ঞতা আছে আমার। তাই জানি, এটার অনুভূতি কতটা বাজে। ছেলেরা দারুণ খেলেছে। আমাদের একটা গোল দরকার ছিল।’
হাতাহাতির কথা স্বীকার করেছেন ফ্রান্সের কোচ থিয়েরি হেনরি অরিও। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন, ‘আমি প্রতিপক্ষের কোচের সঙ্গে হাত মেলাতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ দেখলাম, সেখানে কিছু একটা হচ্ছে। এ ধরনের জিনিস মোটেও ভালো লাগে না। এটার কোনো দরকার ছিল না।’
ফু্টবল বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইএসপিএন এফসি জানাচ্ছে, উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছিল গ্যালারিতেও। তবে ফ্রান্স পুলিশ আর্জেন্টিনার সমর্থকদের চারপাশে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছিল।
দিনের অন্য কোয়ার্টার ফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রকে ৪-০ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে মরক্কো। অন্যদিকে জাপানকে ৩-০ ব্যবধানে স্পেন ও প্যারাগুয়েকে টাইব্রেকারে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে মিসর।
ফাইনালে ওঠার লড়াই মরক্কোর বিপক্ষে লড়বে স্পেন, অন্যদিকে ফ্রান্সের প্রতিপক্ষ মিশর।