ঢাকা ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

কাশিমপুর কারাগার থেকে ২০৯ বন্দি পালিয়েছে, নিহত ৬

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১১:২৫:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৩৭২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ বন্দি পালিয়ে গেছে। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয় বন্দি নিহত হয়েছে। আজ বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেল সুপার জানান, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে থাকা বন্দিরা বিদ্রোহ করে। বিদ্রোহের সময় বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের উপর চড়াও হয়। বন্দিরা দেয়াল ভেঙে, দেয়াল টপকে, দেয়ালে সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চায়। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী খবর দেওয়া হলে তারা এসে কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করে। বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে অন্তত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ছয় জন হলো- হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার মামলার আসামি নরসিংদীর নলভাটা গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে জিন্নাহ (২৮), হলি আর্টিজান মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি আফজাল হোসেন (৬৩), নওগাঁর কাঞ্চনপুর গ্রামের আবদুস সালামের ছেলে আসলাম হোসেন মোহন, হত্যা মামলার আসামি মৌলভীবাজারের রামেশ্বপুরের মকবুল মিয়ার ছেলে ইমতিয়াজ পাভেল (২৪), ছিনতাই মামলার আসামি টাঙ্গাইলের তারটিয়া এলাকার রাজ্জাক শেখের ছেলে স্বপন শেখ (৪০) এবং সুনামগঞ্জের জলোশা এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে আয়াতুল্লাহ (৩৯)।

স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে কারারক্ষীকে জিম্মি করে কয়েকজন বন্দী মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। কারারক্ষীরা তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বিক্ষোভের খবর পেয়ে ফটকে অবস্থান নেন বন্দীদের স্বজনেরা। একপর্যায়ে কারাগারের বাইরে একটি ঝুটের গুদামে অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। দুপুর দেড়টার দিকে সেনা সদস্যরা কারাগারে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সেনাসদস্যরা তাদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, কয়েকজন বন্দী মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করলে অনেকে ভেতরে থাকা মই বেয়ে দেয়াল ভেঙ্গে যে যেভাবে পেরেছেন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কারারক্ষীরা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে কারারক্ষীরা নিরাপত্তার স্বার্থে গুলি ছুড়লে ৬ জন নিহত হয়। খবর পেয়ে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে সেনাবাহিনীর কয়েকটি দল কারাগারে পৌঁছায়। এসময় ২০৯ জন বন্দী পালিয়ে গেছেন। নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ওইদিন রাতেই গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকে কাশিমপুর কারাগারে অতিরিক্ত সেনা সদস্য মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

কাশিমপুর কারাগার থেকে ২০৯ বন্দি পালিয়েছে, নিহত ৬

আপডেট সময় : ১১:২৫:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ অগাস্ট ২০২৪

গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ বন্দি পালিয়ে গেছে। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয় বন্দি নিহত হয়েছে। আজ বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেল সুপার জানান, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে থাকা বন্দিরা বিদ্রোহ করে। বিদ্রোহের সময় বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের উপর চড়াও হয়। বন্দিরা দেয়াল ভেঙে, দেয়াল টপকে, দেয়ালে সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চায়। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী খবর দেওয়া হলে তারা এসে কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করে। বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে অন্তত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ছয় জন হলো- হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার মামলার আসামি নরসিংদীর নলভাটা গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে জিন্নাহ (২৮), হলি আর্টিজান মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি আফজাল হোসেন (৬৩), নওগাঁর কাঞ্চনপুর গ্রামের আবদুস সালামের ছেলে আসলাম হোসেন মোহন, হত্যা মামলার আসামি মৌলভীবাজারের রামেশ্বপুরের মকবুল মিয়ার ছেলে ইমতিয়াজ পাভেল (২৪), ছিনতাই মামলার আসামি টাঙ্গাইলের তারটিয়া এলাকার রাজ্জাক শেখের ছেলে স্বপন শেখ (৪০) এবং সুনামগঞ্জের জলোশা এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে আয়াতুল্লাহ (৩৯)।

স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে কারারক্ষীকে জিম্মি করে কয়েকজন বন্দী মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। কারারক্ষীরা তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বিক্ষোভের খবর পেয়ে ফটকে অবস্থান নেন বন্দীদের স্বজনেরা। একপর্যায়ে কারাগারের বাইরে একটি ঝুটের গুদামে অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। দুপুর দেড়টার দিকে সেনা সদস্যরা কারাগারে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সেনাসদস্যরা তাদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, কয়েকজন বন্দী মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করলে অনেকে ভেতরে থাকা মই বেয়ে দেয়াল ভেঙ্গে যে যেভাবে পেরেছেন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কারারক্ষীরা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে কারারক্ষীরা নিরাপত্তার স্বার্থে গুলি ছুড়লে ৬ জন নিহত হয়। খবর পেয়ে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে সেনাবাহিনীর কয়েকটি দল কারাগারে পৌঁছায়। এসময় ২০৯ জন বন্দী পালিয়ে গেছেন। নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ওইদিন রাতেই গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকে কাশিমপুর কারাগারে অতিরিক্ত সেনা সদস্য মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।