ঢাকা ০২:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাজধানীজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০১:৪৯:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৩৭০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সারা দেশে চলছে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ। কারফিউ বাস্তবায়নে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নগরীর মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা রাজধানী।

আজ সোমবার ভোর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কারফিউ থাকায় খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। যারা বের হচ্ছেন তাদের জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও কার্যালয় ঘিরে রাখা হয়েছে। মোড়ে মোড়ে পুলিশকে অবস্থান করতে গেছে। পাশাপাশি রাজধানীর স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

এছাড়া, রাজধানীর প্রবেশ মুখগুলোতে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। প্রবেশ মুখগুলো দিয়ে কেউ ঢাকায় ঢুকতে ও বের হতে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

দেশের সহিংস পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাল রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি করা হয়। বলা হয়, রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ঢাকা মহানগরসহ সব বিভাগীয় সদর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা সদর ও উপজেলা সদরে সান্ধ্য আইন বলবৎ থাকবে। পরে এক বিজ্ঞপ্তিতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর জানায়, সরকারের জারি করা কারফিউতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সংবিধান ও আইনের আলোকে দায়িত্ব পালন করবে।

এ ব্যাপারে জনসাধারণকে কারফিউ মেনে চলার পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে সেনাবাহিনী।

আজ সোমবার থেকে তিনদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মেজবাহ্ উদ্দিন বলেন, ‘সোম, মঙ্গল ও বুধবার সাধারণ ছুটি থাকবে।’

এর মধ্যে আজ সোমবার সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘মার্চ টু ঢাকা’ পালন করবে। রোববার আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচির প্রথম দিন রোববার সারা দেশের ২১ জেলায় শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, পুলিশ, সাংবাদিকসহ ১০০ জন নিহত হয়েছে। দিনভর সহিংসতায় রাজধানীতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিনের সহিংসতায় সারা দেশে ১৪ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু সিরাজগঞ্জেই ১৩ জন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক বিজিবি সদস্য।

রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, একটি থানার ওসিসহ ৯ জন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। এদের মধ্যে ৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশের সব পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে ব্যাপক সহিংসতা শুরু হলে গত ১৯ জুলাই মধ্যরাত থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার। পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কারফিউ শিথিলের সময় বেড়েছে। সবশেষ গত শনিবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানান, ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। এরপর পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যাওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ ঘোষণা করে সরকার।

নিউজটি শেয়ার করুন

রাজধানীজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা

আপডেট সময় : ০১:৪৯:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অগাস্ট ২০২৪

সারা দেশে চলছে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ। কারফিউ বাস্তবায়নে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নগরীর মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা রাজধানী।

আজ সোমবার ভোর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কারফিউ থাকায় খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। যারা বের হচ্ছেন তাদের জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও কার্যালয় ঘিরে রাখা হয়েছে। মোড়ে মোড়ে পুলিশকে অবস্থান করতে গেছে। পাশাপাশি রাজধানীর স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

এছাড়া, রাজধানীর প্রবেশ মুখগুলোতে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। প্রবেশ মুখগুলো দিয়ে কেউ ঢাকায় ঢুকতে ও বের হতে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

দেশের সহিংস পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাল রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি করা হয়। বলা হয়, রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ঢাকা মহানগরসহ সব বিভাগীয় সদর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা সদর ও উপজেলা সদরে সান্ধ্য আইন বলবৎ থাকবে। পরে এক বিজ্ঞপ্তিতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর জানায়, সরকারের জারি করা কারফিউতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সংবিধান ও আইনের আলোকে দায়িত্ব পালন করবে।

এ ব্যাপারে জনসাধারণকে কারফিউ মেনে চলার পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে সেনাবাহিনী।

আজ সোমবার থেকে তিনদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মেজবাহ্ উদ্দিন বলেন, ‘সোম, মঙ্গল ও বুধবার সাধারণ ছুটি থাকবে।’

এর মধ্যে আজ সোমবার সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘মার্চ টু ঢাকা’ পালন করবে। রোববার আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচির প্রথম দিন রোববার সারা দেশের ২১ জেলায় শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, পুলিশ, সাংবাদিকসহ ১০০ জন নিহত হয়েছে। দিনভর সহিংসতায় রাজধানীতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিনের সহিংসতায় সারা দেশে ১৪ পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু সিরাজগঞ্জেই ১৩ জন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক বিজিবি সদস্য।

রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, একটি থানার ওসিসহ ৯ জন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। এদের মধ্যে ৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশের সব পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে ব্যাপক সহিংসতা শুরু হলে গত ১৯ জুলাই মধ্যরাত থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার। পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কারফিউ শিথিলের সময় বেড়েছে। সবশেষ গত শনিবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানান, ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। এরপর পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যাওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ ঘোষণা করে সরকার।