০২:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজীপুরে বিজিবির সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে নিহত ৬

গাজীপুরের শ্রীপুরে বিজিবির সঙ্গে সংঘর্ষে ৬ জন আন্দোলনকারী নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এতে অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী ও উৎসুক জনতা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ সময় বিজিবির তিনটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুর থেকে শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ মোড় ও বাংলাদেশ ফিলিং স্টেশন এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহ বিভাগে নিয়োজিত বিজিবি সদস্যের কয়েকটি বাসে করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছিল। বাসগুলো মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় আসলে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা আটকে দেয়। দুটি বাসে থাকা প্রায় ৮০জন বিজিবি সদস্যদের মুলাইদ এলাকার বাংলাদেশ ফিলিং স্টেশনের সামনে আটকে দেয়। এ সময় আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা তাদের ভারতীয় পুলিশ বা বিএসএফ সদস্য ও তারা হিন্দি কথা বলে প্রচার করে। একপর্যায়ে বিজিবি সদস্যের কাছে থাকা অস্ত্রসহ গোলাবারুদ আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা বস্তায় ভরে তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার একপর্যায়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা বিজিবি সদস্যদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় বিজিবি সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে গুলি করেন।

দুপুর থেকে কয়েক ধাপে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে ৬ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধ হন। অবরুদ্ধ থাকার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর কয়েকটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিজিবি সদস্যদের উদ্ধারে কাজ করছে। তারা আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিজিবি সদস্যের উদ্ধারে বিকেলে কয়েকটি হেলিকপ্টার আকাশে চক্কর দেয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত সাড়ে ৮টার দিকে আশাপাশের পরিবেশ থমথমে অবস্থায় রয়েছে।

নিহতরা হলেন- কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মৃত আসাদের ছেলে সিফাতউল্লাহ (২২), শ্রীপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের দারগারচালা গ্রামের শুক্কুর আলমের ছেলে শরীফ আহমেদ (২০), ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার তাজুল ইসলামের ছেলে কাওসার (২৮), ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার আব্দুল হাইয়ের ছেলে জুয়েল মৃধা (৩০) ও অজ্ঞাত নামা দুইজন।

গুলিবিদ্ধরা হলেন- আজাহার (৩০), ফারুক (২৬), মারুফ (১৯), ইদ্রিস (৩০), রিয়াজ (২৪), স্বপন (৩৫), বাবুল (২১), জাকির (৫২), শামীম (৩০), রায়হান (২৮) অজ্ঞাতনামা আর কমপক্ষে অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

মাওনা চৌরাস্তার আলহেরা মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থাপক মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত অবস্থায় পাঁচজনের মরদেহ এসেছে। তাদের মধ্যে তিনজনের নাম পরিচয় জানা গেছে। এছাড়াও অপর দুইজনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। এছাড়াও একজনের মরদেহ উপজেলা মাওনা এলাকায় তার আত্মীয় আরিফ সরকারের বাড়িতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গুলিবিদ্ধ ২২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আলহেরা হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবুল হোসেন বলেন, দুপুরের পর থেকে গুলিবিদ্ধ ২২ জনসহ ৫০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জারিন ফারা বলেন, বিকেলের দিকে চারজন ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে শ্রীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোভন রাংসাকে ফোন দিলেও তারা রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

গাজীপুরে বিজিবির সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে নিহত ৬

আপডেট : ১১:১৩:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অগাস্ট ২০২৪

গাজীপুরের শ্রীপুরে বিজিবির সঙ্গে সংঘর্ষে ৬ জন আন্দোলনকারী নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এতে অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী ও উৎসুক জনতা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ সময় বিজিবির তিনটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুর থেকে শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ মোড় ও বাংলাদেশ ফিলিং স্টেশন এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহ বিভাগে নিয়োজিত বিজিবি সদস্যের কয়েকটি বাসে করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছিল। বাসগুলো মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় আসলে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা আটকে দেয়। দুটি বাসে থাকা প্রায় ৮০জন বিজিবি সদস্যদের মুলাইদ এলাকার বাংলাদেশ ফিলিং স্টেশনের সামনে আটকে দেয়। এ সময় আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা তাদের ভারতীয় পুলিশ বা বিএসএফ সদস্য ও তারা হিন্দি কথা বলে প্রচার করে। একপর্যায়ে বিজিবি সদস্যের কাছে থাকা অস্ত্রসহ গোলাবারুদ আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা বস্তায় ভরে তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার একপর্যায়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা বিজিবি সদস্যদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় বিজিবি সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে গুলি করেন।

দুপুর থেকে কয়েক ধাপে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে ৬ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধ হন। অবরুদ্ধ থাকার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর কয়েকটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিজিবি সদস্যদের উদ্ধারে কাজ করছে। তারা আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিজিবি সদস্যের উদ্ধারে বিকেলে কয়েকটি হেলিকপ্টার আকাশে চক্কর দেয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত সাড়ে ৮টার দিকে আশাপাশের পরিবেশ থমথমে অবস্থায় রয়েছে।

নিহতরা হলেন- কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মৃত আসাদের ছেলে সিফাতউল্লাহ (২২), শ্রীপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের দারগারচালা গ্রামের শুক্কুর আলমের ছেলে শরীফ আহমেদ (২০), ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার তাজুল ইসলামের ছেলে কাওসার (২৮), ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার আব্দুল হাইয়ের ছেলে জুয়েল মৃধা (৩০) ও অজ্ঞাত নামা দুইজন।

গুলিবিদ্ধরা হলেন- আজাহার (৩০), ফারুক (২৬), মারুফ (১৯), ইদ্রিস (৩০), রিয়াজ (২৪), স্বপন (৩৫), বাবুল (২১), জাকির (৫২), শামীম (৩০), রায়হান (২৮) অজ্ঞাতনামা আর কমপক্ষে অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

মাওনা চৌরাস্তার আলহেরা মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থাপক মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত অবস্থায় পাঁচজনের মরদেহ এসেছে। তাদের মধ্যে তিনজনের নাম পরিচয় জানা গেছে। এছাড়াও অপর দুইজনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। এছাড়াও একজনের মরদেহ উপজেলা মাওনা এলাকায় তার আত্মীয় আরিফ সরকারের বাড়িতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গুলিবিদ্ধ ২২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আলহেরা হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবুল হোসেন বলেন, দুপুরের পর থেকে গুলিবিদ্ধ ২২ জনসহ ৫০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জারিন ফারা বলেন, বিকেলের দিকে চারজন ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে শ্রীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোভন রাংসাকে ফোন দিলেও তারা রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।