বাংলাদেশে চলমান সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ঘোষিত কর্মসূচিতে হামলা, সংঘর্ষ ও প্রাণহানির মধ্যে এই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়া সিরাজগঞ্জে সহিংসতায় নিহত ১৩ পুলিশ সদস্যসহ রোববারের প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখও প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে মর্মান্তিক সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।
একইসঙ্গে মানুষের জীবনের অধিকারকে সুরক্ষিত রাখার বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জরুরিভিত্তিতে আহ্বান জানিয়েছেন ভলকার তুর্ক। রোববার (৪ আগস্ট) দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিবৃতিতে ভলকার তুর্ক বলেন, এই সপ্তাহান্তে আরও অনেক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। সিরাজগঞ্জে পুলিশ স্টেশনে হামলায় কমপক্ষে ১৩ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। সোমবার ঢাকায় ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
একইসঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের যুব শাখাকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নামার আহ্বান জানানো হয়েছে। তুর্ক বলেন, এতে আরও প্রাণহানি হবে, আরও ক্ষয়ক্ষতি হবে। আর এজন্য আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
এই পরিস্থিতিতে তিনি রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে মানুষের জীবনের অধিকার এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য জরুরিভাবে আবেদন জানান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পরিষ্কার বার্তা দিতে হবে যে, এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে (দায়ীদের) কোনো দায়মুক্তি থাকবে না। সরকারকে অবশ্যই প্রতিবাদ ও আন্দোলনে শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণকারীদের টার্গেট করা বন্ধ করতে হবে, নির্বিচারে আটককৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে, ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণ চালু করতে হবে এবং সংলাপের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
এছাড়া জনগণের অসন্তোষ দমনের অব্যাহত প্রচেষ্টা, অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের এবং ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্যের বিস্তার এবং সহিংসতার জন্য উসকানি দেওয়ার মতো কাজ অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বানও জানিয়েছেন ভলকার তুর্ক।